রাজশাহীর নামোভদ্রা বস্তিতে ডেঙ্গু মোকাবলোয় পরিচ্ছন্ন অভিযান
রাজশাহী থেকে শহিদুল ইসলাম
‘সময়টা যেন হইচই আর কথা বলার, কথা বলতে আর যুক্তি তর্ক করতেই দিন পার করছি আমরা, তথাকথিত কিছু মানুষের মধ্যে যতোটা না কথার ফুলঝুড়ি আর তর্ক চলে ততোটা কাজের মধ্যে দেখিনা। আমরা খেটে খাওয়া মানুষ, সারাদিন কাজ করি, তবুও আজ সবাইকে নিয়ে আমরা আমদের বস্তিতে ডেঙ্গুমুক্ত পরিচ্ছন্ন অভিযান শুরু করেছি।’ কথাগুলো বলছিলেন নামোভদ্রা বাস্তুহারা সার্বিক উন্নয়ন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মো. শরিফুল ইসলাম।
আজ (৭ আগস্ট বুধবার) দিনের অর্ধেক সময় সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রাজশাহীর নামোভদ্রা বস্তিতে ডেঙ্গুমুক্ত পরিচ্ছন্ন অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক, তরুণ সংগঠন ইয়্যুথ এ্যাকশন ফর সোস্যাল চেঞ্জ (ইয়্যাস), নামোভদ্রা বাস্তুহারা সার্বিক উন্নয়ন সংগঠন যৌথভাবে পরিচ্ছন্ন অভিযানের আয়োজন করে।
সকালে ইয়্যাসের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল ইসলাম ডেঙ্গু বিষয়ে সচেতনতামূলক আলোচনা করেন। তিনি সরকারের প্রচারণাপত্র অনুযায়ী ডেঙ্গু রোগের লক্ষণগুলো ও করণীয় দিকগুলো তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘সাধারণভাবে ডেঙ্গুর লক্ষণ হচ্ছে জ্বর। ১০১ ডিগ্রি থেকে ১০২ ডিগ্রি তাপমাত্রা থাকতে পারে। জ্বর একটানা থাকতে পারে আবার ঘাম দিয়ে জ্বর ছেড়ে দেবার পর আবারো জ্বর আসতে পারে। এর সাথে শরীরে ব্যাথা , মাথা ব্যাথা, চোখের পেছনে ব্যাথা এবং চামড়ায় লালচে দাগ (র্যাশ) হতে পারে। তবে এগুলো না থাকলেও ডেঙ্গু হতে পারে।’
নিজেদের বাসা বাড়ি, ঘর দুয়োর উঠান কিভাবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হয় সে বিষয়ে সচেতনতামূলক আলোচনা তুলে ধরেন ইয়্যাস এর সভাপতি শামীউল আলীম শাওন। তিনি বলেন, ‘কোথাও পানি জমে থাকলে সেটি পরিষ্কার করতে হবে, বিভিন্ন কৌটা, নারকেলের ছোবড়া এবং ড্রেনের মধ্যে ডেঙ্গু মশা জন্মে, সেগুলো সবসময় পরিষ্কার রাখতে হবে।’ ডেঙ্গুরোগের জন্য সরকারি সেবা কোথায় কিভাবে পাওয়া সে বিষয়ে তুলে ধরেন বারসিক বরেন্দ্র অঞ্চল সমন্বয়কারী শহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘কারো জ্বর হলেই রাজশাহী মেডিকেলে নিতে হবে বা পারশ্ববর্তী হাসপাতালে নিতে হবে। ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। সরকারিভাবে ফ্রি চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। সঠিকভাবে চিকিৎসা নিলে ডেঙ্গু রোগ ভালো হয়।’ তিনি আরো বলেন, ‘ডেঙ্গু নিয়ে এতো আতংক হবার কিছু নেই। আমাদের প্রত্যেককে তার জায়গা থেকে সচেতন এবং নিজের বাড়িঘর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।’
আলোচনা শেষে বস্তিবাসী, তরুণ সংগঠনের সদস্য, রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ, বারসিক’র কর্মকর্তাগণ পরিচ্ছন্ন কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেন। বস্তিতেতে ময়লা আবর্জনা পরিষ্কারসহ বিভিন্ন ময়লা পানি ও স্যাঁতস্যাঁতে জায়গা ব্লিছ পাউডার ছিটানো হয়।
উল্লেখ্য, রাজশাহী জেলা প্রশাসনের তিনদিনব্যাপী পরিচ্ছন্ন রাজশাহীর জন্য ক্র্যাশ প্রোগ্রামের অংশ হিসেবে বস্তি পর্যায়ে উক্ত পরিচ্ছন্ন অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।