দেশী হাঁস পালন করে স্বাবলম্বী জুলেখা বেগম

কলমাকান্দা থেকে আল্পনা নাফাক
কলমাকান্দা উপজেলার খারনৈ ইউনিয়নের রানীগাও গ্রামের বাসিন্দা জুলেখা বেগম। তিনি তিন সন্তানের জননী। পেশার একজন গৃহিনী। বয়স ৩০ বছর। তাঁর দুই মেয়ে ও এক ছেলে। বড় মেয়ে দশম, দ্বিতীয় মেয়ে ৫ম এবং ছোট ছেলে দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়ে। জুলেখা বেগমের পারিবারিক অবস্থা তেমন ভালো না। তাঁর স্বামীর একার উপার্জনের টাকা দিয়ে সংসারের চালানো খুবই কষ্টকর হচ্ছে। তাই তিনি ব্যক্তিগতভাবে কিছু একটা করার সিদ্ধান্ত নেন। এভাবে তিনি ঘরে বসে না থেকে দেশী হাঁস পালনের উদ্যোগ নেন।


দেশী হাঁস পালন সম্পর্কে জুলেখা বেগম বলেন, ‘প্রথমে আমি ৫টি হাঁস পালন করা শুরু করি। তারপর হাসের ডিম মুরগি দিয়ে ফোটাই। যখন হাসের বাচ্চা বড় হয় তখন সেগুলো বিক্রি করি। প্রতিটি হাস ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করি। এছাড়াও সারাবছরই হাঁসের ডিম বিক্রি করি। প্রতি হালি ৩০-৪০ টাকা বিক্রি করি।’


হাঁসের বাচ্চা ফুটিয়ে বড় করে বিক্রি করে এবং হাঁসের ডিম বিক্রি করে তিনি এখন নিজের ও সংসারের কিছু কিছু চাহিদাগুলো পূরণ করতে পারছেন। প্রতিমাসের যে বিদুৎ বিলটি আসে সেটি তিনি পরিশোধ করেন তাঁর হাঁস বিক্রির টাকা থেকে। এখন তাঁকে আর তাঁর স্বামীর কাছ থেকে টাকা চায়তে হয় না। হাঁস পালনের সুবিধা হল হাঁসের পিছনে কোন টাকা পয়সা খরচ করতে হয় না। শুধু শ্রম দিলেই হয়। তার উপার্জিত টাকা থেকে তিনি গ্রামীণ ব্যাংকে ২০ হাজার টাকা জমিয়েছেন। এ ছাড়াও সংসারের টুকিটাকি জিনিসপত্র ক্রয় করা তো আছেই।


জুলেখা বেগম বলেন, ‘আমরা যারা গ্রামে বাস করি আমাদের হাতে অনেক সময় থাকে। যে সময়গুলো আমরা অযথা ব্যয় করি সেগুলোকে কাজে লাগিয়ে আমরা উপার্জন করতে পারি। প্রয়োজন কেবল শ্রম ও ইচ্ছাশক্তি।’ তিনি মনে করেন গ্রামের নারীরা যদি তাদের অবসর সময়টা এভাবে কাজে লাগান তাহলে পরিবারে তাদের আর্থিক সঙ্কট যেমন দূর করতে পারেন সাথে সাথে তাদের পারিবারিক মর্যাদাও বৃদ্ধি পাবে।

happy wheels 2

Comments