সন্তানদের ভালোবাসায় ১১৩ বছরের কপসিং এখন সুস্থ ও ভালো আছেন
কলমাকান্দা নেত্রকোনা থেকে খায়রুল ইসলাম ও গুঞ্জন রেমা
নেত্রকোনা জেলার কলমাকান্দা উপজেলার রংছাতি ইউনিয়নের পাঁচগাও গ্রামে বাস করেন কপসিং নংব্রিই। তাঁর বাড়ি মেঘালয় পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত। মেঘালয়ের পাহাড়ি সৌন্দর্য্য তাঁর বাড়ির উঠান থেকেই উপভোগ করা যায়। তিনি জন্মগ্রহণ করেন মহেশখলা গ্রামে। তিনি যখন জন্মগ্রহণ করেন তখন ভারত বাংলদেশ বিভাজন হয়নি। তাঁর যখন ৫/৬ বছর বয়স তখন প্রথম বিশ্বযুদ্ধ হয়েছিল বলে তিনি জানান। তার সঠিক বয়স তিনি জানেন না তবে তাঁর বয়স এখন আনুমানিক ১১৩ বছর বলে তিনি জানান।
তিনি বিয়ে করেন পাঁচগাও গ্রামে। বিয়ের পর তিনি এই গ্রামেই বাস করেন। কপসিং জানান, মেঘালয় পাহাড়ে তখন বিভিন্ন ধরনের জীবজন্তু বাস করতো। আর তাঁর বাড়িটি পাহাড়ের পাদদেশেই অবস্থিত বলে রাত হলেই পাহাড় থেকে নেমে আসতো বিভিন্ন ধরণের জীবজন্তু। এক রাতে তিনি একটি রয়েল বেঙ্গর টাইগারের দেখা পান। কথিত আছে যে, তিনি ওই বাঘের সাথে দীর্ঘ তিন ঘণ্টা লড়াই করেছেন এবং অবশেষে তিনি বাঘকে পরাজিত করেন।
কপসিং মূলত সাংরেক (গারোদের আদি ধর্ম) ধর্মাবলম্বী ছিলেন। জাতি গোষ্ঠীগতভাবে তিনি গারো আদিবাসী। তিনি বিয়েও করেছিলেন সাংসারেক রীতিতে। তবে এখন তিনি খ্রিস্টান ধর্ম অনুসরণ করেন। তাঁর যখন ৭০ বছর বয়স তখন তিনি খ্রীষ্টান ধর্ম গ্রহণ করেন।
বার্ধক্যজনিত কারণে এখন তিনি সহজে চলাফেরা করতে পারেন না। হাতে একটা লাঠিতে ভর করে তাকে চলাফেরা করতে হয়। তবে এখনো নিজেকে এতটা দুর্বল মনে করেন না তিনি। নিজেকে সুস্থ রাখার জন্য বাড়ির আশপাশে টুকটাক কাজ করেন। বাড়ির বাউন্ডারি বেড়া দেওয়া, সব্জি চাষ করেন এখনও। সন্তানদের বারণ করা সত্ত্বেও তিনি এসব কাজ এখনও করেন। বয়সের ভারে স্মরণশক্তি অনেকটা কমে গেছে তাঁর। কানেও কম শুনেন।
বৃদ্ধ বাবাকে তার সব সন্তানই অনেক ভালোবাসেন ও দেখাশুনা করেন। মূলত সন্তানদের ভালোবাসা ও যতেœ কপসিং এখনও ভালো আছেন বলে তিনি জানান।