ছাদ বাগানই সেরা শিক্ষক সেঁজুতির শখ

সাতক্ষীরা থেকে মো. আসাদুজ্জামান:

বাংলায় নারীদের নিয়ে একটি প্রবাদ আছে; যে রাঁধে সে চুলও বাঁধে। কিন্তু তিনি শুধু ভাত রাঁধা বা চুলা বাঁধার মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। তিনি একাধারে একজন সেরা শিক্ষক, একজন সেরা মা, সমাজ সেবক, একজন সংগঠক এবং একজন রাজনীতিবিদ। শুধু কী তাই? তাঁর আরো একটি শখ রয়েছে। এতকিছুর পরও তিনি নিজের ঘর সামলেও সাতক্ষীরা শহরের ইটাগাছা এলাকায় অবস্থিত নিজের বাড়ির ছাদে গড়ে তুলেছেন নানন্দিক ছাদ বাগান। যার কথা বলছি, তিনি আরো কেউ নন আধুনিক সাতক্ষীরার রূপকার, সাবেক এমএনএ শহিদ স.ম আলীউদ্দিন তনায়া লায়লা পারভীন সেঁজুতি। তিনি ২০১৬ শিক্ষাবর্ষে তালা উপজেলার শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক হিসেবে গ্রহণ করেন পদক ও পুরস্কার।

Lila parvin sajuti (1)

সাতক্ষীরা প্রেসক্লবের বারবার নির্বাচিত সভাপতি, দৈনিক পত্রদূতের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক বিশিষ্ট আইনজীবী আবুল কালাম আজাদের স্ত্রী লায়লা পারভীন সেঁজুতি তালার বঙ্গবন্ধু পেশাভিত্তিক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নিষ্ঠার সাথে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন। সেই সাথে তিনি সাতক্ষীরা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে রয়েছেন। রয়েছেন মহিলা আওয়ামীলীগেও। আজাদ-লায়লা পারভীন সেঁজুতি দম্পতির এক ছেলে এক মেয়ে।

আজাদ-সেঁজুতির বাড়ির ছাদ বাগানে গিয়ে দেখা গেছে, তাদের ছাদে রয়েছে, কয়েক জাতের দেশী ও বিদেশী গোলাম, জিনিয়া, ই….. আরো ফুলের নাম । রয়েছে ওষধি শতমুল, তুলশি, নিম গাছ ও মাল্টা, পেঁয়ারা, করমচা, আমলকিসহ বিভিন্ন মৌসুমি ফলের গাছ। এছাড়া রয়েছে বট, পাপড়া, তুলশি ও নিম গাছের অর্ধশতাধিক বনসাই। ছাদে তার লাগানো মরিচ সংসারের চাহিদা মিটিয়েছে।

Lila parvin sajuti (8)

বৃক্ষপ্রেমিক সেঁজুতি বলেন, “আমার বাবাও ছিলেন বৃক্ষ প্রেমিক। তিনি বাইরে কোথাও গেলে ফেরার সময় গাছ নিয়ে আসতেন। তিনি অনেকবার ভারত থেকে গাছ নিয়ে এসেছেন। বাবা বলতেন, কোথাও যেন ফাঁকা জায়গা না থাকে। ফাঁকা জায়গা পেলে গাছ-গাছালিতে ভরে ফেলতেন।” তিনি আরও বলেন, “সেই স্কুল জীবন থেকে গাছ লাগানোর নেশা হয়ে গেছে। বাবার বাড়ি থাকতে অনেক গাছ লাগিয়েছি। সেগুলো এখন অনেক বড় হয়েছে। শ্বশুরবাড়ি গাছ লাগানোর তেমন জায়গা নেই, সেজন্য ছাদ বেছে নেওয়া। সারাদিন কর্মব্যস্ততার মধ্যে দিনের কিছু সময় বের করে নিয়ে গাছের যতœ করি।” তিনি বলেন, “গাছ পরিচর্যা করার জন্য সপ্তাহের একদিন ও সরকারি ছুটির দিনগুলো কাজ করি।”

Lila parvin sajuti (2)

তিনি বলেন, “আমার স্বামী সাংবাদিকতা করে। সেজন্য অনেক ব্যস্ত থাকেন। তারপরও সময় পেলে আমার বাগান সাজাতে বিভিন্ন পরামর্শ দেয়। আমাদের ছাদে রয়েছে কয়েক জাতের দেশী ও বিদেশী গোলাপ, জিনিয়াসহ বিভিন্ন প্রজাতির ফুল গাছ। রয়েছে ঔষধি শতমুল, তুলশি, নিম গাছ ও মাল্টা, পেয়ারা, করমচা, আমলকিসহ বিভিন্ন মৌসুমি ফলের গাছ। গত আট বছর সাধন করে বনসাই গাছ বানিয়েছি। এর মধ্যে বট, পাপড়া, তুলশি ও নিম গাছের। তিনি জানান, তাঁর ছেলে মেয়েরাও গাছের প্রতি ব্যাপক ঝোক। তিনি কখন গাছে পরিচর্যা করতে ভুলে গেলে তাঁর ৪ বছর বয়সী ছেলে তাঁকে মনে করিয়ে দেয়।

এই দম্পতির ৮ম শ্রেণী পড়–য়া কন্যা নুসরিকা অদ্রি বলেন, “স্কুলের বন্ধুদের সাথে আম্মুর ছাদ বাগানের গল্প করি। অনেকে আমাদের ছাদ বাগান দেখতে আসে। আমার অনেক বন্ধু আমাদের বাগান দেশে তারাও বাগান করেছে। অনেকের বাগান আমাদের চেয়ে ভালো হয়েছে। যখন আমার বন্ধুরা আম্মুর ছাদ বাগানের প্রশংসা করে। তখন শুনতে অনেক ভালো লাগে।”

happy wheels 2

Comments