বই কেনা যাঁর নেশা
মানিকগঞ্জ থেকে এম.আর.লিটন
চাকরি করে জীবনে যা উপার্জন করেছেন, তাঁর সংসার চালানোর পাশাপাশি বেশিভাগ অর্থ ব্যয় করেছেন বই কেনার জন্য । বই সংগ্রহ করে নিজ বাসভবনে গড়েছেন বিশাল ব্যক্তিগত লাইব্রেরি ।বই কেনা তাঁর নেশা ।
বই প্রেমিক মজিবর রহমান(৬৩) মানিকগঞ্জ শহরের রিজার্ভ ট্যাংক (নগর ভবন) এলাকায় বসবাস করেন।তিনি সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে চাকরি করেন। বর্তমানে তিনি অবসরপাপ্ত জীবনযাপন করছেন।তিনি মানিকগঞ্জ শহরে সুশীল সমাজের একজন ।
মজিবর রহমান যখন হাই স্কুলের ছাত্র ছিলেন তখন থেকে বই পড়ার প্রতি তাঁর প্রচুর আগ্রহ ছিল এবং নিয়মিত বই কিনতেন। এছাড়াও বন্ধুদের কাছ থেকে বই সংগ্রহ করতেন । এ ভাবেই তিনি বই প্রেমিক হয়ে উঠেন ।তিনি জানান, তার বন্ধুরা যখন ঈদে মার্কেট করতেন তখন তিনি মার্কেটের টাকা দিয়ে বই কিনতেন ।এছাড়াও তিনি যখন লেখাপড়া শেষ করে চাকরিতে যোগ দেন তখন চাকরির বেতন দিয়ে বেশি বেশি বই কিনতে শুরু করেন। এখন তার সংগ্রহে অনেক বই এবং বিশাল একটি ব্যক্তিগত লাইব্রেরি ।
সরেজমিনে তাঁর বাসায় গিয়ে দেখা যায়, তাঁর সংরক্ষণে হাজারও বইয়ের সমাহার, বাসার দুই-তিনটি রুমে সুন্দর করে সাজিয়ে রাখা হয়েছে বই । এ যেন বই এর অরণ্য ।তাঁর বইয়ের মোট নিদিষ্ট সংখ্যা জানা যায়নি । অনুমানিক ধারণা করা হয়েছে তাঁর সংরক্ষণে পাঁচ হাজারের মতো বই হবে । মানিকগঞ্জের মতো ছোট জেলা শহরে ব্যক্তিগত উদ্যোগে এতসব বই সংগহ করা দুরূহ ব্যাপার ।
তাঁর লাইব্রেরি সংরক্ষিত বইগুলোর মধ্যে ধর্ম, বিজ্ঞান, ইতিাহাস, রাজনীতি, অর্থনীতি, সাংস্কৃতিকসহ নানা বিষয়ক বই রয়েছে ।এর মধ্যে অনেক বই দূর্লভ, যা এখন আর বাইরে সচরাচর কিনতে পাওয়া যায় না ।
তাঁর জীবনে সব উপার্জন দিয়ে ব্যক্তিগত লাইব্রেরি গড়ে তুলার জন্য , এই মহৎ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বই প্রেমিক মজিবর রহমানকে সংবর্ধনা দিয়েছেন মানিকগঞ্জের বন্ধুমহল ।
বই প্রেমিক মজিবর রহমান বলেন, “বই পড়লে মানুষের মনোভাবের পরিবর্তনসহ নতুন কিছু চিন্তার আবির্ভাব ঘটে । বইয়ের মাধ্যমে মানুষের সঙ্গে মানুষের যে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে, সে বন্ধুত্বে থাকে গভীর বিশ্বাস ও ভালোবাসা। ভালো বই মানুষকে সৃজনশীল করে। মনের অন্ধকার, অজ্ঞতা দুর করে মানুষকে নির্মল আনন্দ দেয়।”
তিনি এই লাইব্রেরি নিয়ে অনেক স্বপ্ন দেখেন ।ভবিষতে আরও বই সংগ্রহ করে তাঁর এই লাইব্রেরি বড় করার পরিকল্পনা আছে ।নতুন প্রজন্মকে বই পড়তে উৎসাহ করার জন্য তাঁর লাইব্রেরি থেকে বই পড়ার সুযোগ করে দেয়ার জন্য পরিকল্পনা রয়েছে ।তাঁর সাথে আরও কথা বলে জানা গেছে, সমাজের প্রতি কিছু করার দায়িত্ববোধ থেকেই তিনি বই সংরক্ষণ করে এ লাইব্রেরি গড়ে তুলেছেন।