একুশ আমাদের চেতনা ও সুপ্ত শক্তি !
মানিকগঞ্জ থেকে এম.আর.লিটন
১৯৫২ সালে একুশে ফেব্রুয়ারি, পুলিশ ভাষা আন্দোলনকারী ছাত্রদের মিছিলে গুলি চালায়; এতে সালাম, বরকত, রফিক, জব্বারসহ নাম না জানা অনেকেই শহিদ হয় ।তাঁদের এই আত্মদান ও রক্তের মধ্য দিয়ে আমরা পেয়েছি আমাদের প্রাণের ভাষা এবং মাতৃভাষা বাংলা ।
একুশে ফেব্রুয়ারি বাঙালি জনগণের ভাষা আন্দোলনের মর্মন্তুদ ও গৌরবোজ্জ্বল স্মৃতিবিজড়িত একটি দিন হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে । একুশে ফেব্রুয়ারি আমাদের যেমন শোকের দিন, তেমন বাঙালির মুক্তির সুচনার দিন । এ ভাষা আন্দোলন পরবর্তীতে মুক্তিরসংগ্রামে অনুপ্রেরণা এবং সাহস যুগিয়েছে ।আবদুল গাফফার চৌধুরী রচিত একুশের গানের পংক্তি তাই মনে করিয়ে দেয়, একুশ আমাদের চেতনা ও সুপ্ত শক্তি –
‘তুমি আজ জাগো তুমি আজ জাগো একুশে ফেব্রুয়ারি / আজো জালিমের কারাগারে মরে বীর ছেলে বীর নারী / আমার শহীদ ভায়ের আত্মা ডাকে / জাগো মানুষের সুপ্ত শক্তি হাটে মাঠে ঘাটে বাটে / দারুণ ক্রোধের আগুনে আবার জ্বালবো ফেব্রুয়ারি / একুশে ফেব্রুয়ারি একুশে ফেব্রুয়ারি।’
শুধু বাংলাদেশে নয়, ২০১০ খ্রিস্টাব্দে জাতিসংঘ কর্তৃক গৃহীত সিদ্ধান্ত মোতাবেক প্রতিবছর একুশে ফেব্রুয়ারি বিশ্বব্যাপী আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালন করা হয়। এর ধারাবাহিকতায় মানিকগঞ্জ প্রতিবারের মতো এবার একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হয়েছে ।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পিগোষ্ঠী’র উদ্যোগে ২০ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায়, মানিকগঞ্জ শহরে শহিদ রফিক মুক্তমঞ্চে আলোচনা সভা, আবৃত্তি, গণসংগীত ও আলপনা উৎস অনুষ্ঠিত হয় । অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক মো. নাজমুছ সাদাত সেলিম, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা গোলাম মহীউদ্দীন, পৌর মেয়র বীরমুক্তিযোদ্ধা গাজী কামরুল হুদা সেলিম, বীরমুক্তিযোদ্ধা এ্র্যাড.আজহারুল ইসলাম আরজু, বীরমুক্তিযোদ্ধা ইকবাল হোসেন খান, এ্যাড. দীপক কুমার ঘোষ প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উদীচীর জেলা সভাপতি কাজী শিউলী, সঞ্চলনা করেন সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান মামুন । মানিকগঞ্জ শহরে শহিদ রফিক মুক্তমঞ্চের সামনে থেকে শুরু করে সড়কে বিভিন্ন স্থানে আলপনা করা হয় । আলপনা উৎসবে বিভিন্ন সামাজিক ও সাস্কৃতিক সংগঠনের সদস্যবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন । আলপনা উৎসবের মধ্যদিয়ে সন্ত্রাস ও জঙ্গি মুক্ত অসম্পদায়িক দেশ গড়ার প্রত্যায় গ্রহণ করেন উপস্থিত সবাই ।