রাজশাহীতে জলবায়ু পরিবর্তন, বৈচিত্র্য ও আন্তঃনির্ভরশীলতা বিষয়ক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত
রাজশাহী থেকে জাহিদ আলী
বারসিক’র বাংলাদেশ ইনষ্টিটিউট অব এ্যাপ্লাইড স্ট্যাডিজ (বিয়াস) এর আয়োজনে গত ২৭ ও ২৮ মার্চ ২দিন ব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তন, বৈচিত্র্য ও আন্তঃনির্ভরশীলতা বিষয়ক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। রাজশাহী সদর গোগ্রাম ও রিশিকুল ইউপির ১৬ জন শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে রাজশাহীর অক্টয় মোড়ে অবস্থিত হেরিটেজ আর্কাইভস অব বাংলাদেশ হিস্ট্রি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত প্রশিক্ষণের প্রথমদিন উদ্বোাধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বারসিক রাজশাহী রিসোর্স সেন্টারের এলাকা সমন্বয়কারী শহিদুল ইসলাম। প্রশিক্ষণের লক্ষ্য উদ্দেশ্য, প্রক্রিয়া সম্পর্কে ধারণা দেন বারসিকের সহযোগী সমন্বয়কারী এরশাদ আলী।
প্রশিক্ষণের প্রথমদিনে জলবায়ু পরিবর্তন, বৈচিত্র্য ও আন্তঃনির্ভরশীলতা বিষয়ে দিনব্যাপী বিশদ আলোচনা করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক অভিজিৎ রায়। অংশগ্রহণমূলক এই প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারীরা আবহাওয়া, পরিবেশ জলবায়ু ভিন্নতা, জলবায়ূ ভিন্নতার কারণ, ফলাফল, পরিণতি, বিভিন্ন প্রকার দূর্যোগ এর ঝুকি ও এর সাথে আন্তঃর্নিভরশীলতার সম্পর্কে বিষয়ে জানার চেষ্টা করেন। প্রশিক্ষণে কোপিং, মিটিগেশন, এডাপটেশন, রেজিলেন্সি এবং ডিসপ্লেসমেন্ট, জলবায়ু ভিন্নতা, বৈচিত্র্যের ধরণ এবং আন্তঃনির্ভরশীতা বিষয়ে প্রায়োগিক উদাহরণ, সম্পর্ক, সম্বন্ধে পাওয়ার পয়েন্ট ডিসপ্লে ও গ্রুপ ওয়ার্ক এর মাধ্যমে স্পষ্ট করেন প্রশিক্ষক অভিজিৎ রায়।
২ দিনব্যাপী প্রশিক্ষণের দ্বিতীয় দিনে মাঠ কর্ম অভিজ্ঞতার জন্য অংশগ্রহণকারীরা রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার গোগ্রাম ইউয়িনে বড়শী পাড়া গ্রামে যান। বরেন্দ্র অঞ্চলের বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন এই গ্রামে অংশগ্রহণকারীরা এলাকার বিগত ২০ বছরে জলবায়ু পরিবর্তনে কি কি ধরণের পরিবর্তন হয়েছে তা জানার চেষ্টা করেন। বিশেষ করে এখানকার পুকুরগুলোর অতীত ও বর্তমান অবস্থা, কোন কোন প্রজাতির ধান আগে চাষ করা হতো বা বর্তমানে হয় তার তুলনামূলক চিত্র, জলবায়ু পরিবর্তনে ফলে ফসল, মানুষ গবাদি প্রাণীর উপর প্রভাব, সারাবছর উৎপাদিত ফসলের ভিন্নতা সম্পর্কে এলাকার মানুষের কাছে জানতে চেষ্টা করেন। প্রশিক্ষণের ২য় পর্বে মাঠ থেকে সংগৃহীত তথ্য উপস্থাপন করেন প্রত্যেক অংশগ্রহণকারী। সেখানে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে বড়শি পাড়া গ্রামের উপরোক্ত বিষয়ে উপর প্রভাব গুলো দৃশ্যমান হয়।
প্রশিক্ষণের শেষার্ধে উপস্থিত ছিলেন বড়শীপাড়া গ্রামের গ্রাম প্রধান ও সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান তৈয়বুর রহমান। তিনি তার গ্রামের বর্তমান অবস্থা বিষয়ে অবগত হবার পর বলেন, “যে কোন বিষয়ে বিশদভাবে জানার জন্য গবেষণার বিকল্প নাই, সেই গবেষণার কাজটি যখন গ্রামের বাইরের কারো কাছে থেকে আসে তখন এটির সঠিক চিত্র ভালোভাবে জানা যায়।”
প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারী রাজশাহী কলেজের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী শিহাব বলেন, “মাঠকর্মের মাধ্যমে এরকম কাজ করা আমার জীবনে প্রথম, আমি ২দিনে অনেক কিছু জানতে পেরেছি। এ বিষয়ে আমার জানার আগ্রহ আরো বেড়েছে।”
পরিশেষে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি অংশগ্রহণকারী ১৬ প্রশিক্ষণার্থীদের মাঝে সার্টিফিকেট তুলে দেন। ২ দিন ব্যাপী প্রশিক্ষণের সঞ্চালনে সহায়তা করে বারসিক রাজশাহীর কর্মসূচি কর্মকর্তা জাহিদ আলী।