![সীমাহীন দুর্ভোগেও ফসল ঘরে তুলতে কৃষকের আপ্রাণ চেষ্টা...](https://barciknews.com/wp-content/uploads/2018/05/SIMAHIN-DUVOGEO-FOSOL-GORE-TULTE-KRISOKER-APRAN-CHSTA-NEWS-PHOTO-2-604x345.jpg)
সীমাহীন দুর্ভোগেও ফসল ঘরে তুলতে কৃষকের আপ্রাণ চেষ্টা…
তানোর, রাজশাহী থেকে অসীম কুমার সরকার
রাজশাহীর তানোর উপজেলাজুড়ে এখন বোরো ধান কাটার উৎসব শুরু হয়েছে। কিন্তু স্বস্তিতে নেই কৃষক। টানা ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষক। কাঁচা-পাকা ধান ক্ষেত পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। শিলাবৃষ্টিতে ঝরে গেছে ধান। ঝড় বাতাসে পাকা ধান শুয়ে পড়েছে। তলিয়ে যাচ্ছে কৃষকের কষ্টার্জিত ফসলের ক্ষেত। ধানকাটা শ্রমিক সংকট ও মজুরি দ্বিগুণের বেশি হওয়ায় কৃষক বিপাকে পড়েছেন। তাই সীমাহীন দুর্ভোগেও ফসল ঘরে তুলতে কৃষক আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
উপজেলার ২টি পৌরসভা ও ৭টি ইউনিয়নে কৃষকদের যেন দম ফেলার সময় নেই। ইতিমধ্যে পানি বৃদ্ধি হওয়ায় শিবনদী ও বিলকুমারী বিলের তীরবর্তী প্রায় চার শতাধিক হেক্টর জমির ধান তলিয়ে গেছে। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর বোরো চাষ করা হয়েছে ১২ হাজার ৫শত ৮০ হেক্টর জমিতে। উপজেলার শিবনদী সংলগ্ন চৌবাড়িয়া, কামারগাঁ, তালন্দ, গোকুল, শিতলীপাড়া, কুঠিপাড়া, আমশো, বুরুজ, কালীগঞ্জ, চাঁন্দুড়িয়া ও তানোর-চৌবাড়িয়া রাস্তার খাড়ি পার্শ্ববর্তী বোরো ক্ষেতসহ বেশ কিছু নিচু বোরো ধান ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে।
উপজেলা গোল্লাপাড়া গ্রামের কৃষক মুরাদ আলী বলেন, “এবার বোরো ধান খুব ভালো হয়েছিল। বিঘা প্রতি (কাচি) ২৮/৩০ মণ ধান পেয়েছি। কিন্তু পানিতে ধান ক্ষেত তলিয়ে যাওয়ায় অর্ধেক ধান শ্রমিককে দিয়ে মাড়াই করতে হয়েছে।” উপজেলার পারিশো-দূর্গাপুর গ্রামের আরেক কৃষক রিগান মন্ডল জানান, তিনি ১২ বিঘা জমিতে এবার বোরো ধান চাষ করেছিলেন কিন্তু অতিবৃষ্টির ফলে ৬বিঘা জমির ধান তুলেছেন। বাকি ৬বিঘা জমিতে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। তারপরও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন দ্রুত ফসল ঘরে তুলতে। কারণ প্রতিদিন যেভাবে পানি বৃদ্ধি হচ্ছে তাতে দেরী করলে ফসল ঘরে তোলা সম্ভব হবে না বলে জানান তিনি। এ নিয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এবার প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে কৃষক ভালো ফলন পেতেন। আমাদের অফিসের কর্মকর্তারা কৃষকদের সব সময় ফসল বাঁচাতে বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দিচ্ছে। আগামীতে স্বল্পমেয়াদী জাতের ধান আবাদে কৃষকদেরকে উদ্বুদ্ধ করবো। যাতে কৃষক আগাম ধান কেটে ঘরে তুলতে পারেন।”
এ বিষয়ে রাজশাহী অঞ্চলের উপ-পরিচালক দেব দুলাল ঢালী বলেন, “আমি গত বুধবার বিকেলে সরজমিন পরির্দশন করেছি। এখানে সরকার যদি কোন ধরণের সহায়তা করার পরিকল্পনা করে তাহলে পরবর্তী যে ফসল আসবে সেখানে করা হবে। উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে কৃষকদের বিভিন্ন পরমর্শ দেয়ার জন্য। বিশেষ করে আগামীতে যেন কৃষক স্বল্পমেয়াদী ধান চাষ ও প্রশিক্ষণ গ্রহণের মধ্য দিয়ে আগে ফসল তুলতে পারেন।”