সাম্প্রতিক পোস্ট

বালি কণায় আটকে গেছে সবুজায়ন

শ্যামনগর, সাতক্ষীরা থেকে গাজী আল ইমরান:
দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ সবুজ প্রিয় মানুষ। সবুজের মধ্যেই বসবাস করেন এদেশের অধিকাংশ মানুষ। কৃষিকাজ আর সবুজ যেন একই সূত্রে গাঁথা। সবুজ বনায়ন আর সবজি ক্ষেত তৈরি করা যেন এ জনপদের মানুষের একটি প্রধানতম প্রত্যাশা। কিন্তু সেটার জন্য সাধ ও সাধ্যের সাথে থাকতে হবে উর্বর জমি। কিন্তু সবুজায়ন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলার পানখালি গুচ্ছ গ্রামের দরিদ্র মানুষ। বালির কারণে আটকে গেছে সবুজায়ন। শুধু তাই নয় এই বালির কারণে প্রতিনিয়ত ব্যাহত হচ্ছে জনজীবন।

1শ্যামনগর উপজেলার বুড়িগোয়ালীনি ইউনিয়নের পানখালী গ্রামের মালঞ্চ নদীর তীরে অবস্থিত গুচ্ছ গ্রামের সাধারণ মানুষের জীবন যাপন অতিষ্ঠ্য করে তুলেছে গুচ্ছগ্রামের উঠান ভরাটের বালি। দেখলে মনে হয় বালির মরুভূমি; চারিদিকে কোথাও গাছের দেখা নেই। খাঁ খাঁ রোদ্রের মধ্যে বসবাস এখানকার চল্লিশ ঘর মানুষের। বালির কারণে কোনো প্রকার ফসল উৎপাদিত হচ্ছেনা সেখানে। পুষ্টির চাহিদা মেটাতে বাজারের উপর নির্ভরশীল হতে হয় তাদের। কিন্তু সেটাও তাদের পক্ষে মেটানো সম্ভব নয়।

এই বালি গুচ্ছগ্রামের বাতাসের সাথে ঘর, খাবার, আসবাবপত্রসহ পরিবেশের উপর ব্যাপকভাবে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এ থেকে মুক্তি পেতে এখন দরকার সরকারি-বেসরকারিভাবে সমন্বিত উদ্যোগ। এই বালি থেকে মুক্তি পেতে বিভিন্ন ধরণের পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে। নদীর চর ও বসবাস উপযোগি পরিবেশ নতুন হওয়ায় এখানে লবণের তীব্রতা অনেক বেশি। এখানে বালির উপরে কোন কিছু উৎপাদন করা খুবই কষ্টসাধ্য। এই পরিস্থিতিতে টিকে থাকার প্রচেষ্টা মানুষের সর্বদা প্রচলিত। এখানকার জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রার মান বদলাতে ও কৃষি উপযোগি করে তুলতে প্রথমত পরীক্ষামূলক ভাবে মাটিসহ দূর্বাঘাস লাগানো যেতে পারে। দু-চার দফা ঘাস লাগিয়েও আশানুরূপ সফলতার মুখ দেখা যেতেও পারে। বিভিন্ন কৃষক সংগঠনের সহযোগিতায় শুরু করা যেতে পারে মাটি ও পানি ব্যবস্থাপনা। মাটি পরীক্ষার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যেতে পারে মাটিতে জৈব সার ব্যবহারের।

2বিশ্লেষকরা মনে করেন, জৈব সার প্রয়োগে মাটি ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে মাটিকে কৃষি উপযোগি করে মৌসুম ভিত্তিক সবজি বীজ বপন করা যেতে পারে। গুচ্ছগ্রামের মধ্যে অবস্থিত পুকুরটিও হাঁস পালনে ভূমিকা রাখতে পারে বলে অনেকেই মনে করে।
এককথায় বালি থেকে মুক্তি পেতে হলে বিভিন্ন সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর কোন বিকল্প নেই। এক্ষেত্রে সরকারি বেসরকারি সমন্বিত উদ্যোগেই এগিয়ে যেতে হবে।

happy wheels 2

Comments