বৃষ্টির প্রহর গুনছেন বরেন্দ্র অঞ্চলের কৃষকেরা
রাজশাহী থেকে মো. জাহিদ আলী
আষাঢ় ও শ্রাবণ ঋতু চক্রের এই দুইমাস বর্ষাকাল ধরা হয়। এই দুইমাসে প্রচুর বৃষ্টির ফলে মাঠ ঘাট থৈ থৈ করে। কিন্তু আষাঢ় মাস শেষ হয়ে গেলে বরেন্দ্র চাষীরা পাচ্ছেনা কাঙ্খিত বৃষ্টির দেখা। পুরো আষাঢ় মাসে ছিটেফুটে বৃষ্টি হলে জমি চাষ করার মত বৃষ্টির দেখা পায়নি গোদাগাড়ী ও তানোর এলাকার কৃষকগণ। আষাঢ় মাসে প্রথম দিকে আমন ধান লাগাবে বলে অনেক কৃষক বীজতলা তৈরি করেছেন কিন্তু পর্যন্ত বৃষ্টির অভাবে ধান লাগাতে পারছেন না। কখন আসবে কাঙ্খিত বৃষ্টি এই প্রশ্ন এখন কৃষকের মুখে।
বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তপক্ষের সেচ সুবিধার আওতায় যেসব জায়গায় সেচের সুবিধা আছে সেখানে কৃষক করা অগত্যা সেচ দিয়ে জমি চাষ করে আমন ধান রোপণ করছেন। এ প্রসঙ্গে গোগ্রাম ইউপির বড়শী পাড়া গ্রামের কৃষক আরিফুল ইসলাম জানান, আমন মৌসুম সেচ ছাড়া জমি আবাদ করবে সকল কৃষকই চায়। তবে এবারে বৃষ্টির পানি যে অবস্থা তাতে জমি সেচ দিয়ে ফসল আবাদ করে লাভ হবে না। কারণ বোরে মৌসুমে জমিতে সেচ দিলে পানি থাকে কিন্ত এখন সেচ দিলে প্রচন্ড গরম ও বড় দিনের বেলা হওয়ার কারণে জমিতে পানি বেশি দিন টিকে না, তাই সেচ দিয়ে ধান করলে খরচ পোষানো যাবে না।
গ্রামের আরেকজন কৃষক আমিরুল ইসলাম বলেন, “দিন পনেরো আগে হালকা বৃষ্টির পর জমিতে চাষ দিয়ে রেখেছিলাম এখন ধান লাগানোর সময় কাঙ্খিত বৃষ্টি পাচ্ছি না, সেচ দিয়ে ধান লাগাতে হবে।”
মাঠজুড়ে মাঝে মধ্যে বীজতলায় সবুজ চারা ধানের আভা দেখা গেলেও তা তুলে কাজ করার দৃশ্য খুবই কম। বীজ তলায় চারার বয়স হয়ে যাচ্ছে। এখন না লাগালে কাঙ্খিত ফসল পাবেন না কৃষকরা। প্রসঙ্গক্রমে বটতলী গ্রামের কৃষক সুমন আলী বলেন, “আষাঢ়ের মাঝ সময়ে যে জমিতে ধান লাগানোর কথা সেখানে এখনও অনেক জমিতে ধান লাগাতে পারিনি। এখন সেচ ছাড়া ধান না লাগালে এই চারা দিয়ে ভালো ফলন আশা করা যাবে না।”
আমন মৌসুমে ধান লাগানো থেকে ধান তোলা পর্যন্ত বৃষ্টির পানি দিয়েই কৃষক ধান আবাদ করে। এই মৌসুমে সেচের প্রয়োজন হয় না বললেই চলে। তবে এবারের অবস্থা একেবারেরই উল্টো। গোদাগাড়ী উপজেলার গোগ্রাম, মাটিকাটা, দেওপাড়া ইউপি ও তানোর উপজেলার সরনজাই, তালন্দ, পাচন্দর ইউপির গ্রামগুলোতে যেদিকে চোখ যায় কৃষক সেচের পানি দিয়ে আমন মৌসুমের ধান লাগাচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে তানোর উপজেলার আড়াদিঘি গ্রামের কৃষক শহিদুল ইসলাম বলেন, “যাদের মিনি ডিপ ও বড় ডিপের পাশের জমি আছে তারা সেচের সুবিধা নিয়ে জমি চাষ করছে কিন্তু সেচ দিয়ে আমন ধান করলে লাভ পাওয়া কঠিন হবে।”
গোদাাগাড়ী ও তানোর উপজেলার একাধিক শ্রমিকরা জানান, বীজতলা করার পর এখন বৃষ্টির পানি জন্য প্রহর গুনছেন কৃষকেরা। ধান লাগানোর সময় পার হয়ে যাচ্ছে। এখন সেচের মাধ্যমে ধান না লাগালে জমির ধান (নামলা) হয়ে যাবে। কৃষক ফসল ভালো পাবে না।