প্রযুক্তি ও নৈতিকতাপূর্ণ তরুণ সংগঠন বিআইইস
নিজস্ব প্রতিনিধি, বরেন্দ্র অঞ্চল
বলা হয় জনসংখ্যার দেশ বাংলাদেশ। তারুণ্যের দেশ বাংলাদেশ। সম্ভাবনার দেশ বাংলাদেশ। বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশই যুবক। বাংলাদেশের জাতীয় যুবনীতি অনুসারে ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সী জনগোষ্ঠীকে যুব বা তরুণ বলা হয়ে থাকে। দেশের সার্বিক উন্নয়নের জন্যে তরুণ সমাজের সম্পৃক্ততা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একটি দেশের শুধু আর্থিক উন্নযনই নয়, প্রয়োজন মানসিক, সাংস্কৃতিক, নৈতিকতার উন্নয়নসহ প্রাকৃতিক বৈচিত্র্যের উন্নয়ন। প্রয়োজন দক্ষ তারুণ্য ও মননশীল নৈতিকতা সম্পন্ন একটি তরুণ সমাজ।
প্রযুক্তি নির্ভরতা দিনে দিনে বেড়ে যাচ্ছে। বেড়ে যাচ্ছে মানুষের একাকিত্বতা। একসময় গ্রামের মাঠে তরুণরা খেলতো দল বেঁধে। এখন খেলে মোবাইলে, লেপটপে বা কম্পিউটারে একা একা আনমনে। যার ফলে নানাভাবেই মানুষের সাথে মানুষের ইন্টারএ্যাকশন বা মিথস্ক্রিয়া কমে যাচ্ছে। সম্পর্কগুলোও যেন হয়ে যাচ্ছে র্ভাচুয়াল। আবার দেখা যায় একশ্রেণীর তরুণ যারা সুযোগ সুবিধার অভাবে প্রযুক্তির দিক থেকে পিছিয়ে যাচ্ছে। যার ফলে বর্তমান সময়ে প্রযুক্তি নির্ভর প্রতিযোগীতায় সহজে টিকতে পাচ্ছেনা তারা।
কিন্তু থেমে নেই সচেতন তরুণ। সময়ের কথা বিবেচনা করে আর নৈতিকতার উৎকর্ষতা ছড়িয়ে দিতে রাজশাহীর কিছু সচেতন তরুণ প্রযুক্তি ও উপযোগিতা বিবেচনায় নিজের জ্ঞান ছড়িয়ে দিচ্ছেন আরেক তরুণদের মধ্যে। প্রযুক্তি বিষয়ে দক্ষ এবং একই সাথে নৈতিক দিক দিয়ে সচেতন এমন কয়েকজন তরুণ মিলে গড়ে তুলেছেন বিআইইস (বাংলাদেশ ইননোভেটিভ এ্যাডুকেশন সোসাইটি) নামক একটি সংগঠন। সংগঠনের সদস্যরা নিজের প্রযুক্তি জ্ঞান আরেকজনের মধ্যে ছড়িয়ে দিচ্ছেন একই সাথে প্রযুক্তি ও নৈতিকতার দিকগুলো নিযে আলোচনা করছেন তরুণদের মধ্যে।
শুধু প্রযুক্তি নয়, আমাদের চারপাশের পরিবেশ যা আমাদের বাঁচিয়ে রাখতে সহায়তা করছে প্রতিনিয়ত সেই উপকরণ আর উৎসগুলো কিভাবে রক্ষা করা যায় সে বিষয়েও তরুণদের মধ্যে সচেতনতা ছড়িয়ে দিতে সহায়তা করছেন। শিশুদের মননশীল প্রযুক্তির উৎকর্ষেও এই তরুণরা কাজ করছেন। আবার তরুণদের বৈচিত্র্যময় পেশার দিকগুলো সহযোগী সংগঠনের সহায়তা নিয়ে কাজ করছেন। দক্ষ ও নৈতিকতাপূর্ণ একটি তারুণ গোষ্ঠী তৈরিতে এই তরুণ সংগঠনটি কাজ করছেন।
এ বিষয়ে সংগঠনটির তরুণ সভাপতি জয়নাল আবেদিন সবুর বলেন, “আমরা তরুণদের এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রযুক্তি জ্ঞানের পাশাপাশি তার পারিপার্শ্বিক পরিবেশ প্রতিবেশ রক্ষায় সচেতন করি। কারণ বর্তমান সময়ে আমাদের জন্যে যেমন প্রযুক্তি জ্ঞান দরকার আবার আমাদের বেঁচে থাকার প্রধান মাধ্যম প্রকৃতি ও পরিবেশকেও তেমনি রক্ষা করা দরকার আগে।”
বারসিক বরেন্দ্র অঞ্চলের সমন্বয়কারী শহিদুল ইসরাম বলেন, “সময়ের বিবর্তনে তরুণদের যেমন প্রযুক্তিজ্ঞান অপরিহার্য বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে তেমিন তাদের নৈতিক দিক এবং নিজের সামাজিক প্রাকৃতিক সম্পদ সুরক্ষা এবং এ বিষয়ে প্রত্যক্ষ দক্ষতা ও জ্ঞান থাকাও জরুরি।” তিনি আরও বলেন, “তরুণদের সংগঠন বিআইইস এবং বারসিক যৌথভাবে উক্ত কাজগুলো করে যাচ্ছে। সময়ের সাথে নিজেকে সবদিক থেকে তরুণদের যোগ্য করে না তুললে এই তরুণরা বিশ্বের প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়বে। তাই আমাদের প্রযুক্তি জ্ঞানের মধ্যে দিয়েই নিজের নৈতকতার উন্নয়ন, নিজের সম্পদ সুরক্ষার দিকগুলোরও উন্নয়ন হবে সেই প্রত্যাশা।”