ঔষধি গুণে ভরা সবজি ‘করলা’
ভাঙ্গুড়া (পাবনা) থেকে মো. মনিরুজ্জামান ফারুক
সুস্থ সবল দেহ গঠনে ভাতের সাথে বেশি করে শাকসবজি খাওয়া প্রয়োজন। আমাদের দেশে সাধারণত শীতকালে বেশি শাক সবজি পাওয়া যায়। এ সময় দামও থাকে খুব সস্তা। আলু, পটল, ঢেঁড়স, পুঁইশাক, লালশাক, পালংশাক, মুলা, গাজর, টমেটো, ফুলকপি, বাঁধাকপি, লাউ, শিম, বেগুণ প্রভৃতি আমাদের দেশে উৎপাদিত শাকসবজি। এসব শাকসবজিতে রয়েছে নানা ঔষধি গুণাগুণ। যা মানব দেহ গঠনে কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
ভাতের সাথে নিয়মিত এসব শাকসবজি খেলে আমরা নানা রোগের হাত থেকে বাঁচতে পারি। তেমনি একটি সবজি ‘করলা’। করলা উচ্ছে নামেও পরিচিত। করলা ভর্তা, ভাজি ও মাছ দিয়ে রান্না করে ভাতের সাথে খাওয়া যায়। এটি মূলত গ্রীষ্মকালনি সবজি হলেও সারাবছরই পাওয়া যায়। মুক্তকোষ বাংলা উইকিপিডিয়া থেকে জানা যায়, করলা Cucurbitaceae পরিবারভুক্ত এক প্রকার লতা জাতীয় উদ্ভিদ। এর রয়েছে নানা ঔষধি গুণ। করলার একই গাছে পুরুষ ও স্ত্রী ফুল হয়। এর বৈজ্ঞানিক নাম Momordica charanti. ইংরেজিতে একে Balsam pear, alligator pear, bitter gourd, bitter melon, bitter cucumber ইত্যাদি বলা হয়। এ উদ্ভিদটির আদি নিবাস ভারতীয় উপমহাদেশে।
করলা তেতো স্বাদযুক্ত এবং দেখতে কাঁটার মতো। ফুল হলুদ বর্ণের। ফল লম্বাটে, রঙ কাঁচা অবস্থায় সবুজ, আর পাকলে কমলা বা লাল বর্ণের হয়ে থাকে। করলার ঔষধি গুণ সম্পর্কে জানা যায়, এটি কৃমিনাশক, কফনাশক, পিত্তনাশক ও জীবানুনাশক । এলার্জি প্রতিরোধে এর রস দারুণ উপকারি। ডায়াবেটিস রোগীরা প্রতিদিন নিয়মিতভাবে করলার রস খেলে রক্তের সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। বাতের ব্যাথায় করলা রস খেলে ব্যাথা থেকে আরোগ্য মেলে। শরীরের ক্ষত স্থানের উপরে করলার পাতার রসের প্রলেপ লাগিয়ে এবং এর পাতা সিদ্ধ পানিতে ক্ষতস্থান ধুলে ক্ষত সেড়ে যায়। অ্যালার্জি হলে করলার রস দু’চা চামচ দুবেলা খেলে ফল পাওয়া যায়। চর্মরোগেও করলা বেশ উপকারী।
এছাড়াও জন্ডিস ও লিভারের অসুখে করলা কার্যকর। খাবারে অরুচি দেখা দিলে করলা খেলে রুচি আসে। পাবনা জেনারেল হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার (হোমিও) ডা. জাকারিয়া খান মানিক বলেন, ‘করলা ভিটামিন ও আয়রনসমৃদ্ধ একটি সবজি। খাবারের মেন্যুতে করলা রেখে আমরা শরীরের নানাবিধ পুষ্টির চাহিদা মেটাতে পারি।’