দুর্যোগ থেকে বাঁচতে প্রাকৃতিক উদ্ভিদসম্পদ রক্ষা করা প্রয়োজন
নেত্রকোনা থেকে পার্বতী রাণী সিংহ
বিশ্ব পরিবেশ দিবসকে সামনে রেখে ‘একটাই পৃথিবী, আসুন বাঁচি প্রকৃতির ছন্দে’ রাজেন্দ্রপুর গ্রামবাসি, বারসিক ও পরিবেশ অধিদপ্তর নেত্রকোনা যৌথ উদ্যোগে রাজেন্দ্রপুর আইপিএম ক্লাবের হলরুমে আলোচনা, অচাষকৃত খাদ্যমেলা, রচনা প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে সচেতনতামূলক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে সম্প্রতি।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নেত্রকোনা পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক পারভেজ আহম্মেদ। রাজেন্দ্রপুর আইপিএম ক্লাবের সভাপতি কামরুল হাসান বাদশা। বারসিক’র আঞ্চলিক সমন্বয়কারী মো: অহিদুর রহমান, সহযোগি সমন্বয়কারী শংকর ম্রং, মোক্তাল হোসেন উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থী, কিশোরী সংগঠনের সদস্যসহ গ্রামের উদ্যোগী নারীরা।
অচাষকৃত খাদ্যমেলায় সর্ব্বোচ্চ ৪৭ জাতের খাদ্যসম্পদ প্রদর্শন করা হয়। গ্রামের নারীরা প্রতিটি খাদ্যের ব্যবহার ও ঔষধিগুণ নিয়ে বর্ণনা দেন। আলোচনায় প্রধান অতিথির ভাষণে নেত্রকোনা পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক জনাব পারভেজ আহম্মেদ বলেন, ‘আমি এই ধরনের আয়োজন এই প্রথম দেখলাম। আমি অবাক যে আপনাদের আশেপাশের পরিবেশেই এসব গাছ এখনও আছে। আপনারা ব্যবহার করছেন। খাদ্য হিসেবে খাচ্ছেন। আগামিতে আপনারা বাড়ির আঙ্গিনায় চাষ করবেন যার বাড়িতে যতবেশী প্রাকৃতিক এই খাবারগুলো পাবো তিনি পুরস্কৃত হবেন।’ তিনি আরও বলেন, প্রাকৃতিক এই খাদ্য প্রতিটিই ঔষধি। আমাদের পশু পাখি, বন্যপ্রাণি এসব খাদ্য খেয়ে রোগমুক্ত থাকে। প্রকৃতিতে এসব খাদ্য না থাকলে আমরা মানবজাতি আরো বেশি রোগে আক্রান্ত হবো। মহামারিতে আক্রান্ত হবো। আমাদের টিকে থাকার প্রয়োজনেই এই খাদ্যসম্পদ রক্ষা করতে হবে।’ গ্রামের নারীরা বলেন, ‘আমাদের চারপাশে প্রাকৃতিকভাবেই এসব খাদ্যসম্পদ জন্মায়। আমাদের যতেœ ও প্রয়োজনেই আজও টিকে আছে প্রাকৃতিক এসব খাদ্য।’
পাখি, ব্যাঙ, কেঁচো, মৌমাছি, নদী,শামুক গাছ এসব পরিবেশ রক্ষায় কিভাবে সহযোগিতা করে এ বিষয়ে মোক্তাল হোসেন উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রচনা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। তিন জন ভালো লিখে বিজয়ী হয়। তাদেরকে বই , নীমগাছ দিয়ে পুরস্কৃত করা হয়। অচাষকৃত খাদ্যমেলায় রুমানা বেগম ৪৭ জাতের, আম্বিয়া বেগম ৪৪ জাতের, শাহিনা বেগম ৩৮ জাতের, শিউলি ২৯ জাতের, কুলসুমা ২৫ জাতের, শাহেদা ১৮ জাতের প্রাকৃতিক খাদ্য প্রদর্শন করেন। প্রত্যেককেই ক্রোকারিস সামগ্রী ও নীম গাছ দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়।