জানি না বলেই আমাদের এতো সমস্যা
সাতক্ষীরা থেকে বিশ্বজিত মন্ডল ও রামকৃষ্ণ জোয়ারদার
বারসিক এর উদ্যোগে জয়াখালী গ্রামের স্থানীয় জনগোষ্ঠীর অংশগ্রহণে গতকাল শ্যামনগর উপজেলার কৈখালী ইউনিয়নের জয়াখালী নারী সংগঠনের কার্যালয়ে পরিবার পর্যায়ে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সামাজিকীরণ বিষয়ে মা সমাবেশ আয়োজন করা হয়েছে।
জয়াখালী নারী সংগঠনের সভানেত্রী শামছুরনাহার বেগমের সভাপতিত্বে ও বারসিক কর্মকর্তা বিশ^জিৎ মন্ডলের সঞ্চালনায় সমাবেশ উপলক্ষে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বক্তব্য রাখেন উপজলো জনসংগঠন সমন্বয় কমিটির সাধারণ সদস্য ও সাংবাদিক শাহীন ইসলাম, কৃষাণী মন্জুয়ারা বেগম, জয়াখালী নারী সংগঠনের সভানেত্রী শামছুরনাহার ও বারসিক কর্মকর্তা রামকৃষ্ণ জোয়ারদার প্রমুখ।
আলোচনায় বক্তারা পরিবার পর্যায়ে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সামাজিকীরণ বিষয়ে বলেন, “যত দিন যাচ্ছে ততই আমাদের দেশে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির সংখ্যা বাড়ছে। আর এ প্রতিবন্ধী হওয়া যেমন সৃষ্টিকর্তার রহমাতের উপর তেমনি আমরা নিজেরাও চেষ্টা করে এ প্রতিবন্ধীতা রোদে ভূমিকা রাখতে পারি। তার জন্য আমাদের কিছু করণীয় আছে। যেমন আমরা আমাদের নিকট আত্মীয়ের মধ্যে বিয়ে করব না, বিয়ের আগে রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা করবো, বাল্য বিবাহ করবো না, নির্দিষ্ট বয়সের মধ্যে বাচ্চা নেব, ধুমপান করব না, গর্ভবতী মায়ের স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্য গ্রহণ নিশ্চিৎ করব, শিশু নেওয়ার ক্ষেত্রে তিনটি বিষয় গুরুত্ব দেব যেমন: শিশু জন্মের আগে, জন্মানোর সময় এবং জন্মের পরে। এছাড়া অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের পরামর্শ গ্রহণ করা, প্রথম বাচ্চার সমস্যা দেখা দিলে পরবর্তী বাচ্চা নেওয়ার আগে ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করা ইত্যাদি বিষয় ওপর জোর দিতে হবে।’
সভায় অংশগ্রহণকারী নারী নুরজাহান, সেলিনারা বলেন, ‘আমরা এসকল বিষয়ে কিছু জানতাম না বলেই আমাদের এতো সমস্যা। আমাদের এই জয়াখালী মধ্যে পাড়ায় প্রায় ৩০০ পরিবারের বসবাস। তার মধ্যে প্রায় ৪৫টি পরিবারে প্রতিবন্ধী আছে। আর এ প্রতিবন্ধী কোনকোন পরিবারে ২-৩ জনও আছে। আর আমাদের এ সমস্যার মূল কারণ আমাদের মনে হচ্ছে এখন যে নিকট আত্মীয়র মধ্যে বিয়ে করা এবং বাল্য বিয়ে।”
অন্য অংশগ্রহণকারীরা জানান, তারা আরো আগে যদি এরকম কর্মশালায় অংশগ্রহণ করতে পারতেন তাহলে হয়তোবা কিছু প্রতিবন্ধী রোধ করতে পারতেন। এ সভা করার জন্য বারসিককে ধন্যবাদ জানান। আরো বেশি বেশি এরকম কর্মসূচি যাতে আয়োজন করা হয় সে আহ্বান ও অনুরোধ জানান।
সভায় জয়খালী গ্রামের কৃষক-কৃষাণী, শিক্ষার্থী, শিশু ও নবীন প্রতিবন্ধী, প্রতিবন্ধী পরিবারের সদস্য এবং ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।