হতদরিদ্রদের পাশে গারো আদিবাসী যুবদল
কলমাকান্দা, নেত্রকোনা থেকে গুঞ্জন রেমা
সারাবিশ্ব যেখানে লক ডাউনে আছে করোনা ভাইরাসে, নিন্ম আয়ের মানুষ যখন খাদ্যের অভাবে দিশেহারা, করোনা ভাইরাসের ভয়ে যেখানে মানুষ গৃহবন্দী হয়ে আছে। এমন অবস্থায় কিছু হৃদয়বান ব্যক্তিগণ এগিয়ে আসছেন তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী। এগিয়ে দিচ্ছেন কিছু খাদ্য সামগ্রী; যার ফলে একটু হলেও উপকৃত হচ্ছেন হতদরিদ্র মানুষগুলো। এমন করোনা মহামারী অবস্থায় গারো আদিবাসী তরুনরাও পিছিয়ে নেই। তারাও এগিয়ে আসছেন আর্তমানবতার সেবায়। ১২ জন উদ্যোগী যুবরা মিলে একটি দল গঠন করলেন মানুষকে সেবার উদ্দেশ্যে। দলের নাম দিলেন চেলেঞ্জ কভিড ১৯।
![](https://barciknews.com/wp-content/uploads/2020/05/96416672_1434622110050985_7156092354737209344_n.jpg)
১২ জন উদ্যোগী যুবরা মিলে হৃদয়বানদের কাছ থেকে আর্থিক সহযোগিতা নিয়ে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করছেন। এ পর্যন্ত প্রায় ১৬০টি পরিবারের মধ্যে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেছেন। সামনে তাদের আরো খাদ্য সামগ্রী বিতরণের প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছেন। শুধু যে খাদ্য সামগ্রী বিতরণই করছেন এমনটা না পাশাপাশি করোনা ভাইরাস থেকে রক্ষায় যেসব করণীয় বা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কথা সেসব বিষয়গুলি সম্পর্কেও তারা সচেতনতা বৃদ্ধি করে যাচ্ছেন। উৎরাইল বাজার, উৎরাইল গ্রামে প্রতিটি বাড়ীর আশপাশে, পাশাপাশি গ্রামে ও যানবাহনগুলিতে জীবানুনাশক স্প্রে করছেন। করোনা ভাইরাস বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য লিফলেট বিতরণ ইত্যাদি।
![](https://barciknews.com/wp-content/uploads/2020/05/96753340_260117358442857_1964844286906204160_n.jpg)
বলছিলাম সুসং দূর্গাপুর উপজেলার উৎরাইল গ্রামের কিছু সংঘবদ্ধ গারো আদিবাসী যুবদের কথা। করোনা ভাইরাসের ফলে লকডাউন হওয়ায় অনেক নিন্ম আয়ের মানুষের আয়ের উৎস বন্ধ। ফলে অনেক কষ্টে জীবন অতিক্রম করতে হচ্ছে তাদের। একদিকে করোনার ভয় অন্যদিকে ক্ষুধা। কোথায় যাবেন এমন নিন্ম আয়ের মানুষজন? খেটে খাওয়া এমন নিন্ম আয়ের মানুষদের পাশে দাঁড়াতে কিছু গারো আদিবাসী যুবরা উদ্যোগী হলেন। যুবরা মিলে এমন অবস্থায় নিন্ম আয়ের মানুষদের জন্য কি করা যায় এ নিয়ে আলোচনা করতে থাকেন।
![](https://barciknews.com/wp-content/uploads/2020/05/95870255_572059633498573_8550019884665274368_n.jpg)
মানুষকে সাহায্য করতে চায় কিন্তু হাতে কোন টাকা পয়সা নেই তবে কিভাবে সাহায্য করবো? তারপর ১২ জন মিলে সিদ্ধান্ত নিলেন দানশীল বা হৃদয়বান ব্যক্তিদের কাছ থেকে তহবিল সংগ্রহ করে নিন্ম আয়ের মানুষের মাঝে কিছু খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করবেন। যেমন পরিকল্পনা তেমনি কাজ। শুরু করলেন তহবিল সংগ্রহ। একে একে সাড়া দিতে থাকেন এলাকার দানশীল বা হৃদয়বান ব্যক্তিগণ। এভাবে কিছু দানশীল বা হৃদয়বান ব্যক্তিদের কাছ থেকে তহবিল সংগ্রহ করেই শুরু করে দিলেন তাদের কার্যক্রম। তাদের এ কার্যক্রম এলাকায় এক ধরনের সাড়া ফেলতে শুরু করেছে। শুধু নিজ এলাকায় নয়। নিজ এলাকার গন্ডি পেরিয়ে এখন বিভিন্ন গ্রামেও যাচ্ছেন খাদ্য সামগ্রী নিয়ে। মানুষকে সেবার করার ইচ্ছা থাকলে যেকোন ভাবেই সেবা করা যায় তারই একটি প্রমাণ এটি।