অনলাইন ক্লাশে প্রান্তিক শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ বাড়াতে ইন্টারনেটসুবিধা দেওয়ার দাবি
মানিকগঞ্জ থেকে বিমল চন্দ্র রায়
করোনাকালিন প্রান্তিক শিক্ষার্থীদের ‘শিক্ষার সমস্যা ও ভাবনা’ বিষয়ে অনলাইন আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে সম্প্রতি। মানিকগঞ্জ প্রান্তিক শিক্ষার্থী ফোরামের উদ্যোগে প্রান্তিক শিক্ষার্থী, শিক্ষক অভিভাবকদের অংশগ্রহণে চরকৃষ্ঞপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ঊষা মন্ডলের সভাপতিত্বে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনাসভায় প্রধান আলোচক হিসেবে আলোচনা করেন লালমাটিয়া হাউজিং সোসাইটি স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ আকমল হোসেন, বাংলাদেশ কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির মানিকগঞ্জ জেলার সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আশুতোষ রায়, শিক্ষার্থী মীর নাদিম, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অজিত দাস, অভিভাবক ইকবাল হোসেন, অভিভাবক সত্য সাহা, সমাজসংগঠক মুক্তার হোসেন, শাহিনূর রহমান।
আলোচনায় প্রধান আলোচক আকমল হোসেন বলেন, ‘করোনাকালিন শিক্ষায় প্রান্তিক শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে যাচ্ছে। আগের দিনে স্কুলঘর ছিল কাঁচা তবে শিক্ষকগণ ছিলেন পাকা। এখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পাকা তবে শিক্ষকগণ কাঁচা। শিক্ষকগণ এখনও ডিজিটাল ফর্মে আসতে পারেন নাই। শিক্ষকগণ শিক্ষার্থীদের শ্রেণি কক্ষে পাঠদানে পরিবর্তে নিজস্ব চেম্বারে পাঠদানে বেশি মনোযোগি। করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ফলে শিক্ষার্থীরা নেটভিত্তিক আসক্তিতে আক্রান্ত হচ্ছে। দীর্ঘসময় পরিবারের সাথে থাকার কারণে পরিবারের অভিভাবকগণই পারে শিক্ষার্থীদের সঠিকভাবে পরিচালনা করতে। করোনা সচেতনতার মাধ্যমে করোনা মুক্তির পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা শিক্ষাজীবনে ফিরতে পারবে বলে আশা করছি।’ উষা মন্ডল বলেন, ‘আমি একজন শিক্ষক হিসেবে সরকারি নির্দেশ মোতাবেক প্রতিনিয়ত অনলাইনে ক্লাস নিচ্ছি। তবে উপস্থিতি নগন্য।’
আশুতোষ রায় বলেন, ‘আমরা অনলাইনের ক্লাস নিতে চেষ্টা করছি। তবে অনেক শিক্ষাথীরা জানায় যে তাদের ইন্টারনেট সুবিধা নেই। ফলে সঠিকভাবে ক্লাস নিতে পারছিনা। সেক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে নেটওয়ার্ক এর ব্যবস্থা করলে ভালো হয়। করোনার ভ্যাকসিন শিক্ষার্থীদের দেবার ব্যবস্থার দাবি করি।’ মীর নাদিম বলেন, ‘আমি একজন অনার্স এর শিক্ষার্থী। এক বছর যাবত সবকিছু বন্ধ। আমাদের মধ্যে হতাশা কাজ করছে। কি হবে? কি করবো? তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিলে করোনা পরিস্থিতি খারাপ হতে পারে। তাই সচেতনতা বাড়াতে হবে।’ অজিত দাস বলেন, ‘আমি আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থীর সাথে কথা বলে দেখেছি তারা চাকুরির জন্য চেষ্টা করছে। কারণ কখন বিশ্ববিদ্যালয় খুলবে তার কোন নির্দেশনা নেই, পাশাপাশি আমাদের মতো দরিদ্র শিক্ষার্থীদের জন্য সেশনযটের ধকল নেবার মতো সময় নেই। সব মিলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া উচিত।’
আলোচনায় আরও বক্তব্য রাখেন মুক্তার হোসেন শাহিনুর রহমান ও ইকবাল হোসেন প্রমুখ।