যুব নেতৃত্বে এগিয়ে যাবে সমাজ
সিংগাইর মানিকগঞ্জ থেকে শাহীনুর রহমান
বাংলাদেশের মোট জনগোষ্ঠীর অর্ধেকের বেশি যুব সমাজ। এখানে অত্যন্ত কর্মক্ষম সৃজনশীল ও প্রতিশ্রতিশীল একটি যুব গোষ্ঠী রয়েছে। যদি এই যুব গোষ্ঠীকে দক্ষভাবে তৈরি করা যায় তাহলে যুবদের মধ্যে আত্মকর্মসংস্থান তৈরি হবে তেমনি দেশও মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবে। একই সঙ্গে তাদের জীবন জীবিকার উন্নয়ন হবে ও সমাজের ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে।
সেই ধারাবাহিকতায় সিংগাইর উপজেলার বলধারা ইউনিয়নের ব্রী কালিয়াকৈর গ্রামের ছাত্র ও যুবকল্যাণ উন্নয়ন সংঘের উদ্যোগে যুব নেতৃত্ব ও সাংগঠনিক দক্ষতা উন্নয়ন বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে সম্প্রতি। কর্মশালটি আয়োজনে বারসিক সহযোগিতা করে। কর্মশালায় যুব সংগঠনটির ৩০ জন সদস্য অংশগ্রহণ করেন। সংগঠনের সভাপতি শামীম হোসেনের সভাপতিত্বে বারসিক কর্মকর্তা শাহীনুর রহমান সহায়ক হিসেবে কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন।
সহায়ক তার আলোচনায় বলেন, ‘নেতার গুণই নেতৃত্ব। যৌথ কোন কাজে সফলতা পেতে হেলে নেতৃত্ব হতে হবে সুষ্ঠ ও সুশৃংখল। নেতৃত্ব সঠিক থাকলে অনেক কঠিন কাজ সহজেই অর্জন করা যায়। অনেক ক্ষতি থেকেই নেতৃত্ব গুণেই টিকে থাকা যায়। তাই দেশ ও সমাজ উন্নয়নে তরুণ ও যুবদের সংখ্যা বাড়াতে হবে। তাদের মাধ্যমে নেতৃত্বের বিকাশ ঘটবে। একটি সংগঠনের অবশ্যই একজন নেতা থাকতে হবে। নেতাকে অবশ্যই সাংগঠনিক চিন্তার হতে হবে। যিনি নেতৃত্ব দেবেন তার মধ্যে তার মধ্যে সততা ও অন্যকে প্রভাবিত করার ক্ষমতা থাকতে হবে। নেতাকে অবশ্যই বুদ্ধিমান, আত্মবিশ^াসী ও মানবিক গুণাবলি সম্পন্ন ব্যক্তি হতে হেেব। নেতার মধ্যে যোগাযোগ দক্ষতা থাকতে হবে তা নাহলে নেতার কাজ কখনো প্রকাশ পাবে না।’
যুবকল্যাণ উন্নয়ন সংঘের সভাপতি শামীম হোসেন বলেন, ‘আমাদের এলাকায় ছাত্র ও যুব কলল্যাণ উন্নয়ন সংগঠন নামে একটি সামাজিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন রয়েছে। এই সংগঠনটি আমাদের গ্রামের সুবিধা বঞ্চিতি শিশুদের নিয়ে কাজ করে। এই সংগঠনটির মাধ্যমে আমরা গ্রামের রাস্তাঘাট উন্নয়নের জন্য স্থানীয় চেয়ারম্যনের সাথে যোগযোগ করে ভাংগা রাস্তা মেরামত করি, কৃষিপণ্য পরিবহনের জন্য নদীর উপর লোহার ব্রীজ নির্মাণ করেছি। বাল্য বিয়ে, ইভটিজিং ও মাদকের বিরুদ্ধে বিলবোর্ড টানাই, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের মাঝে বীজ বিতরণ করি, পারিবারিক ও সামাজিকভাবে বৃক্ষ রোপণ করি, করোনায় মহামারিতে বিনামূল্যে মাস্ক বিতরণসহ মানবিক সবজি বাজার চালু করি।’
যুবকল্যাণ উন্নয়ন সংঘের সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন বলেন, ‘আমাদের সমাজে যৌতুক প্রথা, বাল্য বিয়ে, মাদক ও ইভটিজিংয়ের মত সমস্যা এখনো রয়েছে। এ সবের বিরুদ্ধে যুবসমাজকে এগিয়ে আসতে হবে এবং যুব নেতৃত্বের মাধ্যেমে এই সামাজিক সমস্যা সমাধান করতে হবে। নেতৃত্ব বিকাশের জন্য তরুণদের সুশিক্ষা দিতে হবে। শিক্ষার আলোয় তারা পারিবারিক সহিংসতা, বাল্য বিয়ে ও মাদকের বিরুদ্ধে কাজ করবে। তবে এর জন্য দরকার সাংষ্কৃতিক আন্দোলন। এই চর্চা যত বাড়বে মননশীলতা তত উন্নত হবে। মননশীলতা সঙ্গে নেতৃত্বের সম্পর্ক রয়েছে। যে তরুণরা ভালো কাজ করবে তাদের স্বীকৃতি দিতে হবে। তাহলে তারা ভালো কাজে উৎসাহিত হবে।’