ফসলবৈচিত্র্য বৃদ্ধি করা প্রয়োজন
নেত্রকোনা থেকে মো. অহিদুর রহমান
হাওরের খাদ্যযোদ্ধারা খরা, বন্যা, আগাম বন্যা, পাহাড়ি ঢল, সেচের পানির সমস্যা, বাঁধভাঙ্গার আগ্রসন, ফলনবিপর্যয়, বীজ সমস্যা, বজ্রপাত, যোগাযোগ ব্যবস্থার প্রতিকূলতা, অতিবৃষ্টি, ঘূর্ণিঝড় সামাল দিয়ে ধান উৎপাদন করেন। কৃষকের কাছে এখন আর কোন বীজ নেই। বীজের মালিক এখন শুধু কোম্পানি ও বিএডিসি। বোরো মৌসুম এলেই ধানের বীজের জন্য হন্যে হয়ে ঘুরেন দোকানে দোকানে, বীজ কিনে হন প্রতারিত। রবি মৌসুমে শস্যফসলের বীজ কৃষকের ঘরে থাকেনা। সবাই বাজারের বীজের উপর নির্ভরশীল।
গত কয়েকবছর ধরে ব্রিআর-২৮, বিআর–২৯, ধান চাষ করে নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন কৃষকেরা। হাওরের কৃষকের জন্য আগাম ধানের বীজ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এসব বিষয়কে সামনে রেখে হাওরের কৃষকদের অংশগ্রহণে বারসিক’র সহযোগিতায় বারসিক মদন উপজেলা রিসোর্স সেন্টারে কৃষিপ্রাণবৈচিত্র্য সংরক্ষণ জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন ও সক্ষমতা বিষয়ক শীর্ষক সংলাপের আয়োজন করা হয়েছে সম্প্রতি। আয়োজনে হাওর পাড়ের গোবিন্দশ্রী কদমশ্রী, কুলিয়াটি,দক্ষিণ মদন, উচিতপুর ইছাপাড়া, বারঘরিয়া, বড্ডা, মাঝিপাড়া, বৃবরিকান্দি গ্রামের প্রায় ৪০ জন কৃষককৃষানি অংশগ্রহণ করেন।
সংলাপে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নেত্রকোণা কৃষিসম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (প্রশিক্ষণ) চন্দ্র কুমার মহাপাত্র, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মদন উপজেলার কৃষিকর্মকর্তা হাবিবুর রহমান, বারসিক’র আঞ্চলিক সমন্বয়কারী মো. অহিদুর রহমান, সহযোগি সমন্বয়কারী শংকর ¤্রং, উপজেলা সমন্বয়কারী মো. আলমগীর,উদ্যোগী কৃষক কৃষাণী।
প্রধান অতিথি চন্দনকুমার মহাপাত্র বলেন, ‘শুধু ধান নয় হাওরে ফসলের বৈচিত্র্যতা বাড়াতে হবে। ধানের সাথে সাথে বাদাম, আলু, মিষ্টি আলু, ভূট্টা, মিষ্টি লাউ, সরিষা, ডাল, নানান জাতের সবজি মাসকলাইসহ চাষ করা যেতে। কৃষির মাঝে বৈচিত্র্যতা আনতে হবে। তাহলে দুর্যোগ থেকে আপনারা বাঁচতে পারবেন।’
হাওর পাড়ের কৃষকেরা বোরো মৌসুমের ধানের বীজ, শস্যফসলের বীজের প্রাপ্তি সমস্যা, সংকট, আগাম ধানের বীজ, ফসলের পোকামাকড়, রোগবালাই, চাষপদ্ধতি নিয়ে এলাকাভিত্তিক সমস্যাগুলো তুলে ধরেন। উপেজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান সকল প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ‘আমাদের কৃষকদেরকে আরো সচেতন হতে হবে। জমির প্রস্তুতির শুরু থেকে ফসল ঘরে তোলার আগপর্যন্ত ধাপে ধাপে যেসব সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়, যেমন জমি প্রস্তত, সার প্রয়োগ, বীজতলা তৈরি, রোপণ, সেচ, কীটনাশক প্রয়োগ এসব সঠিকভাবে করতে না পারার কারণে অনেক অনেক সমস্যা তৈরি হয়।’ যেকোন পরামর্শের জন্য কৃষিঅফিসের যোগাযোগের জন্য তিনি কৃষকদেরকে অনুরোধ জানান।