সংগ্রামী অমরী রানী
ছন্দা রানী মন্ডল, আশাশুনি (সদর) সাতক্ষীরা:
আশাশুনি সদরের খোলপেটুয়া নদীর বাঁধের পাশে অমরী রানীদের পরিবারের বসবাস। গেলো কয়েক বছর বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ বিশেষ করে নদীর বাঁধ ভাঙনের ফলে সরাসরি ক্ষতির শিকার হয়েছে তার পরিবার। তাদের সম্পত্তির প্রায় সবটুকু গেলো কয়েক বছরের খোলপেটুয়া গিলে খেয়েছে। আবার এলাকায় কৃষি জমি কমে যাওয়া এবং লবণাক্ততার কারণে কাজ কমে যাওয়ার ফলে তাদের অভাব-অনটনে দিন কাটছে। পরিবারের এই দুর্দশার কারণে অমরী রানীকে তার স্বামীর পাশাপাশি নিজেকেও দিনমজুরের কাজ করতে হয়।
![](https://barciknews.com/wp-content/uploads/2024/01/pic-1.jpg)
অমরী রানীর স্বামী সন্তারসহ ৪ জনের পরিবারের। পরিবারে স্বামী দিলীপ কুমার নদীতে মাছ ধরা ও দিনমজুরের কাজ করতেন। একা আয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হতো। ফলে অমরীও কাজে নেমে পড়ে। কিন্তু অমরীরা এখন ঘরে দাঁড়িয়েছে। এখন আর অমরী অন্যের কাজে যান না। নিজের উদ্যোগেই করছেন বহুমূখী কাজ। ভেড়া পালন, কৃষি কাজ, হাঁস-মুরগি পালনসহ নানান কাজ করছেন।
অমরীদের মাত্র ৩ শতাংশ জায়গা। সেই জায় ছোট ঘর করে থাকেন। সেখানেই ভেড়া ও হাঁস-মুরগি পালন করেন। এবং বাড়ির পাশে অন্যে পরিত্যাক্ত জায়গায় সবজি চাষ করছেন। সেখানে আলু, শাক, পালন, মুলা, বাঁধাকপি, ফুল কপিসহ নানান সবজি চাষ করছেন। সেখানে থেকে নিজেরা খাচ্ছেন, জমির মালিককে দিচ্ছেন আবার বিক্রিও করছেন। অমরী রানী হাঁস-মুরগি পালন করে, ভেড়া পালন করে ও সবজি থেকে আয় করে টাকা সঞ্চয় করে বাড়ির পাশে এক বিঘা জমি হারি নিয়েছেন। সেখানে ধান এবং মাছ চাষ করেন।
![](https://barciknews.com/wp-content/uploads/2024/01/Pic.jpg)
অমরী রানীর এই ঘুরে দাঁড়ানোতে সহযোগিতা করেছে বারসিকে পরিবেশ প্রকল্প। প্রকল্প থেকে বিভিন্ন কৃষি প্রশিক্ষণ ও আয়বর্ধনমূলক সম্পদ পায়। ভেড়া, সবজির বীজ ও হাঁস-মুরগি সহযোগিতা পান। বর্তমানে তার ৫টি ভেড়া, ৫টি হাঁস, ৩টি মুরগি রয়েছে। এছাড়া বাড়তি ১ বিঘা জমি হারিতে চাষাবাদ করছে।
অমরী রানী জানান, তার এই ঘুরে দাঁড়ানোর পেছনে বারসিকে পরিবেশ প্রকল্পের বড় অবদান। প্রকল্প থেকে বিভিন্ন কৃষি প্রশিক্ষণ ও আয়বর্ধনমূলক সম্পদ পান। সেখান থেকে স্বামী-স্ত্রী দুজনে সংগ্রাম করে আজ এই পরিবর্তন ঘটিয়েছে।