কলমাকান্দায় প্রাণবৈচিত্র্য দিবস পালিত

কলমাকান্দা নেত্রকোনা থেকে গুঞ্জন রেমা
কলমাকান্দা উপজেলার লেঙ্গুরা ইউনিয়নের তারানগর গ্রামের মিকরাকা নারী সংগঠনের উদ্যোগ ও বারসিক’র সহযোগিতায় আন্তর্জাতিক প্রাণবৈচিত্র্য দিবস উপলক্ষে র‌্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্টিত হয়েছে সম্প্রতি।


আলোচনা সভার সভাপতিত্ব করেন বীরমুক্তিযোদ্ধা বদিন জাম্বিল। প্রাণবৈচিত্র্য সম্পর্কে ধারণায়ণ ও আন্তর্জাতিক প্রাণবৈচিত্র্য দিবসের পটভূমি ও এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করা হয়। আলোচনায় বলা হয়, আমাদের একপেশে উন্নয়ন চিন্তার কারণে গাছ, পাখি, মাছ, জীব, অণুজীব, বিভিন্ন উদ্ভিদ দেখা-অদেখা যেসব প্রাণসত্তা আছে আমাদের চারপাশে এসব প্রাণের নিরাপত্তা দিনকে দিন সংকোচিত হচ্ছে। মানুষ কেন্দ্রিক উন্নয়নের ফলে অনেক প্রাণবৈচিত্র্য আজ ধ্বংসের মুখে। উন্নয়ন পরিকল্পনায় প্রাণবৈচিত্র্য রক্ষার কোন পরিকল্পনা থাকে না।
আলোচনায় দাবি করা হয়, উন্নয়ন পরিকল্পনায় প্রাণবৈচিত্র্য সুরক্ষার বিবেচনা রেখে তারপর উন্নয়ন করা হোক।

কিশোরী সংগঠনের সদস্য হৈমন্তী রংদী বলেন, ‘দিনে দিনে পরিবেশবান্ধব গাছের সংখ্যা কমছে, দিন দিন বাড়ছে পরিবেশ বিধ্বংসী গাছের সংখ্যা, গাছ যে শুধু মানুষের উপকারে আসে তা নয়, অদেখা অনেক প্রাণের আশ্রয়স্থল।’
মাহফুজা বেগম বলেন, ‘এখন আমাদের এলাকায় মৌমাছি তেমন দেখা যাচ্ছে না, অথচ এই মৌমাছি আমাদের ফসল ফলাতে সহায়তা করে।’ সুরুচি রংদী বলেন, ‘আগে ব্যাঙ ডাকলে বৃষ্টি হতো এখন ব্যাঙের সংখ্যা কমে গেছে। বৃষ্টি পূর্বাভাস জানা যেত ব্যাঙের মাধ্যমে। এখন সব কিছুই উল্টাপাল্টা হয়ে গেছে।’ বৃষ্টি হাগিদক বলেন, ‘একসময় পাখির ডাকে আমাদের ঘুম ভাঙতো এখন মোবাইলের রিংটোনে আমাদের ঘুম ভাঙ্গে। পাখিও দিন দিন কমে যাচ্ছে। যে পাখি আমাদের ফসলের জন্য ক্ষতিকর পোকা খেয়ে আমাদের ফসল রক্ষা করতো সে পাখিও এখন আর তেমন দেখা যায় না। একসময় আমাদের কুড়েঘর ছিল সেখানে অনেক চড়ই পাখি বাসা বাঁধতো। এখন টিনের ঘর হওয়ার পর থেকে চড়ই পাখিও আর দেখি না।


আমাদের সুষ্ঠু সুন্দরভাবে জীবনযাপনের জন্য প্রকৃতির শৃংখল বজায় রাখা আমাদের সকলের গুরু দায়িত্ব। কিন্তু আমরা আমাদের প্রয়োজনে বা নিজ নিজ স্বার্থে সবকিছু ভুলে গিয়ে ধ্বংস করে ফেলি প্রকৃতির সব নিয়ম শৃংখল। প্রকৃতিকে ভালো রাখতে হবে আমাদের নিজেদের জন্যই; না হলে প্রকৃতিও আমাদের সাথে বিরূপ আচরণ করবে যেমন আমরা করছি প্রকৃতির সাথে।

happy wheels 2

Comments