আড্ডায় কবিরাজি!

মানিকগঞ্জ থেকে শিমুল বিশ্বাস

ভেষজ উদ্ভিদের আছে নানামুখী গুণ। যে কারণে এখনও গ্রামের মানুষের রোগ নিরাময়ে আস্থার স্থান দখল করে আছে এই ভেষজ গাছপালা। কিন্তু সংরক্ষণের অভাবে অনেক ভেষজ উদ্ভিদ আজ বিলুপ্তির পথে। Manikআমাদের জীবনের জন্য প্রয়োজনীয় উদ্ভিদ যাতে হারিয়ে না যায়, প্রতিটি বাড়ি যেন হয় প্রাণ-প্রকৃতি সমৃদ্ধ এবং সকলেই যাতে ভেষজ উদ্ভিষসহ অন্যান্য উদ্ভিদের গুনাগুণ সম্পর্কে জানতে ও সংরক্ষণে উৎসাহী হয় সে উদ্দেশ্য নিয়ে মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার নয়াবাড়ি কৃষক কৃষাণি সংগঠনের পক্ষ থেকে আয়োজন করা হয় কবিরাজ আড্ডা। বারসিক সিংগাইর শাখার সহযোগিতায় নয়াবাড়ি গ্রামের কৃষক ইব্রাহিম মিয়ার কৃষি প্রাণ সমৃদ্ধ বাড়িতে ২১ মার্চ দিনব্যাপি চলে কবিরাজদের প্রাণবন্ত আড্ডা । নয়াবাড়ি গ্রামের কবিরাজ ইব্রাহিম মিয়া, জুলমত আলী, মো: বাহাদুর  গনি মিয়া, মো: সিরাজ উদ্দিন, রোকেয়া বেগম, রাসেদা বেগম, লাইলী বেগম, ইমান আলী, আ: সামাদ, রহিমা বেগম ও আলেয়া বেগমসহ বিভিন্ন গ্রামের কবিরাজরা এ আড্ডায় অংশগ্রহণ করেন ।

আড্ডার শুরুতে একে একে ভেষজ উদ্ভিদের কার্যকারিতা সকলের সামনে তুলে ধরা হয়। শুরুতে বারসিক মানিকগঞ্জের আঞ্চলিক সমন্বয়কারী বিমল রায় এই কর্মসূচি উদ্দেশ্য বর্ণনা করে বলেন “ আমরা সব ধরনের প্রাণের অধিকার নিয়ে কাজ করি। তাই প্রাণ প্রকৃতি যারা রক্ষা করে তাদের উৎসাহিত করা এবং সেই চর্চাগুলো সম্প্রসারিত করাও আমাদের অন্যতম উদ্দেশ্য। তাই কোন গাছটি কম আছে আমার বাড়িতে তা আমাদের চিহ্নিত করতে হবে এবং কি করলে তা বাড়ানো যায় সেটাও ভাবতে হবে।”
Manik-1
এরপর কবিরাজ আড্ডায় কৃষক সিরাজ উদ্দিন বলেন, “ঔষধি গাছের গুনাগুণ জানলেই এলাকায় ঔষধি গাছে সমৃদ্ধ হবে।” কৃষক আ: সামাদ বলেন, “ঔষধি গাছ সংরক্ষণ ও ব্যবহার করলে চিকিৎসা ক্ষেত্রে অর্থের অপচয় কমবে।” তিনি সরকারিভাবে ভেষজ উদ্ভিদ সংরক্ষণের প্রচারণা চালানোর দাবি জানান তিনি। অন্যদিকে কৃষাণি রহিমা বেগম বলেন, “এককভাবে উদ্ভিদ সংরক্ষণ করা খুবই কষ্টকর। সেক্ষেত্রে এ সব উদ্ভিদের বিনিময় মূল্য থাকা উচিত। সেই সাথে সকলেরই এ সব উদ্ভিদ সংরক্ষণে উদ্যোগী হওয়া দরকার।”

আড্ডায় অংশগ্রহণকারীরা তাদের আলোচনায় শুধু ঔষধি গাছের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিলেন না, তারা নিরাপদ খাদ্যের বিষয়ও যুক্ত করেন তাদের আলোচনায়। তারা মনে করেন নিজের বাড়িতে সব ধরনের ফল, সবজি ও খাদ্যসামগ্রী বিষমুক্তভাবে উৎপাদন করে খাওয়া উচিত। তাতে শরীর সুস্থ থাকবে। চিকিৎসা ক্ষেত্রে অর্থ সাশ্রয় হবে। আড্ডা শেষে এলাকাভিত্তিক এ ধরনের আলোচনার ধারাবাহিকতা বজায় রাখাসহ নিজে গাছ লাগানো এবং অন্যকে গাছ লাগাতে উৎসাহিত করার প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়।

happy wheels 2

Comments