সাম্প্রতিক পোস্ট

বিলুপ্তির পথে গ্রামবাংলার ঐতিহ্য ‘গোলাঘর’

ভাঙ্গুড়া (পাবনা) থেকে মো. মনিরুজ্জামান ফারুক 

‘গোলা ভরা ধান আর পুকুর ভরা মাছ’ এটি গ্রাম বাংলায় প্রচলিত একটি প্রবাদবাক্য। এখন পুকুর ভরা মাছ থাকলেও নেই কেবল গোলাভরা ধান। কারণ মানুষ আর এখন গোলাঘরে ধান রাখছে না। কালের বিবর্তনে প্রায়ই বিলুপ্তির পথে গ্রামবাংলার ঐতিহ্য কৃষকদের ধান রাখার সেই ‘গোলাঘর’।

আগের দিনে আমাদের দেশের কৃষক তাদের উৎপাদিত ক্ষেতের ধান গোলাঘরে মজুদ করে রাখতো। বসতবাড়ির আঙ্গিনায় মাটি, বাঁশ আর টিনের ছাউনি দিয়ে তৈরি করা হতো ধান মজুদ রাখার এ ঘর। ধানের গোলা বসানো হতো বেশ উঁচুতে। যেন তাতে বর্ষার পানি প্রবেশ না করে। গোলায় প্রবেশের জন্য রাখা হতো একটি দরজা। দরজায় বাইরে থেকে তালা মেরে রাখা হতো যেন চোরের হাত থেকে ফসল রক্ষা পায়। দেখতে অনেকটা পিরামিডের মতো।

Photo Bhangoora Pabna 15-10-2018 Barciknews

জানা গেছে, একটি গোলাঘর তৈরি করতে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা খরচ লাগতো। আগের দিনে গোলাঘর দেখে অনুমান করা যেতো এলাকায় কে কত বড় জোতদার। প্রতিবছর ধান কাটার মৌসুম আরম্ভ হলে কৃষাণিরা গোলাঘর লেপে (মাটির আস্তর) প্রস্তুত করে রাখতো। গোলাঘরের বদলে মানুষ এখন চট ও প্লাস্টিকের বস্তায় ধান ভরে ঘরে মজুদ রাখছেন।

কথা হয় উপজেলার কয়েকজন কৃষকের সাথে যাদের বাপ-দাদারা গোলাঘরে ধান মজুদ রাখতেন। পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার এমন কয়েকজন কৃষক জানান, আগের দিনে ধান রাখার জন্য গোলাঘর ব্যবহার করা হতো। গোলাঘরে ধান রাখায় ইঁদুর ও পোকামাকড়ের উৎপাত থেকে ফসল রক্ষা পেতো। একটি বড় গোলা ঘরে সাধারণত ২/৩শ’ মণ পর্যন্ত ধান রাখা যেতো। উপজেলার কয়েকটি বসত বাড়ির আঙ্গিনায় এখনো দেখা যায় গোলাঘর। তবে এতে রাখা হয় না ধান। গ্রাম-বাংলার এ ঐতিহ্যটুকু শুধুই স্মৃতি হিসেবে রেখে দিয়েছেন তারা।

happy wheels 2

Comments