গুচ্ছ গ্রামবাসীদের মধ্যে ফলজ গাছের চারা বিতরণ

নেত্রকোনা থেকে সুয়েল রানা
বারসিক’র উদ্যোগে গোবিন্দশ্রী ইউনিয়নে নবনির্মিত গুচ্ছগ্রামের ৫০টি পরিবারের সদস্যদের পুষ্টির চাহিদা পূরণে সহযোগিতা স্বরূপ গতকাল ১১০টি ফলজ গাছের চারা বিতরণ করা হয়েছে।


গোবিন্দশ্রী ইউনিয়নে নবনির্মিত গুচ্ছগ্রামের পরিবেশ উন্নয়নে এবং গুচ্ছগ্রাবাসীদের পুষ্টির চাহিদা পূরণে সহযোগিতা স্বরূপ ৫০টি পরিবারকে একটি করে থাই পেয়ারা (৬/৭ ফুট ইঁচু) ও উন্নত জাতের পেঁপে চারা বিতরণ করা হয়। এছাড়াও গুচ্ছগ্রামে মসজিদ নির্মাণের জন্য সংরক্ষিত জমির চারপাশে রোপণের জন্য কিছু পেয়ারা চারা প্রদান করা হয়।


গাছের চারা বিতরণের পূর্বে এক আলোচনায় বারসিক’র প্রতিনিধি শংকর ম্রং পেয়ারা ও পেঁপে চারা রোপণের কারিগরি পদ্ধতি সম্পর্কে গুচ্ছগ্রামবাসীদের পরামর্শ দেন। তিনি উপজেলা প্রশাসন ও বারসিক’র সহায়তায় গুচ্ছগ্রামবাসীদের রোপণকৃত গাছের চারার গোড়ায় জার্মুনি পানা দিয়ে ঢেকে (মালচিং) দেয়ার পরামর্শ দেন। তিনি সকলকে নিজ নিজ ঘরের চারপাশে খালি জায়গাগুলোতে যথা সম্ভব বারোমাসি সবজি ফসল চাষ করার পরামর্শ দেন।


আলোচনায় সবজি ফসল চাষের জন্য বারসিক মদন রির্সোস সেন্টার’র পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় বীজ সহায়তার আশ্বাস প্রদান করা হয়। পেয়ারা ও পেঁপে চারা সহযোগিতা পেয়ে গুচ্ছগ্রামবাসী তাৎক্ষণাৎ চারাগুলো তাদের নিজ নিজ ঘরের চারপাশে রোপণ করেছেন। পেয়ারা চারাগুলোতে আগামী মৌসুমেই ফল পাওয়া যাবে বলে তারা আশাবাদী।

উল্লেখ্য, নেত্রকোনা জেলার মদন উপজেলার হাওর বেষ্টিত একটি ইউনিয়ন গোবিন্দশ্রী। হাওরে প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে পানির প্রবল ঢেউয়ের আঘাতে ছোট ছোট ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়। অনেক দরিদ্র পরিবার পুনরায় মাটি কেটে ভিটা তৈরি করতে না পেরে উদ্ভাস্তু হয়ে পড়েন। আবার অনেক পরিবার রয়েছে যাদের নিজস্ব কোন বাড়িভিটা নেই। তারা অন্যের জমিতে কুড়েঘর করে মানবেতর জীবনযাপন করেন। বাংলাদেশ সরকারের অনেকগুলো উন্নয়ন উদ্যোগুলোর মধ্যে অন্যতম উদ্যোগ হল ঘরহীন ও ভূমিহীন অতিদরিদ্র পরিবারগুলোর জন্য স্থায়ী আশ্রয় নিশ্চিত করা। এ উদ্দেশে বাংলাদেশ সরকার প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে সরকারি খাস জমিতে গুচ্ছগ্রাম বা আশ্রয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় মদন উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে গোবিন্দশ্রী ইউনিয়নের বাস্তবায়ন করা হয়েছে একটি গুচ্ছগ্রাম প্রকল্প। এই প্রকল্পের আওতায় গোবিন্দশ্রী ইউনিয়নে বসবাসরত ৫০টি হতদরিদ্র ভূমিহীন পরিবারকে স্থায়ী আশ্রয় দেয়া হয়েছে। মদন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ওয়ালীউল হাসান গত ৩০ ডিসেম্বর ২০১৯ তারিখে গুচ্ছগ্রামের ঘরগুলো বরাদ্দপ্রাপ্ত ৫০টি পরিবারের নিকট হস্তান্তর করেন। পহেলা জানুয়ারি ২০২০ উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে গুচ্ছগ্রামের পরিবেশ সুরক্ষা ও উন্নয়নে পরিবারগুলোর মধ্যে বিভিন্ন জাতের (ফলদ, বনজ ও ঔষধি) গাছের চার বিতরণ করা হয়।

happy wheels 2

Comments