‘নিরাপদ সবজি চাষ পুষ্টি পাবো বারোমাস’
রাজশাহী থেকে আয়েশা তাবাসুম
‘প্রতি ইঞ্চি মাটি গড়বো সবুজ ঘাঁটি’-এই স্লোগানকে সামনে রেখে বারসিক’র উদ্যোগে বরেন্দ্র অঞ্চলের তানোর উপজেলায় বেশ কয়েকটি গ্রামে প্রাথমিকভাবে নিরাপদ সবজি চাষে আগ্রহী এবং শাকসবজি চাষে অভিজ্ঞ কৃষাণীদের পুষ্টি বাড়ি নির্বাচন করা হয়েছে সম্প্রতি। পুষ্টি বাড়ির আওতায় কৃষাণীরা যাতে নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন করতে পারে সেজন্য বারসিক তাদেরকে কারিগরি সহযোগিতা, পরামর্শ, বীজসহ অন্যান্য সহযোগিতা প্রদান করে আসছে।
বেশ কয়েক মাসের মধ্যে নির্বাচিত কৃষাণীরা তাদের বাড়ির উঠান ফাঁকা জায়গায় বিভিন্ন শাকসবজি চাষ করে সবুজে সমৃদ্ধ করেছেন এবং তদের নিজেদের পরিবারের চাহিদা পূরণ করেছেন। এছাড়া অতিরিক্ত শাকসবজি বিক্রির মাধ্যমে সংসারের আয় বৃদ্ধি করেছেন। শুধু তাই নয়; পুষ্টি বাড়ির প্রতিটি সদস্য তাদের আশেপাশের বাড়িতেও বীজ বিনিময় করে প্রতিবেশিদেরও নিরাপদ সবজি চাষে আগৃহী করে তুলেছেন।
![](https://barciknews.com/wp-content/uploads/2022/01/271529621_473199020862843_9158005538599915269_n.jpg)
এই প্রসংগে তানোর উপজেলার গুবিরপাড়া গ্রামের মোসাঃ মতেজান বেগম বলেন, ‘আমি বিগত এক বছর যাবৎ আমার নিজের পরিবারের জন্য তেমন একটা শাকসবজি কিনিনি। বরং অতিরিক্তটুকু বিক্রি, আত্মীয়সজন এবং প্রতিবেশীদের কাছে বিনিময় করেছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি প্রায় ২০ বছর ধরে বিভিন œধরনের শাকসবজি চাষ করে আসছি তবে বারসিকের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার আগে নিরাপদ বিষমুক্ত সবজি চাষ সম্পর্কে আমার কোন ধারণা ছিলো না। আমি কোনো কোনো সবজিতে কীটনাশক ব্যবহার করতাম। বীজ সংরক্ষণ করতাম না। বাজার থেকে সবজির বীজ বা চারা কিনে চাষাবাদ করতাম।’
তবে বর্তমানে বারসিক’র সাথে যুক্ত হওয়ার তিনি নিজে বীজ সংরক্ষণ করেন, প্রতিবেশীদের কাছ থেকে বীজ সংগ্রহ করেন। মোসাঃ মতেজান বেগম বলেন, এ পর্যন্ত আমি প্রায় ১৫-২০ ধরনের বীজ সংরক্ষণ করে রেখেছি। বারসিক কর্তৃক পরিচালিত জৈব বালাইনাশক ও লোকায়ত পদ্ধতিতে সবজি চাষের প্রশিক্ষণগুলোতে অংশগ্রহণ করেছি। নিত্যনতুন কিছু শিখেছি এবং প্রয়োগ করার চেষ্টা করছি। বর্তমানে আমি কীটনাশক ব্যহারের পরিবর্তে জৈববালাইনাশক সার ব্যাবহার করে নিরাপদ সবজি উৎপাদন করি। এতে করে আমার কীটনাশকবাবদ খরচ কমেছে এবং ফলন ও দ্বিগুণ বৃদ্ধি পয়েছে। আমি আমার পুষ্টি বাড়িতে মৌসুমভিত্তিক বিভিন্ন সবজি চাষ করি।’
মোসাঃ মতেজান বেগম এখন খরা সহনশীল বিভিন্ন সবজির বীজ যেমন গড়আলু, শিম, সজনে ইত্যাদি সংগ্রহ করেন। তাঁর পুষ্টি বাড়িতে শুধুমাত্র সবজিরই চাষ হয় না বরং বিভিন্ন ধরনের ভেষজ ও ঔষধি গাছ যেমন, পাথর কুঁচি, ঘৃতকুমারী, তুলসি, পানাবুটা, উলটকমল, জবা ইত্যাদি গাছ সংরক্ষণ করে রেখেছেন। বারসিক’র সহযোগিতায় এবং নিজের পরিশ্রম তাঁর পুষ্টি বাড়িকে সমৃদ্ধ করেছেন।