ভূমিহীন মানুষের সবজি চাষ খাদ্য নিরাপত্তায় অসামান্য অবদান রাখছে
রাজশাহী থেকে শহিদুল ইসলাম
একটি ঝুপড়ি ঘর এবং একটুকরো খালি জায়গায় নিরাপদ সবজি চাষ করে নিজেদের সবজির চাহিদা পূরণ করছেন রাজশাহী নগরের বস্তির ভাসমান মানুষগুলো। নিজেদের পছন্দমতো সবজি উৎপাদন করে পরিবারের চাহিদা মিটায়ে অনেকে বিক্রি করেও আয় করছেন। শুরুটা হয়েছিলো ২০২০ সালে যখন মহামারি করোনাকালিন খাদ্য সংকট দুর করতে প্রতি ইঞ্চি মাটির ব্যবহারের প্রতি জোর দেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সে লক্ষ্যে রাজশাহীর বস্তিগুলোতে উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারিসক এ কাজে কারিগড়ি সহায়তা প্রদান করে। দেশীয় জাতের সবজি বীজ, ক্যারেট এবং প্রয়োজনীয় জৈবসার দিয়ে সহায়তা করে প্রতিষ্ঠানটি। দিনে দিনে এই কাজের সম্প্রসার ঘটেছে। বর্তমান নগরীর নামোভদ্রা বস্তি, বহরমপুর, জামালপুর, শ্রীরামপুরসহ বিভিন্ন বস্তিতে প্রায় এ হাজারের বেশি পরিবার এই পদ্ধতিতে সবজির চাষ করছেন। তাঁদের দেখাদেখি এখন নগরীর প্রায় প্রতিটি বস্তিতে মানুষ নিজের ঝুপড়ি বা টিনের চালাতে সবজি চাষ করছেন।
বস্তি শুমারী ২০১৪ অনুযায়ী দেখা যায়, রাজশাহীতে ছোট বড় মিলে বস্তির সংখ্যা ১০৪টি। মোট খানার সংখ্যা ১০২০২, যার জনসংখ্যা ৩৯০৭৭ জন। রাজশাহী শহরে প্রায় ৮০.৫৫% খানা সরকারি জমিতে ঝুপড়ি বা ছোট টিনের ঘরে বসবাস করে। বস্তিতে অধিকাংশ পরিবারই এককক্ষ বিশিষ্ট টিনের কাঁচা ঘর বা রুম ভাড়া নিয়ে চার বা পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট্য পরিবারের সবাইকে নিয়ে বসবাস করে। খাওয়া দাওয়া, কাপড় চোপড় রাখা, রান্নার জ¦ালানি রাখা, পরিবারের জিনিসপত্র রাখা সবই ওই একটি ঘরের মধ্যেই করতে হয়। শীতের সময় প্রচন্ড শীত এবং গরমের সময়ে তীব্র গরমের মধ্যেই তাঁদের দিন পার করতে হয়। কিন্তু বিগত কয়েক বছরে ঝুপড়ি বা টিনের চালাতে এরকম সবজি চাষ করার ফলে শীতের সময়ে শীত কম লাগে এবং গরমের সময়ে গরম লাগে বলে জানা যায়। নামোভদ্রা বস্তির সবজি চাষ করেন মোছা: চম্পা রানী বলেন, ‘একটু টুকরো জায়গায় আমার ঝুপড়ি ঘরে লাউ শীম উৎপাদন করছি। নিজে খেয়েও বিক্রি করি।
উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক’র একজন গবেষক বলেন, ‘একটুরো জায়গায় ভূমিহীন ভাসমান মানুষগুলো একটি বা দু’টি ক্যারেটের মধ্যে জৈবসার মাটি দিয়ে সেখানে সবজি বীজ বা চারা লাগান, অনেক সময় মাটি ভালো হলে সেখানেই গর্তখুড়ে চারা রোপণ করা হয়।” তিনি আরো বলেন, ‘এভাবে একজন ভূমিহীন মানুষ তাঁদের পটছন্দমতো সবজি উৎপাদন কওে চাহিদা মেটাতে পাচ্ছেন।