সামান্য সহযোগিতায় বদলেছে প্রান্তিক মানুষের জীবন ও জীবিকা

রাজশাহী থেকে উত্তম কুমার

একটি বাড়ি ও একটি খামার প্রকল্পে অধীনে সরকার ছাগল ও ভেড়া দিয়ে প্রান্তিক মানুষদের সহযোগিতা করে। ২০১৬, ২০১৮ এবং ২০২৩ সালে এই প্রকল্পে বারসিক কর্ম এলাকা থেকে কয়েকজনকে ছাগল পেতে সহযোগিতা করা হয়েছে । এদের মধ্যে একজন ছিলেন তানোর থানার ,তালন্দ ইউনিয়নে মোহর গ্রামে বাসিন্দা বাসন্তী রানী (৪৭)। দুই ছেলে নিয়ে তাঁর সংসার। স্বামী মারা গেছেন।

বাসন্তী রানী দুই ছেলের মুখে একটু খাবার তুলে দেওয়ার জন্য মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে খাবার সংগ্রহ করতেন। এটি এক ধরনের ভিক্ষা চাওয়ার মতোই। সরকারি এই প্রকল্পে সম্পর্কে ধারণা পাওয়ার পর বারসিক এই প্রান্তিক নারীকে ওই প্রকল্পের উপকারভোগী হিসেবে অন্র্তভুক্ত করার জন্য চেষ্টা চালায়। ফলশ্রুতিতে বাসন্তী রানী ওই প্রকল্পের অধীনে ছাগল বরাদ্দ পান। ছাগল পাওয়ার পর তিনি লালন করতে শুরু করেন। পরম যত্নে ছাগল পালনের কারণে আজ তাঁর ছাগলের সংখ্যা ১৯টি!  তিনি প্রতি বছরে ৬০/৭০ হাজার টাকায় আয় করেন ছাগল বিক্রি করে। বাসন্তী রানীকে এখন আর খাবারের জন্য মানুষের বাড়িতে যেতে হয় না। তাঁর দুই ছেলে এখন পড়াশুনা করাচ্ছে ।একজন ক্লাস নাইনে আরেকজন ক্লাস সিক্সে পড়ে। তারাও পড়াশোনার পাশাপাশি ছাগলগুলো দেখাশোনা করে।

অন্যদিকে তানোর উপজেলার আড় দিঘি গ্রামের সাহেরা খাতুন (৫৪)। তিন সন্তান ও স্বামী নিয়ে তার সংসার । তাঁর স্বামী ঠিক মত সংসার পরিচালনা করেন না । এক পর্যায়ে ছোট দুইটি সন্তানের মূখে দুই বেলা ভাত তুলে দেওয়ার জন্য বেছে নেন ভিক্ষার পথ। উপজেলা কর্তৃক দুইটি করে ছাগল ও দুইটি করে ভেড়া পেতে তাকেও সহযোগিতা করা হয়। তার বাড়িতে এখন ছোটখাটো একটি ছাগলের খামার বললেই চলে। যেখান থেকে তাঁর প্রত্যেক বছরে প্রায় ইনকাম ৮০ হাজার টাকা।

বাসন্তী ও সাহেরার মতো আমাদের আশেপাশে অনেক মানুষ রয়েছে। যাদের দিকে একটু সহযোগিতার হাত বাড়ালেই তারা ঘুরে দাঁড়াতে পারেন। একটু সহযোগিতায় একটি পরিবার সমাজে একটি পরিচয় দাঁড়াতে পারে। সাধুবাদ জানাই একটি বাড়ি একটি খামার ও উপজেলা পরিষদকে।

happy wheels 2

Comments