কবিতা ও আলপনায় একুশের চেতনাকে ধারণ
আটপাড়া, নেত্রকোনা থেকে আ: হালিম
আমাদের চারদিকে বিদেশি সংস্কৃতির র্চচার উদ্দীপনা। চোখ ধাঁধানো চাকচিক্যে, দ্রুততর জীবন যাপনের অভ্যস্ততায় আমরা হারিয়ে ফেলছি আমাদের নিজস্ব অস্তিত্ব এবং সংস্কৃতিকে। সংষ্কৃতি হারিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে বিকৃত হচ্ছে আমাদের ইতিহাস। যুব সমাজ তাদের নিজেদেরকে যুক্ত করছে নানা বিক্ষিপ্ত পথে। বিক্ষিপ্ত পথে সাথে সাথে যুব সমাজের কর্মকান্ডও হচ্ছে বিক্ষিপ্ত। সাথে সাথে ঘটছে নানান অসঙ্গতি এবং বিশৃঙ্খল ঘটনা। চারদিকের ঘটমান অসঙ্গতির ঘটনাগুলো আমাদের প্রায়শই ভাবিয়ে তোলে। কোথায় দাঁড়িয়ে আছি? আর এই চলমান পথপরিক্রমায় কোথায় এসে দাড়াঁব আমরা? এতো এতো অসঙ্গতি থেকে কিভাবে আমাদের মুক্তি হবে?
একুশের চেতনায় উদ্ভাসিত আটপাড়া শিক্ষা, সংস্কৃতি ও প্রাণ বৈচিত্র্য রক্ষা কমিটি, আটপাড়া যুবসমাজ ও উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে যুব সমাজ এবং শিক্ষার্থীদেরকে সংস্কৃতি চর্চা এবং কালজয়ী ইতিহাস ধারনে উৎসাহ প্রদান করতে আটপাড়া উপজেলার ২৫ টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে মহান শহীন দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে আধা কিলোমিটার আলপনা আঁকা, প্রভাত ফেরী, পুষ্পস্তবক অপর্ণ, কবিতা আবৃত্তি, পুরস্কার বিতরণ আয়োজন করে গত ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭।
আটপাড়া শিক্ষা, সংস্কৃতি ও প্রাণ বৈচিত্র্য রক্ষা কমিটির উদ্যোগে আঁকা আলপনা দেখতে সকাল থেকেই ভিড় করে আটপাড়ার সর্বস্তরের মানুষ। আটপাড়ার শিক্ষার্থীদের কাছে ছিল রাস্তায় আলপনা আঁকা একটি নতুন বিষয়। “আমি জন্মেছি বাংলায়, আমি বাংলায় কথা বলি। আমিতো এসেছি কৈবর্তের বিদ্রোহী গ্রাম থেকে।” কবি সৈয়দ সামছুল হকের পরিচয় কবিতা থেকে গর্বের সাথে আবৃত্তি করছিল তেলিগাতি বিএনএইচকে উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী খালেক সাইফুল্লাহ। ‘তোমাকে পাবার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতাটি আবৃত্তি করছিল দূর্গাশ্রম উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর আনোয়ার হোসেন ও ফারজানা আক্তার মিমি ও আটপাড়া ডিগ্রি কলেজের টুম্পা আক্তার।
বিভিন্ন ধরনের প্রতিযোগিতা এবং প্রতিযোগিতা পরবর্তী পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা চেযারম্যান খায়রুল ইসলাম, বিশেষ অতিথি ছিলেন জিল্লুর রহমান আনাম ও সভাপতির দায়িত পালন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হেলেনা পারভীন।
দীর্ঘদিন ধরেই আটপাড়ায় সাংস্কৃতিক কোন ধরনের কার্যক্রম ছিল না। অনেকটাই ঝিমিয়ে পড়েছে এই এলাকার সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড। ভবিষ্যৎ প্রজন্ম সৃজনশীল মানসিকতায় গড়ে তোলার জন্য কোন বিনোদন মূলক অনুষ্ঠানের সাথে যুক্ত হতে পারছেনা। সেই সাংস্কৃতিক খরা কাটানোর এক শুভ সূচনা হলো ২১ ফেব্রুয়ারি’র দিনব্যাপী প্রোগ্রামের মধ্য দিয়ে।