দুর্যোগ আশ্রয় কেন্দ্রগুলো নারীবান্ধব করতে হবে
শ্যামনগর, সাতক্ষীরা থেকে মফিজুর রহমান
সাতক্ষীরার শ্যামনগরে দুর্যোগ আশ্রয় কেন্দ্রগুলো নারীবান্ধব করতে হবে। আজ শ্যামনগরের প্রেসক্লাবে উপজেলা জনসংগঠন সমন্বয় কেন্দ্র, সুন্দরবন স্টুডেন্ট সলিডারিটি টিম, গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠী যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এমন দাবি করা হয়।
আইলাদুর্গত পদ্মপুকুর ইউনিয়নের বাসিন্দা সেলিনা বেগমের পাঠ করা লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, প্রাকৃতিক দুর্যোগে সর্বাধিক ঝুঁকিপূর্ণ শ্যামনগর উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে চার লক্ষাধিক মানুষের বসবাস। সাইক্লোন, ঘূর্ণিঝড়, লবণাক্ততা, অপরিকল্পিত চিংড়িচাষ, কৃষি জমির অপরিকল্পিত ব্যবহার, অপরিকল্পিত বাঁধ নির্মাণ, সুপেয় খাবার পানির অভাব এখানকার নিত্যদিনের সমস্যা। দুঃখজনক হলেও সত্য, চার লক্ষাধিক মানুষের জন্য এখানে মাত্র ৫৬টি দুর্যোগ আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে। কিন্তু নানা অব্যবস্থাপনার কারণে দুর্যোগকালীন সময়ে আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে ঠাই নেওয়া নারী, শিশু ও প্রবীণদের জীবনে শুরু হয় অন্য এক দুর্যোগ।
আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে নারী-পুরুষ সবাইকে এক ঘরের ভেতর থাকতে হয়। একই পায়খানা ব্যবহারে নারীরা পড়ে বিব্রতকর অবস্থায়। এছাড়া আশ্রয়কেন্দ্রে নারীদের জন্য কোন আলাদা থাকার ব্যবস্থা না থাকায় মাসিক ঋতুকালীন সময়ে অবর্ণনীয় দুর্ভোগে পড়তে হয় তাদের। যা পরবর্তীতে নানা রোগ-শোকের জন্ম দেয়। রাতে নারী ও শিশুদের সমস্যার শেষ থাকে না। সম্ভ্রম হারানোর ভয়ে ভীত সন্ত্রস্ত থাকতে হয় নারীদের।
সংবাদ সম্মেলনে আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে নারী-পুরুষের আলাদা থাকা, খাওয়া, টয়লেট ও গোসলের ব্যবস্থা করা, পুরাতন আশ্রয় কেন্দ্রগুলো সংস্কার, সুপেয় পানি সরবরাহ, প্রতিবন্ধী ও বৃদ্ধদের জন্য র্যাম সিড়ি, প্রত্যেকটি আশ্রয়কেন্দ্রে অন্তত একটি করে হুইল চেয়ার ও ফাস্ট এইড বক্স সংরক্ষণ, সাইরেণের ব্যবস্থা, সংযোগ সড়কগুলো মজবুতকরণ ও সোলার সিস্টেম স্থাপনের দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা জনসংগঠন সমন্বয় কেন্দ্রের সভাপতি শেখ সিরাজুল ইসলাম, সুন্দরবন স্টুডেন্ট সলিডারিটি টিমের সভাপতি মারুফ হোসেন মিলন, সাধারণ সম্পাদক আল-ইমরান, বনজীবী নারী সংগঠনের নেত্রী শেফালী বেগম, রেহানা নাসরিন, আব্দুল হাকিম গাজী, বারসিক কর্মকর্তা মফিজুর রহমান প্রমুখ।