মায়ের অনুপ্রেরণায় তৈরি ছোট্ট ছাদ বাগান
সাতক্ষীরা থেকে এস. এম. নাহিদ হাসান
প্রকৃতিকে ভালবাসেন বলেই হয়তো প্রকৃতির অন্যতম উপাদান গাছের প্রতি তাদের এতো ভালবাসা। গ্রামের রাস্তার দু’ধারে অযত্নে বেড়ে উঠা বিভিন্ন প্রজাতির গাছ আমাদের চোখে পড়ে। সেই গাছগুলোকে অনেকটা আমরা অবহেলার চোখেই দেখি। আর এই গাছগুলো যেখানে দেখতে পান সেখান থেকে এনে টবে লাগিয়ে যত্নে বড় করে চলেছেন তানভিরের পরিবার। ক্যাকটাস জাতীয় গাছগুলোই বেশি আছে তাদের ছোট্ট ছাদ বাগানে।
প্রায় ৫২ রকমের গাছ আছে তাদের এই বাগানে। আনেক জানা অজানা গাছ দেখা যায় এখানে। ঔষধি গাছ, ফুল গাছ এবং ফল গাছ আছে বাগানে। ক্যাকটাস গাছগুলোর মধ্যে রয়েছে ফনি মনসা, ব্যারেল, পাতা বাহার, কালাঞ্চো টেমেনটোসা, রেট টেইল, ঘৃত কাঞ্চন, স্কাইরাস, লালপাতা, নাইট কুইন প্রভৃতি। এছাড়াও এলোভেরা, চন্দ্রমল্লিকা, ফার্ন, অপরাজিতা, কলাবতি, টাইম ফুল, রংগন, চামেলী, করমচা, মে ফ্লাওয়ার, গোলাপ, নয়নতারা, জলপাই, কমলা লেবু, জামরুল সহ আরো অনেক গাছের দেখা মেলবে তানভির ইসলামের ছোট্ট ছাদ বাগানে। তালা সদর ইউনিয়নের বাসিন্দা তানভির ইসলাম তার মায়ের অনুপ্রেরণায় তৈরি করেছেন এই ছোট্ট ছাদ বাগান।
তানভিরের সাথে কথা বলে জানা যায়, তাদের নতুন বাড়িটি তৈরি হওয়ার পর তার মা এর উৎসাহে ছাদ বাগান তৈরি করার উদ্যোগ নিয়ে থাকে। ২-৩ বছর ধরে তারা পরিকল্পিত ভাবে ছাদ বাগান তৈরি করেছেন। এখন চলছে এই বাগানকে সমৃদ্ধ করার কাজ। তানভির বলেন, “আমি ছোটবেলা থেকেই দেখে এসেছি আমার মায়ের গাছের প্রতি ভালবাসা। মা রাস্তায় কিংবা যেখানেই কোন পছন্দের গাছ দেখতেন তুলে এনে বাড়ির আঙ্গিনায় লাগাতেন। আমি যখন সময় পেতাম গাছে পানি দিতাম আর পরিচর্যা করতাম। আর আস্তে আস্তে আমিও গাছকে ভালবেসে ফেলেছি। এখন মায়ের মত যেখানেই ক্যাকটাস জাতীয় গাছ দেখি এনে ছাদের টবে রোপণ করি। এখন আমি আর আমার মা দুজনে গাছগুলোর পরিচর্যা ও দেখাশুনা করি।” তিনি আরো বলেন, “আসলে ক্যাকটাস জাতীয় অধিকংশ গাছের নামই অজানা। বিভিন্ন বই পত্র, ইন্টারনেট ঘেঁটে এর নাম বের করতে হয়। কিন্তু সব গুলোর নাম পাওয়াও যায় না।” এই বাগান তার আসল রূপ দেখা দেয় বর্ষার সময়। যেহেতু সাধারণ তেমন কোন ফুল গাছ এখানে নেই সেহেতু এখন শীতে বাগানটা কিছুটা সাদামাঠা।
তার এই ছাদ বাগান দেখতে অনেকে প্রতিবেশী আসেন। এই ছোট্ট বাগান দেখে তাদের অনেক প্রতিবেশীরাও ছাদ বাগান করার প্রতি আগ্রহী হয়ে বাগান কারার কাজ শুরু করে দিয়েছেন। তারা এই বাগান থেকে গাছ নিয়ে তাদের বাড়িতে রোপণ করেন। তানভিরও কিছু গাছ তারা বিভিন্ন পরিচিত জনদের কাছ থেকে সংগ্রহ করার চেষ্টা করে। তিনি ভবিষ্যতে তাদের ছোট্ট বাগানকে ভিন্ন ভিন্ন বাগানে রূপ দিতে চান। যেখানে ফলজ, বনজ, ঔষধি গাছের আলাদা বাগান থাকবে। সেই সাথে প্রতিবেশীদের মাঝে তার বাগানের গাছ বিতরণ করে বাগান তৈরিতে উৎসাহ যোগাবেন।