তিল চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন ভাঙ্গুড়ার কৃষকেরা
মো. মনিরুজ্জামান ফারুক,ভাঙ্গুড়া (পাবনা) থেকে
শস্য ভান্ডারখ্যাত চলনবিলের এ উপজেলায় বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে এক সময় তিলের আবাদ করা হতো। তিলের তেলের চাহিদারও কমতি ছিল না। এখন নানা কারণে দিন, দিন তিল চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন এখানকার কৃষকেরা। ফলে পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলায় আশংকাজনকভাবে কমছে তিলের আবাদ।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গতবছর এ উপজেলায় তিলের আবাদ করা হয়েছিল ১৩০ হেক্টর জমিতে। আর চলতি মৌসুমে কমে তা দাঁড়িয়েছে মাত্র ১০০ হেক্টরে। কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ১ বিঘা জমিতে তিল চাষ করলে ৪/৫ মণ ফলন পাওয়া যায়। বর্তমানে মণ প্রতি তিলের বাজার দর ১৮০০ টাকা থেকে ২০০০ টাকা পর্যন্ত। আর প্রতি বিঘা তিল উৎপাদনে কৃষকের খরচ হয় প্রায় ২৮০০ থেকে ৩০০০ হাজার টাকা পর্যন্ত। যাতে করে কৃষকেরা লাভের মুখ দেখতে পায় না ।
তাছাড়া বাজারে এখন আর আগের মতো তিলের তেলের চাহিদাও নেই। তিলের তেলের পরিবর্তে মানুষ সরিষা ও সয়াবিন তেল ব্যবহারে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন। কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বিগত বছরগুলোতে পাটের নায্য মূল্য পাওয়ায় পাটচাষ ও বিদেশী জাতের সবুজ ঘাসের (জাম্বু/গ্যামা) আবাদ করছেন তারা। তাছাড়া এ অঞ্চলটি দেশের প্রধান দুগ্ধ উৎপাদন এলাকা হওয়ায় এখানে সবুজ ঘাসের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।
চলনবিলাঞ্চলের এ উপজেলায় বন্যা পরবর্তী মৌসুমে জমিতে একবার খেসারি বুনার পর সবুজ ঘাসের আবাদ করা হয়। এটি একবার বুনে জমিতে বন্যার পানি আসা পর্যন্ত ৪/৫ বার কাটা যায়। কৃষকেরা বন্যার সময় গবাদি পশুকে ধানের খড় এবং অন্যসময় সবুজ ঘাস হিসেবে জাম্বুঘাস খাইয়ে থাকেন। উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের বেশ কয়েকজন কৃষকের সাথে কথা বললে তারা জানান, তিল চাষে কৃষকেরা লাভের মুখ দেখতে পায় না । তাছাড়া এলাকায় সবুজ ঘাসের আবাদের ফলে এখানে তিলের আবাদ কমতে শুরু করেছে। এ ব্যাপারে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সুস্থির চন্দ সরকার বলেন, “অন্যান্য ফসলের তুলনায় তিল চাষ অলাভজনক হওয়ায় আবাদ কম হয়েছে। তবে ডাল,তেল ও মসলা জাতীয় ফসলের আবাদ বৃদ্ধির লক্ষ্যে কৃষক উদ্বুদ্ধকরণে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।”