গো খাদ্য সংকট: আমন-আউশ থাকলে এমন বিপদ হতো না
মানিকগঞ্জ থেকে বিমল চন্দ্র রায়
এক আঁটি খড় সাইজ ভেদে ৮/১০/১৫ টাকা বিক্রি চলছে মানিকগঞ্জের সদর, সিংগাইর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে। দিনাজপুরসহ উত্তরের জেলা থেকে ট্রাক ভাড়া করে খড় আনতে হয়। খড়ের ব্যাপক চাহিদার কারণে সেখানেও খড়ের দাম বেশি। তাছাড়া আনতে আটি প্রতি ৩ বা ৪ টাকা খরচ পড়ে। এক বোঝা পরিমাণ খড়ের দাম হাজার টাকার উপর।’
উপরোক্ত বক্তব্যটি সোলন্ডি গ্রামের খড় ব্যবসায়ী মো. মবিনের। তিনি আরও বলেন, ‘চলতি বছর বন্যার পর রোপা আমন চাষ করেনি আমাদের এলাকার কৃষক। তাছাড়া বোরো ধানে খড় হয় না। ফলে সবসময় গো খাদ্যের সমস্যা আছে, এ বছর আরও প্রকট।’ কৃষকগণ ৫০/১০০ আটি করে খড় কিনে গরুকে খেতে দেন। পালড়া, সিংগাইর ঘোনাপাড়াসহ বিভিন্ন স্থানে খড় বিক্রি হচ্ছে। কথা হলো বেতিলা এলাকার মোঃ লাল মিয়ার সাথে। তিনি বলেন, ‘৬০০ টাকা খড় কিনেছি ১৫/১৬ দিন যাবে। তবে শুধু খড় খাওয়াই না সাথে কলই, কুড়া, ঘাস খাওয়াই।’
অন্যদিকে এগারশ্রী গ্রামের যার্টোদ্ধ কৃষক বাদলী রায় বলেন, ‘তাদের বাড়িতে ছোট বড় মিলিয়ে পাঁচটি আছে, আগের দিনে চকে আমন আউশ, খেসারি কলই চাষ হতো কত খড়, কলইয়ের ভূষি ছিল। গরুর খাওনের কোন চিন্তা ছিল না কিন্তু এখন গরু পালন করা কঠিন, ইরি চাষ হয় কলই বোনা হয় না খড় বা ভূমি নেই। কিভাবে গরু পালন করবো এই চিন্তা সবসময় করতে হয় তা ছাড়া আগে জমিতে শ্যামা,হেচি, গইচ্যাসহ নানান জাতের ঘাষ হতো। এখন ঘাস মারার ঔষধ দিয়ে ঘাস মারার হয় তাই ঘাসও পাওয়া যায় না।’ যখন কথা হচ্ছিল তখন তিনি সবুজ কলই ছোট করে কাটছিলেন গরুর জন্য। খেসারি কলইয়ের সবুজ গাছ খড়ের সাথে খাওয়াবেন।
পশ্চিম হাট রড়িয়াল গ্রামের কৃষক মিন্টু বলেন, ‘আগের দিনে খোলা মাঠ বা চক ছিল, ছোলা, খেসারি, মটরের ভূষি ছিল গরুর খাওনের চিন্তা ছিল না কিন্তু এখন কিছুই নাই। তাই সবই কিনতে হচ্ছে।’ এই সমস্যা প্রায় এলাকার সকল গরুর পালনের সাথে যুক্ত কৃষকের।
সকল প্রাণের অধিকার, খাদ্যের অধিকারের সাথে সম্পর্কিত সমস্যা। তাই প্রাকৃতিক উপায়ে সমাধান জরুরি। তা না হলে গো সম্পদ নিরাপদ খাদ্য সংকট সৃষ্টি হবে। তার সাথে সাথে তাদের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে না। আসুন দেশী প্রজাতির ধান চাষ করি, গো খাদ্য নিশ্চিত করি।