প্রাণ ফিরে পেয়েছে ধলেশ্বরী নদী

মানিকগঞ্জ থেকে বিমল রায় ও শাহীনুর রহমান
মানিকগঞ্জের ধলেশ^রী নদী খননের দাবিতে দীর্ঘদীন ধরে বিভিন্ন পরিবেশবাদী ও সামাজিক সংগঠনের পাশাপাশি ভূক্তভোগী স্থানীয় জনগোষ্ঠী আন্দোলন সংগ্রাম করে আসছেন। তাদের দাবি ছিল মৃত প্রায় ধলেশ^রী নদী খনন করে পানির অবাধ প্রবাহ নিশ্চিত করা। তারা স্বপ্ন দেখতেন ধলেশ^রী নদী খনন হলে ফসলের উৎপাদন বাড়বে, জেলায় বৈচিত্র্যময় কৃষি কাজের মাধ্যমে কৃষি সমৃদ্ধ অর্থনীতি গড়ে উঠবে । মৎসজিবী সম্প্রদায় ফিরে পাবেন তাদের পেশা!


তাদের সেই স্বপ্ন ধীরে ধীরে বাস্তবায়ন হচ্ছে। শুরু হয়েছে মৃত্ প্রায় ধলেশ্বরী নদী খননের কাজ। প্রাণ ফিরে পেয়েছে ধলেশ^রী নদী। নদীর প্রাণ রক্ষা করা জরুরি। তাই ধলেশ^রী নদী খননের ফলে পানির প্রবাহ ও দূষণ রোধে জনগোষ্ঠীর মধ্যে জনসেচতনতা তৈরিতে ধলেশ^রী নদী বাচাঁও আন্দোলন ও বারসিক’র উদ্যোগে ধলেশ^রী নদীর তিল্লী মুখ খননের ফলে পানি প্রবাহের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হয় সম্প্রতি। ধলেশ^রী নদী খনন পর্যবেক্ষণ করেন সাংষ্কৃতিক বিল্পবী সংঘ সাবিস’র সভাপতি ও সমাজ কর্মী ইঞ্জিনিয়ার শহিদুল ইসলাম ফারুক , ধলেশ^রী নদী বাঁচাও আন্দোলন কমিটির সদস্য মজিবর রহমান, শিক্ষক আরশেদ আলী মাষ্টার, সমাজ কর্মী ইকবাল খান, পোষ্টার এডওর্য়াড জামান, বারসিক মানিকগঞ্জ আঞ্চলিক সমন্বয়কারি বিমল রায় ও বারসিক কর্মকর্তা গাজী শাহাদাত হোসেন বাদল।


নদী খনন কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করে ইঞ্জিনিয়ার শহিদুল ইসলাম ফারুক বলেন, মানিকগঞ্জ জেলার সাটুরিয়া, মানিকগঞ্জ সদর এবং সিংগাইর উপজেলা উপর দিয়ে ধলেশ^রী নদী প্রবাহিত হয়ে ঢাকার বুড়িগঙ্গায় মিলেছে। এই নদীকে কেন্দ্র করেই ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসার ঘটে। এই নদীর পানি ব্যবহার করেই কৃষকগণ কৃষি কাজে তাদের সেচ কাজ করতেন। জেলে সম্প্রদায় এই নদী থেকেই মাছ সংগ্রহ করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করতেন। কিন্তুু মনুষ্য সৃষ্টি ও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে নদীটি ভরাট হয়ে তার স্বাভাবিক গতিপথ হারায়। সাধারণ মানুষের জীবন জীবিকায় নদী ভরাট হওয়ার প্রভাব পড়ে। দীর্ঘদীন আন্দোলন করার ফলে ধলেশ^রী নদী খনন কাজ শুরু হয় যার মধ্যদিয়ে প্রাণ ফিরে পেয়েছে ধলেশ্বরী নদী।


ধলেশ^রী নদী তীরবর্র্তী কৃষক আব্দুল আজিজ বলেন, ‘আমরাও ধলেশ্বরী নদী রক্ষার জন্য আন্দোলন করেছি। যার ফলে নদীর খনন কাজ শুরু হয়। এখন নদী খননের পর নদী সংরক্ষণে আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। নদী দখল, দূষণে হাত থেকে নদী রক্ষায় আমাদের সকলকে সচেতন হতে হবে।’ বারসিক আঞ্চলিক সমন্বযকারি বিমল রায় বলেন, ‘ ধলেশ্বরী নদী খনের কাজ শুরু করায় সরকারকে ধন্যবাদ জানাই। ধলেশ্বরী নদী খননের ফলে নদী তীরবর্তী মানুষের কষ্ট লাঘব হবে। কৃষকগণ কৃষি কাজে নদীর পানি ব্যবহারের ফলে কৃষকের উৎপাদন খরচ কমে আসবে। কৃষকগণ বৈচিত্রময় ফসল চাষে আগ্রহী হবেন। তাছাড়া জলজ প্রাণীসহ দেশীয় জাতের মাছ বৈচিত্র্য টিকে থাকবে।’


উল্লেখ্য ধলেশ^রী নদী রক্ষায় ২০১৩ সাল থেকে বারসিক অ্যাডভোকেসির মাধ্যমে জনমত তৈরি করা, সভা সেমিনার, মতবিনিময়, মানববন্ধন, স্মারকলিপি প্রদান গণস্বাক্ষর প্রদান ও নদী সম্মেলন কার্যক্রম পরিচালনা করে।

happy wheels 2

Comments