‘পিঁপড়া’ নিজের ওজনের চেয়ে বিশ গুণ বেশি ভার বহনে সক্ষম
মো. মনিরুজ্জামান ফারুক, ভাঙ্গুড়া (পাবনা) থেকে
“পিপীলিকা, পিপীলিকা/ দল-বল ছাড়ি একা/ কোথা যাও/ যাও ভাই বলি/শীতের সঞ্চয় চাই/ খাদ্য খুঁজিতেছি তাই/ ছয় পায়ে পিল পিল চলি-‘ ক্ষুদ্র প্রাণি পিপীলিকা।এটিকে আমাদের গ্রামাঞ্চলে পিঁপড়া হিসেবেই বেশি পরিচিত। এ প্রাণিটি থেকে আমরা পরিশ্রমী হওয়া ও দলবদ্ধভাবে বেঁচে থাকার শিক্ষা লাভ করতে পারি। মানুষ ও পিঁপড়ার মাঝে একটি মিল আছে। আর তা হল উভয়ই খাদ্য মজুত করে রাখে।
মুক্তকোষ বাংলা উইকিপিডিয়া থেকে জানা গেছে, পিঁপড়া বা পিপীলিকা হল ফর্মিসিডি (Formicidae) গোত্রের অর্ন্তগত সামাজিক কীট বা পোকা। পৃথিবীতে প্রায় ১২ হাজার প্রজাতির পিঁপড়া রয়েছে। পিঁপড়া সাধারণত তিন ধরনের হয়ে থাকে। রানী পিঁপড়া, সৈনিক পিঁপড়া ও শ্রমিক পিঁপড়া। পিঁপড়ার জীবনকাল ২৮ বছর। তবে রাণী পিঁপড়া ৩০ বছরেরও অধিক সময় বাঁচতে পারে। রানী পিঁপড়ার পাখা থাকে। পিঁপড়া দল বেঁধে থাকে। একটি পিঁপড়া যে দিক দিয়ে চলে ঠিক তার পিছনে পিছনে চলে অন্যসব পিঁপড়া।
পিঁপড়া চলার পথে এক ধরণের তরল পদার্থ (ফেরোমন) নির্গত করে। ফলে পিছনে থাকা পিঁপড়াগুলো সামনের গুলোকে অনুসরণ করে সহজেই চলতে পারে। পিঁপড়ার কান নেই। মাটির কম্পন থেকেই তারা কানে শোনার কাজ চালায়। অন্যান্য প্রাণির শরীরে ফুসফুস ধাকলেও পিঁপড়ার তা নেই। তাদের দেহের অসংখ্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ছিদ্র দিয়েই শ্বাসপ্রশ্বাস চালায়। পিঁপড়ার ছয়টি পা আছে। সবগুলো পা শরীরের মধ্যবর্তী অংশের সাথে সংযুক্ত থাকে। পিঁপড়া কখনই ঘুমায় না। পিঁপড়ার রয়েছে দুটো পেট। একটিতে নিজের জন্য খাদ্য জমা রাখে। আর অপরটিতে অন্যের জন্য।
পিঁপড়া সাধারণত লাল ও কালো রংয়ের হয়ে থাকে। তবে অনেক স্থানে সবুজ পিঁপড়ার সন্ধানও পাওয়া যায়। পিঁপড়া মাটির নিচে, মাটির ওপরে, ময়লা আর্জনায় ও গাছে বাসা বেঁধে বাস করে। পিঁপড়ার বসবাসের জায়গাকে কলোনি বলা হয়। পিঁপড়া কাঠ ও তৃণ খেয়ে জীবন ধারণ করলেও মিষ্টি জাতীয় খাবার এদের পছন্দ। একটি পিঁপড়া মারা গেলে তখন তার শরীর থেকে এক ধরনের রাসায়নিক পদার্থ নির্গত হওয়ার ফলে অন্যরা সহজেই মৃত পিঁপড়া সম্পর্কে জানতে পারে। আশ্চর্য়ের বিষয় হলো ক্ষুদ্র এ প্রাণিটি তার শরীরের ওজনের চেয়ে ২০ গুণ বেশি ওজনের জিনিস বহন করতে সক্ষম।
ছবি: সংগৃহীত