গ্রামে গ্রামে কৃষক সংগঠন করতে চায় চরবাসী

হরিরামপুর, মানিকগঞ্জ থেকে মুকতার হোসেন
মানিকগঞ্জের হরিরামপুর চরাঞ্চলে স্থানীয় জনসংগঠনের বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে সম্প্রতি। লেছড়াগঞ্জ ইউনিয়নের সেলিমপুর গ্রামে আক্কাস আলীর বাড়িতে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে লেছড়াগঞ্জ চর উন্নয়ন কৃষক সংগঠন, উত্তর পাটগ্রাম নারী উন্নয়ন সংগঠন, সেলিমপুর পদ্মা নারী উন্নয়ন সংগঠন, হরিহরদিয়া যুব টিম, পদ্মা শিক্ষা কেন্দ্রসহ হরিরামপুর চরাঞ্চলের ৫টি জনসংগঠনের প্রতিনিধি ও সদস্যসহ ৬০ জন সদস্য অংশগ্রহণ করেন। কৃষক সংগঠনের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন পদ্মা শিক্ষা কেন্দ্র পরিচালনা কমিটির সদস্য সমাজ সেবক আব্দুর রাজ্জাক।

সম্মেলনে চরের জনসংগঠনের প্রতিনিধিরা আলোচনা সভায় অংশগ্রহণ করেন হাজেরা বেগম, নাজমা বেগম, রিনা কর্মকার, পলি আক্তার, আকলিমা বেগম। এ ছাড়াও শিক্ষা কেন্দ্র পরিচালনা কমিটির সদস্য সমাজ সেবক আব্দুর রাজ্জাক, যুব টিমের সভাপতি রাসেল মিয়া, বারসিক মানিকগঞ্জ আঞ্চলিক সমন্বয়কারী বিমল রায়, প্রোগাম অফিসার মুকতার হোসেন, সত্যরঞ্জন সাহা ও সুবীর সরকারও অংশগ্রহণ করেন।


সম্মেলনে এলাকায় স্থানীয়ভাবে গড়ে উঠা সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিরা জনউদ্যোগে বিগত বছরের বাস্তবায়িত কার্যক্রম, উদ্যোগ, সাফল্য ও সম্ভাবনা এবং আগামী কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরেন। হরিরামপুর চরাঞ্চলের পাটগ্রামচরে প্রথম কৃষক সংগঠন ২০১২ সালে লেছড়াগঞ্জ চরউন্নয়ন কৃষক সংগঠন তৈরি করেন। উক্ত সংগঠনের সভাপতি হাজেরা বেগম সংগঠনের কাজের পদ্ধতি, কৌশল এবং বিভিন্ন উদ্যোগ বাস্তবায়নের ফলাফল তুলে ধরেন।
সমাজ সেবক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘বারসিক হরিরামপুর চরাঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসছে। চরের দুর্যোগ মোকাবেলায় উদ্যোগ গ্রহণ, চরের শিক্ষা কেন্দ্র তৈরির মাধ্যমে জীবনমান উন্নয়ন, কিশোরীদের খেলাধুলাসহ বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়নে সহযোগিতা করে থাকে। প্রতিটি কার্যক্রমে উদ্যোগ গ্রহণসহ বাস্তবায়নে আমরা সম্পৃক্ত থাকি। এলাকায় জনসংগঠন তৈরির মাধ্যমে কার্যক্রম বাস্তবায়ন সহজতর ভূমিকা রাখে।’


কৃষাণী হাজেরা বেগম বলেন, ‘চরে আমরা জন সংগঠনের করার মাধ্যমে সমন্বিত উদ্যোগে পুকুর খনন, বীজ বাড়ি তৈরি, মিশ্র ফসল চাষ, শত বাড়ির উদ্যোগ, নারীদের সেলাই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মসংস্থান তৈরি, বসতবাড়িতে নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনসহ বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রম বাস্তবায়িত করছি।’


তিনি সকল সংগঠনের সদস্যদের প্রতি আহবান জানান কৃষিতে কৃষকের অধিকার আদায় করার ক্ষেত্রে এগিয়ে আসার জন্য। এজন্য প্রয়োজন হলে চরের গ্রামে গ্রামে সংগঠন গড়ে তুলতে হবে বলে তিনি মনে করেন। কারণ সংগঠনের মাধ্যমে আমাদের কৃষি, নারী অধিকার, সরকারি সেবাসহ বিভিন্ন জায়গায় আমাদের প্রবেশাধিকার বৃদ্ধি করতে হবে। তাহলে চরকে সমৃদ্ধশালী করতে পারবেন কৃষকরা। সম্মেলনে চরের প্রতিটি সংগঠনের অগ্রগতি বাস্তবায়িত কার্যক্রমগুলো নিজেরা ব্যানারে কাজের চিত্র সহকারে উপস্থাপন করেন।


সম্মেলনে এগারো সদস্য বিশিষ্ট একটি চর কৃষক কমিটি গঠিত হয়, যার সভাপতি নির্বাচিত হয় লেছড়াগঞ্জ চর উন্নয়ন কৃষক সংগঠদড়নের সভাপতি হাজেরা বেগম।

happy wheels 2

Comments