হরিরামপুরে বিলুপ্তপ্রায় গুজি তিলের চাষে কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে
সত্যরঞ্জন সাহা হরিরামপুর, মানিকগঞ্জ
হরিরামপুরের বাহিরচরের কৃষকদের উদ্যোগে ও বারসিক’র সহযোগিতায় সম্প্রতি গুজি তিলের মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত হয়েছে হরিরামপুরে। জাতবৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও সম্প্রসারণে উদ্দেশ্য নিয়ে কৃষকরা এ গুজি তিল চাষ করছেন বলে জানা যায়। মাঠ দিবসে কৃষকরা বিলুপ্ত প্রায় গুজিতিল বীজ বিনিময়ও করেন।
মাঠ দিবসে কৃষক গবেষক শহীদ বিশ^াস বলেন, ‘আমরা হারানো সম্পদ গুজি তিল বারসিক এর সহযোগিতায় ফিরিয়ে পেয়েছি। আমি বলবো টিয়া পাখির খাবার গুজি তিল আবার ফিরে এসেছে। টিয়া পাখি গুজি তিল খুব ভালো খায়। এখন টিয়া পাখিও চোখে পড়ে কম। গুজি তিল চাষের মাধ্যমে আমাদের দেশে পাখিসহ প্রাণবৈচিত্র্য বাঁচিয়ে রাখতে পারি।’ তিনি আরও বলেন, গুজি তিল চাষে কোন খরচ লাগে না। গুজি তিল সবমাটিতেই হয়। এ শস্য চাষে জমির আগাছা বাছাই করা লাগে না। পোকার আক্রমণ কম হয়। গুজি তিলে মৌমাছি পরাগায়ন করে বেশি।’
বাহিরচর কৃষক ইয়াসমিন বেগম বলেন, ‘আগে নদীর তীরে গুজি তিল হতো। বর্ষার পানি গেলে মাটিতে গুজি তিলের বীজ ছিটিয়ে দিতাম। কোনো যতœ নাই, এমনেই হতো। তবে শীতে ফুল ফোটার সময় খুব সুন্দর দেখায়। ফলে উপকারী মৌমাছি বসে পরাগায়নে সহায়ক হয়। গুজি তিলে পোকা লাগে না, সার বিষ লাগে না। ফলে কোনো খরচ ছাড়া যে কোনো তিলে চেয়ে গুজি তিলের ফলন বেশি হয়।’
কৃষকরা জানান, তাদের এলাকা থেকে গুজি তিল হারিয়ে গেলে বারসিক সহযোগিতায় এই গুজি তিলের বীজ পাওয়ায় তাদের খুবই উপকার হলো। কারণ নদীর তীরে যেখানে অন্য কোন ফসল হয় না সেখানে গুজি তিল ভালো হয়। গুজি তিল পতিত জায়গায় চাষাবাদে সহায়ক হবে। গুজি তিলের বীজ অন্যান্য কৃষকগণ নেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করছেন। এ বীজ কৃষকদের কাছ থেকে আর হারাবে না। কৃষক পর্যায়ে বীজ বিনিময় ও সম্প্রসারণের মাধ্যমে প্রয়োজন অনুযায়ী সংরক্ষণ করতে পারবেন।