পাহাড়ি ঢলের কবল থেকে হাওর ও সীমান্ত এলাকার ফসল রক্ষায় ১৭টি সুপারিশ

নেত্রকোনা থেকে শংকর ম্রং
নেত্রকোনা জেলা জনসংগঠন সমন্বয় কমিটি ও জেলা শিক্ষা, সংস্কৃতি, পরিবেশ ও বৈচিত্র্য রক্ষা কমিটির উদ্যোগে সম্প্রতি নেত্রকোনা পাবলিক লাইব্রেরির হল রুমে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল ‘পাহাড়ী ঢলের কবল থেকে ফসল রক্ষায় জনসংলাপ।’


সংলাপে সহযোগি অধ্যাপক নাজমুল কবীর এর সঞ্চালনায় চন্দ্রনাথ ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ আনোয়ার হাসানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ নেত্রকোনা জেলা শাখার সভাপতি এ্যাডভোকেট আমিরুল ইসলাম। এছাড়াও হাওর, সীমান্ত ও সমতল এলাকার কৃষক-কৃষাণী, যুব প্রতিনিধি, শিক্ষক, গবেষক, গণমাধ্যম কর্মী, লেখক, আইনজীবী, সংস্কৃতিকর্মী, সমাজ সেবক এবং বারসিক নেত্রকোনা অঞ্চলের কর্মীসহ মোট ৪৪ জন অংশগ্রহণ করেন।


জনসংলাপে হাওর ও সীমান্ত এলকার কৃষক-কৃষাণীরা এবং হাওর ও সীমান্ত এলাকার সাথে যুক্ত অংশগ্রহণকারীগণ পাহাড়ি ঢলের ফলে সৃষ্ট বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরেন। অংশগ্রহণকারী বিশেষজ্ঞগণ, প্রধান অতিথি ও কৃষক-কৃষানীগণ জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট দূর্যোগ ও পাহাড়ী ঢলের কবল থেকে কৃষি ফসল ও জানমাল রক্ষায় ১৭টি সুপারিশ তুলে ধরেন। সুপারিশগুলো নিম্নরূপ


১. বোরো ধান রোপণের আগে মাননীয় সাংসদ, জেলা প্রশাসক এর উপস্থিতিতে এ ধরণের সংলাপ আয়োজন করা, যাতে প্রস্তাবিত সুপারিশগুলো যথাসময়ে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো যায়।
২. হাওরের উঁচু জায়গাগুলোতে আগাম বীজতলা তৈরি করা এবং পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথে জমিতে ধান রোপণ করে আগাম বন্যা মোকাবেলা করা।
৩. স্থানীয় ও ব্রি উদ্ভাবিত আগান ধানের জাতগুলো চাষ করা। এতে ফলন কম হলেও আগাম বন্যায় ফসলের ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষা পাবে।
৪. হাওর ও সীমান্ত এলাকার পাহাড়ি নদী, ছড়া, খাল, বিল ও ডোবাগুলো খনন করা এবং দখলীগুলো উদ্ধার করে পানি নিষ্কাশন স্বাভাবিক করা।
৫. ব্রি এর বিজ্ঞানী ও গবেষকগণের হাওরে গিয়ে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করা এবং কৃষকদের নিকট আগাম জাতগুলেঅ পৌছে দেয়া।
৬. পরিকল্পিতভাবে হাওর ও সীমান্ত এলাকার ঝুঁকিপূর্ণ স্খানগুলোতে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করা।
৭. পানি উন্নয়ন বোর্ডে হাওর বিশেষজ্ঞ নিয়োগ করা।
৯. হাওরে মাছের প্রজননের সময় কমপক্ষে দুই মাস মাছ ধরা নিষিদ্ধ করা।
১০. হাওরে অবৈধভাবে (বিষাক্ত পদার্থ ব্যবহার করে) মাছ ধরা বন্ধে এবং হাওরের প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য অক্ষুন্ন রাখতে হাওর পুলিশিং চালু করা।
১১. হাওরের বাঁধে পানি সহনশীল ঘাস ও গাছ রোপণ করা।
১২. হাওরে বজ্রপাত মোকাবেলায় বৈজ্ঞানিক উদ্যোগ গ্রহণ।
১৩. হাওরে উদ্ভিদ ও প্রাণী বিশেষজ্ঞ নিয়োগ করা।
১৪. পলিথিন ও কারেন্ট জাল উৎপাদন ও ব্যবহার নিষিদ্ধ করা।
১৫. বিল ও হাওর লিজ গ্রহীতারা যাতে বিল ও হাওরের প্রাকৃতিক কাঠামোর কোন পরিবর্তন করতে না পারে সেদিকে নজর দেয়া (প্রয়োজনে নীতিমালা সংশোধন করা)।
১৬. সংলাপে উঠে আসা সুপারিশগুলো সমন্বয় করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে প্রেরণের উদ্যোগ গ্রহণ করা।
১৭. সীমান্ত ও হাওর এলাকার সমস্যা সমাধানে আন্তঃরাষ্ট্রীক সংলাপের আয়োজন করা।

happy wheels 2

Comments