গ্রামীণ স্বাস্থ্য সুরক্ষায় যুব সমাজের উদ্যোগ
মানিকগঞ্জ সিংগাইর থেকে রিনা আক্তার
যুব সমাজকে বলা হয় একটি দেশের উৎপাদন ও সম্ভাবনাময় বড় শক্তি। একটি সমাজের সামগ্রিক অগ্রগতির পর্যালোচনা করলে দেখা যায় সমাজে বসবাসকারি প্রবীণদের পথনির্দেশনা আর যুব সমাজের শক্তি এই দুইয়ের সমন্বয়েই তৈরি হয়। তাই বলা যায় যুব সমাজই একটি দেশ ও সমাজের আর্থ সামাজিক উন্নয়নের মূল চালিকাশক্তি। তাই সমাজ পরিবর্তনে যুব সমাজের সম্পৃক্ততা ছাড়া সামগ্রিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। এই প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ অত্যন্ত সম্ভাবনাময় একটি দেশ যেখানে বর্তমানে বাংলাদেশের মোট জনগোষ্ঠির প্রায় এক তৃতীয়াংশই হচ্ছে যুব সমাজ। এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে সিংগাইর এলাকার মানুেেষর আর্থ সামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে বারসিক বেশ কয়েক বছর ধরে এলাকার যুব সমাজ ও যুব সংগঠনগুলোকে নানা প্রক্রিয়ায় সহযোগিতা করে আসছে। এরই ধারবাহিকতায় গত ২৮ জুলাই ২০২২, মানব সেবা ফাউন্ডেশন ও বারসিক’র উদ্যোগে মানিকগঞ্জ জেলার সিংগাইর সরকারি ডিগ্রী কলেজের সার্বিক সহযোগিতায় কলেজ প্রাঙ্গনে কলেজের শিক্ষার্থীদের রক্তের গ্রুপ নির্ণয় ও স্বাস্থ্য সচেতনতা বিষয়ক এক স্বাস্থ্য ক্যাম্পের আয়োজন করা হয়, যা উদ্বোধন করেন অত্র কলেজের অধ্যক্ষ নুরুউদ্দীন।
২৮ জুলাই আয়োজিত স্বাস্থ্য ক্যাম্পের মাধ্যমে মোট ৭৪ জন শিক্ষার্থীর রক্তের গ্রুপ নির্ণয় করা হয় যাদের মধ্যে ১৭ জন নারী ও ৫৭ জন পুরুষ। সেই সাথে ক্যাম্প অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সচেতনাতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে স্বাস্থ্য বিষয়ক তথ্য ও পরামর্শ প্রদান করা হয়। আয়োজিত স্বাস্থ্য ক্যাম্পের মাধ্যমে যে ৭৪ জন শিক্ষার্থীর রক্তের গ্রুপ নির্ণয় করা হয় এবং সকলের পরিচয়সহ একটি তালিকা তৈরি করে তা কলেজসহ আশেপাশের গ্রামের মানুষকে অবহিত করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়। যেন গ্রামের কোন অসহায় লোকের প্রয়োজনে খুব সহজেই এসব শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা পেতে পারে। এই বিষয়ে অংশগ্রহণকারি শিক্ষার্থীরা রক্ত দানসহ প্রয়োজনীয় সহযোগিতার কথা তুলে ধরেন। স্বাস্থ্য ক্যাম্প আয়োজনে কারিগরি সহযোগিতা করেন শেফা ডায়াগনেস্টিক প্রতিষ্ঠানের এনামুল হক ও স্বুবর্ণা আক্তার।
আয়োজিত স্বাস্থ্য ক্যাম্প বিষয়ে নুরউদ্দীন বলেন, ‘প্রতিটি মানুষের রক্তের গ্রুপ জানা থাকা দরকার এবং এটি বিভিন্ন ক্ষেত্রেই প্রয়োজনীয়।’ মানব সেবা ফাউন্ডেশনের শাহাদাৎ সন্দীপন সায়েম বলেন, ‘যুব সমাজকে এ ধরনের সামাজিক উন্নয়নমুলক কর্মকান্ডে এগিয়ে আসতে হবে।’ বারসিক’র রিনা আক্তার বলেন, অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় চিকিৎসা নিতে গিয়ে যদি কখনো রক্তের প্রয়োজন পড়ে তবে গ্রামের মানুষরা অনেক সময় অসহায় বোধ করে। তারা জানেনা কোথায় গেলে বা কিভাবে এটি সংগ্রহ করা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে যদি সে জানে তাদের গ্রামের কারো কাছ থেকে সহজেই সে এটি সংগ্রহ করতে পারে তবে সে অনেকটা সাহস পাবে, অসহায়বোধ করবে না। বারসিক সবসময় চেষ্টা করে আসছে স্থানীয় সমস্যা সমাধানে আমাদের নিজস্ব যে সম্পদ ও সক্ষমতাগুলো আছে সেগুলোকে কাজে লাগাতে, এলাকার মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় এলাকার যুব সমাজ গুরুত্বপুর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।’