প্রতি ইঞ্চি মাটি নিরাপদ সবজির ঘাঁটি

রাজশাহী থেকে ব্রজেন্দ্র নাথ
রাজশাহী জেলার পবা উপজেলার দর্শনপাড়া ইউনিয়নের নদী কান্দায় খাস জমিতে বসবাস করে এই গ্রামীণ নারী মোসা পারুল বেগম (৪০) স্বামী মোঃ সবুজ আলী। বসত ভিটার পরিমান ৩ কাঠা ও পরিবারের সদস্য সংখ্যা ২জন। নিজস্ব কোন জমি নেই সিরাাজগঞ্জ থেকে শহরে কাজ করতে আসা মোঃ সবুজ আলীর সঙ্গে মোসা পারুল বেগমের বিয়ে হয়। শহরে ঘর ভাড়া করে থাকতেন। তার স্বামী সবুজ আলী শহরের আশে পাশের গ্রামগুলোতে ঘরের টিনের ছাউনির কাজ করতেন। তবে আগের মত কাজ না থাকায় শহরে ঘর ভাড়া এবং সংসার চালানো সবুজ আলীর পক্ষে খুব কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। বাধ্য হয়ে গ্রামে ফিরতে হলো মোসা পারুল বেগমকে।


পারুল বেগম শহর থেকে ফিরে তাঁর বাবার বাড়ি থাকতে শুরু করেন। সংসার চালানোর জন্য তিনি বাড়ির চারপাশে সবজি ও ফলজ গাছ রোপণ করেছেন। তার সাথে বাড়িতে প্রাণীসম্পদ পালন করেন। তাঁর ছোট বড়মুরগী আছে ৩০টি, ভেঁড়ি ৩টি। তাঁর সবজি বাগানে পুঁই, কুমড়া, মিষ্টি কুমড়া, পেঁপে, কলা, দেশী শিম, কটরা শিম, তরই, সজিনা ও ঔল ইত্যাদি রয়েছে। ফলের মধ্যে রয়েছে নারিকেল, ডালিম, পেয়ারা, কলা, পেঁপে, বেদানা, বরই, আম, জলপাই ইত্যাদি।


পারুল বেগম বলেন, ‘অনেক সময় এই সবজি বিক্রি করেই মাছ ও মাংস কিনে থাকি। পুষ্টির চাহিদা পূরণে এই শাকসবজিগুলো বড় রকমের ভূমিকা পালন করে থাকে। আমার সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে যে বিষয়টা সেটা হচ্ছে আমি যে সবজিগুলো বাড়ির পাশে চাষ করি সেগুলোতে কোন প্রকার রাসায়নিক সার ব্যবহার করা হয় না। আমি সবজি চাষ ও পশু পালনের মাধ্যমে আমার ভাগ্য পরিবর্তনের চেষ্টা করছি। আমি চেষ্টা করে যাচ্ছি আমার প্রতিটি ইঞ্চির জমি সর্বোচ্চ ব্যবহার করার।’


পারুল বেগম আরও বলেন, ‘আমি মনে করি বাংলাদেশের প্রতিটি পরিবারের মানুষ তাদের নিজ নিজ বাড়িতে যার যেমন জায়গা আছে সে অনুযায়ী সবজি চাষ করে খেতে পারলে অসুখ বিসুখও কম হবে। এতে করে নিজে ভালো থাকা যায় এবং অন্যদেরকেও ভালো রাখার চেষ্টা করা যায়।’

happy wheels 2

Comments