তীব্র তাপদাহে বিপর্যস্ত জনজীবন

রাজশাহী থেকে সুমন আলী

তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। স্বাভাবিক কাজ ব্যাঘাত ঘটছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করতে হচ্ছে। গ্রামীণ জনজীবনে অভাব-অনটনে কাটছে। এই তাপপ্রবাহ মানুষ, গরু, ছাগল, পশু পাখি, গাছপালা,মাঠের ফসল, শাকসবজি, ধান সব কিছুর ওপর বিরূপ প্রভাব তৈরি করেছে।

রাজশাহীতে বেশ কয়েক মাস হলো বৃষ্টি নেই। আকাশের বৃষ্টির অপেক্ষায় কৃষাণ, কৃষাণিসহ আবাল, বৃদ্ধ ও বণিতা সকলেই। চাতক পাখির ন্যায় তারা বৃষ্টির জন্য অপেক্ষমান। গ্রামের মানুষজন বাড়ি ঘরে থাকতে পারছে না। কারণ গ্রামের বেশির ভাগই বাড়ি টিনের। তাই তারা সকাল, দুপুরে গাছপালার ছায়াতলে আশ্রয় নিচ্ছেন। তারা সকালের খাবার,দুপুরের খাবারসহ যাবতীয় যে কাজগুলো বাসায় বসে করতেন সেগুলোও গাছপালার ছায়া তলেই করছেন। এই তাপদাহে পুকুর,নদীনালা, খাড়ি সব শুকিয়ে গিয়েছে। সেই সাথে টিউবওয়েল, মটর, ডিপ কোন কিছুতেই পানি উঠছে না।

অন্যদিকে তাপদাহের কারণে মানুষ ডায়রিয়া, আমাশয়, ঘামাচিসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে; বিশেষ করে শিশু ও বয়স্ক মানুষেরা। গ্রামের মানুষ পানর জন্য আদিকাল থেকে প্রচলিত পদ্ধতি ব্যাঙের বিয়ে দিচ্ছে ও বাড়ি বাড়ি গিয়ে কাদামাটিতে গড়াগড়ি করছে, আর বলছে ‘আল্লাহ মেঘ দে, পানি দে, ছায়া দে রে তুই’।

পবা উপজেলার বড়গাছী ইউনিয়নের জয়কৃষ্ণপুর ভালাম মধ্যপাড়ার গৃহবধু মোসাঃ রোজিনা বেগম (৩৪) বলেন, ‘বাসার খাবার পানি ও রান্নাবান্নার পানি তিনি বালতিতে ভরে বাড়ির ছায়াযুক্ত স্থানে কলাগাছের পাতা, ডুমুর পাতাসহ অন্যান্য পাতা দিয়ে ঢেকে রাখছেন। যাতে পানি ঠান্ডা থাকে। তীব্র তাপদাহে পানির শীতলতা যেন বজায় থাকে।’ তিনি আরও বলেন, ‘পানি ছাড়া আমরা বাঁচবো না। এই গরমে আমাদের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। নানান রোগবালাই দেখা দিয়েছে। কোথাও কোন শান্তি নেই। তিনি জানান, এই তীব্র তাপদাহে তিনি আনাজ কলাসহ বিভিন্ন দেশীয় শাকসবজি রান্না করে পরিবারের সদস্যদের খাওয়াচ্ছেন বেশি করে যাতে পুষ্টিহীনতায় না ভোগে।

happy wheels 2

Comments