আমরা জলবায়ু ন্যায্যতা চাই
মানিকগঞ্জ থেকে রাশেদা আক্তার
বর্ষা মৌসুমে স্বাভাবিক বর্ষা না হওয়ায় কৃষকেরা ফসল চাষে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। পাট জাগ দিতে পারছেন না। ফলে পাট চাষ দিন দিন কমে যাচ্ছে। ফসলের জমিতে দিতে হচ্ছে সেচ। এরফলে ভূ-গর্ভস্থ পানির উপর চাপ বাড়ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট সমস্যার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত কষৃকেরা জলবায়ু ন্যায্যতার দাবিতে মানববন্ধন করেন। সম্প্রতি মানিকগঞ্জ জেলার মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউয়িনের চরমত্ত গ্রামে বেসরকারী উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক’র সহায়তায় আলোর পথিক নারী সংগঠন এই মানববন্ধনের আয়োজন করে।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী কৃষক আ: মালেক বলেন, “আমরা কৃষক, কৃষি কাজ করেই আমাগো (আমাদের) জীবন চলে। এখন সময় মত স্বাভাবিক বর্ষা হয় না। আগে বর্ষাকাল আসলেই চকে (জমিতে) পানি আসতো। আমাদের চরমত্ত গ্রামের অসেক কৃষক পাট চাষ করতো। এখন পানি আসে না। গতবছর পানি না আসায় আমরা পাট জাগ দিতে পারি নাই। পিকআপ ভ্যান করে অনেক দুরে নিয়ে পাট জাগ দিতে হইছে। আবার গাড়ি করে বাড়ি আনতে হইছে। পাট চাষ করতে আমাগো (আমাদের) অনেক খরচ হইছে। এবার অনেকেই পাট চাষ করে নাই। পাট চাষ দিন দিন কইমা যাইতেছে। প্রতিবছরই কৃষি কাজে আমাগো ক্ষতি হইতেছে। আমরা সরকারের কাছে এর ক্ষতিপূরণ চাই।”
কৃষাণী জোসনা বেগম বলেন, “আগে সব কিছু নিয়মমত হইতো। এখন কোনো কিছু নিয়মমত হয়না। যে সময় বৃষ্টি হওয়ার কথা সেসময় বৃষ্টি হয় না। শীত পড়ে না আগের মত। অনেক কুয়াশা পড়ে শস্যের ক্ষতি হয়। আগে বর্ষাকালে জমিতে পানি আইতো। পানি নেমে গেলে জমি উর্বর হইতো। এখন পানি হয় না। জমি শক্ত হয়ে তামা হয়ে গেছে। বর্ষাকালে যাতে জমিতে পানি আসে তার জন্য আমরা নদী খননের দাবি জানাই।”
কৃষাণী মনোয়ারা বেগম বলেন, “আমরা গেছে (গত) বছর পাট বুনছিলাম। জাগ দিতে পারি নাই পানি না আসার কারণে। যে টাকা খরচ গেছে তা পাট বিক্রি কইরা উঠাইতে পারি নাই। তাই এইবার পাটই বুনি নাই। আমরা কৃষকরা কৃষি কাজ কইরা শুধু ক্ষতিই হয়। লাভ নাই। সরকারের কাছে ক্ষতিপূরণের দাবী জানাই।”কৃষাণী কল্পনা বেগম বলেন, “সকলের মত আমারো একই সমস্যা। আমরা এই সমস্যার সমাধান চাই। না হলে ক্ষতিপূরণ চাই।”
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী রেনু বেগম, জহুরা বেগম, নাছিমা বেগম, মো: শফিকুল, মো: শাওন, দ্বীন ইসলামসহ উপস্থিত সকলেই জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী দেশগুলো যাতে ক্ষতিপূরণ দেয় তার দাবি জানান।