তানোরে মজুরি বৈষম্যের শিকার নারী শ্রমিকরা
অসীম কুমার সরকার, তানোর (রাজশাহী)
কর্মক্ষেত্রে মজুরি বৈষম্য মেনে নিয়েই পুরুষের সঙ্গে কাজ করতে হচ্ছে নারী শ্রমিকদের। কখনও পুরুষ শ্রমিকের সমান, কখনও বা বেশি কাজ করেও কম মজুরি পাচ্ছেন তাঁরা। ঘরের কাজ সেরে জীবিকার জন্য মাঠে নেমেও সমান মর্যাদা পাচ্ছেন না নারী শ্রমিকরা। অনেক ক্ষেত্রে ঘরে-বাইরে বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন তারা। গতকাল (সোমবার) জেলার তানোর উপজেলার আলু উত্তোলনের কাজে নিয়োজিত বিভিন্ন স্থানের নারী শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে।
নারী শ্রমিকরা জানান, কর্মক্ষেত্রে মজুরির বৈষম্য জেনেও জীবিকার তাগিদে তাঁরা কাজ করে যাচ্ছেন। তবে, পুরুষ শ্রমিকদের সঙ্গে সমান তালে কাজ করলেও কখনও কখনও পুরুষ সহকর্মী, কখনও মালিক পক্ষের হাতে নিগৃহীত হতে হয় তাদের। এমনকি অনেক সময় ‘নারী’ বলে কাজে নিতেও আপত্তি জানান মালিকরা। কাজের ধরণ, সময় অনুসারে মুজরি নির্ধারণ করা হলেও নারী শ্রমিকরা প্রতিটি ক্ষেত্রে পুরুষ শ্রমিকের অর্ধেক কিংবা তার চেয়েও কম মজুরি পান। একজন পুরুষ শ্রমিক আলুর জমিতে সকাল থেকে দুপুর ১ টা পর্যন্ত কাজ করলে দৈনিক ৩-৪ শ’ টাকা মজুরি পেলেও নারী শ্রমিককে দেওয়া হয় ১৫০ টাকা থেকে ২০০ টাকা।
উপজেলার গুবিরপাড়া, সিন্দুকাই আলুর জমিতে আলু উত্তোলনের কাজ করছিলেন কুঠিপাড়া গ্রামের মাবিয়া খাতুন, শেফালী বেগম, গোল্লাপাড়া গ্রামের জুঁই খাতুন। তাঁরা মাটি থেকে আলু তুলে ডালিতে রাখছেন। তারপর ডালিভর্তি আলু বস্তায় ভরছেন। মজুরি কত পান জানতে চাইলে তারা বলেন, “মজুরি চুক্তিতে হয়। সকাল ৭টা থেকে দুপুর ১টা, কখনও ২টা পর্যন্ত কাজ করি। সে হিসেবে ২০০ টাকা দেয়। পুরুষদের দ্বিগুণ দেয়। এটাই তো নিয়ম, কাজ এক রকম করলেও নারী বলেই কম মজুরি পাবো।”
এ নিয়ে গবেষণা সংস্থা বারবিক এর সহযোগী কর্মসূচি কর্মকর্তা জানান, অঞ্চল ভেদেও নারী শ্রমিকরা বৈষ্যমের শিকার হচ্ছেন। একই সময়ে কাজ শুরু ও শেষ করলেও তারা পুরুষ শ্রমিকের সমান মজুরি পান না এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। তবে এক শ্রেণির মালিক নারীদের অবহেলা আর অবজ্ঞায় এমন মজুরি বৈষম্য করে থাকেন যা মোটেও ঠিক নয়। আমাদের এই বৈষম্যের মানসিকতা পরিবর্তন করে নারীর যথার্থ মর্যাদা দিতে হবে।