‘প্রকৃতির মজার পাঠশালা’
রাজশাহী থেকে শহিদুল ইসলাম শহিদ
রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার রিশিকুল ইউনিয়নের আলোকছত্র গ্রামে ‘প্রকৃতির মজার পাঠশালা’র শুভ উদ্বোধন করা হয় সম্প্রতি। সেখানে শিক্ষার্থীসহ কিছু অবিভাবক উপস্থিত ছিলেন। আব্দুল মজিদ খাঁন (অবসর নৌবাহী) তাঁর বাড়ির উঠানে তিল তিল গড়ে তুলেছেন ‘বৃক্ষ বৈচিত্রসমৃদ্ধ সবুজ বাড়ি’। সেখানে ৮০ প্রজাতির ফল বৈচিত্র্য, ৩০ জাতের ফুল, ১১ জাতের ঔষধি ও ১৬ জাতের সবজিসহ ৭ প্রকার বনজ গাছ রয়েছে। বাগানের গাছ বৈচিত্র্য বৃদ্ধির কাজটি তিনি চলমান রেখেছেন। সেখানেই গ্রামের ২০টি দরিদ্র পরিবার থেকে বিশজন বাচ্চাদের নিয়ে গড়ে তুলেছেন এই প্রকৃতির মজার পাঠশালা।
উদ্বোধন শেষে গাছ লাগানোর প্রতি আগ্রহ তৈরির জন্য বাচ্চাদের হাতে একটি করে আমড়া ফলের চারা তুলে দেওয়া হয়। মজিদ খাঁন প্রকৃতির মজার পাঠশালাটি শিক্ষার্থীদের স্কুল শেষে সপ্তাহে ৪ দিন পরিচালনা করেন। প্রথম শ্রেণী থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত ছেলে মেয়েরা এখানে অংশগ্রহণকারী হিসেবে রয়েছে।
এসব বাচ্চাদের স্কুলের পড়া শেষে বাড়িতে শিক্ষা দেওয়ার মতো তেমন কোন উদ্যোগ না থাকায় লেখাপড়ায় অগ্রগতি কম। বাবা মা লেখাপড়া কম জানেন ও সংসারের কাজে সব সময় ব্যস্ত থাকতে হয়। এছাড়াও প্রাইভেট পড়ানোর সামর্থ কম থাকায় বাচ্চাদের লেখাপড়া ও তাদের মেধা বিকাশে এক প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়েছে বলে অবিভাবকগণ জানান।
এ প্রসঙ্গে আব্দুল মজিদ খাঁন বলেন, ‘ছোট বেলায় বাচ্চারা যে বইটি প্রথম হাতে পায় সেই বইটিতে ছবির সংখ্যা থাকে বেশি। বাচ্চরা ছবির মাধ্যমে শিক্ষা শুরু করেন ও চিনতে থাকেন তার পরিবেশকে। আর সেই ছবিগুলো থাকে ফুল, ফল, গাছ, প্রাণি ইত্যাদি সম্পর্কে।” তিনি আরও বলেন, “বাচ্চারা ছবির সাথে যেমন পরিচিত হবে তার সাথে বাগানের দৃশ্যমান ফুল, ফল, সবজি, ও ঔষধী গাছের সাথে পরিচিতি লাভ করবে। একই সাথে জানবে এসবের গুনাগুণ ও উপকারিতা সম্পর্কে। ধীরে ধীরে তৈরি হবে প্রাণ প্রকৃতির প্রতি তাদের ভালোবাসা।” তিনি বলেন, “জীবন স্থায়িত্বশীল নয়, আমি একদিন পৃথিবীতে থাকবো না এক সময় চলে যবো। তাই আমি মনে করি ছোট ছোট বাচ্চাদের লেখাপড়ার পাশাপাশি প্রাণ ও প্রকৃতির প্রতি ভালোবাসা তৈরি করতে পারলে তারা এসবের প্রতি আগ্রহী হবে ও টিকে রাখার উদ্যোগ গ্রহণ করবে।”