স্থানীয় জাতগুলো কৃষকের মাঝে সম্প্রসারণ করতে হবে
নেত্রকোনা থেকে মো. অহিদুর রহমান
১২ নভেম্বর। ২০২৪। কলমাকান্দা, তারাকান্দা, নেত্রকোনা সদর, কেন্দুয়া, আটপাড়া, মদন, ফুলপুর ময়মনসিংহ সদর উপজেলার ৪০ জন কৃষক কৃষাণি আজ তাদের পছন্দের ধানজাত বাছাই করার জন্য রামেশ্বরপুর গ্রামে এসেছেন। বেসরকারী গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক‘র এর সহযোগিতায় তুষাই পাড়ের কৃষক সংগঠনের উদ্যোগে ৪০০ স্থানীয় জাতের ধান গবেষণার আজ কৃষক মাঠ দিবস। মাঠ দিবসকে কেন্দ্র করে প্রতিবছরের ন্যায় এবছর আট উপজেলা থেকে ৪১ জন কৃষক এসেছেন মাঠে চাষ করা ধান থেকে পছন্দের ধান বাছাই করতে।
মাঠ দিবসে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নেত্রকোনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক নুরুজ্জামান, প্রথম আলোর সাংবাদিক পল্লব চক্রবর্তী, যমুনা টিভি ও যুগান্তরের সাংবাদিক মো. কামাল হোসেন, ডিসিবি টিভির সাংবাদিক রফিকুল ইসলাম। জেলা জনসংগঠনের সভাপতি সায়েদ আহমেদ খান বাচ্চু।
প্রধান অতিথির ভাষণে নূরুজ্জামান বলেন, ‘আমাদের অনেক ধানের জাত হারিয়ে গেছে। কৃষকসংগঠন ও বারসিক অনেক স্থানীয় জাত সংগ্রহ করে চাষ করে গবেষণায় বাছাই করে কৃষকের মাঝে ছড়িয়ে দিচ্ছে। আজ অনেক কৃষক এখানে উপস্থিত হয়ে ধান বাছাই করছেন। স্থানীয় জাতগুলো কৃষকের মাঝে সম্প্রসারিত হোক।” তারাকান্দা উপজেলার কৃষক মো. ইব্রাহিম বলেন, ‘আমি গত বছর মালশিরা, বিরই, লোহাজং ধান বাছাই করে নিয়েছিলাম সেই ধান চাষ করে লাভবান হয়েছি। এই বছর আবার আইছি নতুনভাবে বাছাই করার জন্য।’
মাঠ দিবসে প্রথমেই আগত কৃষকেরা মাঠে চাষ করা শত শত জাতের ধানজাত পরিদর্শন করেন। কৃষকেরা মালশিরা, কাডিডিট, মালশিরা, হেকিম ধান, কাবুনডুলান, পাইজাম, বিরই,বোরো আবজি, বিশালীবিন্নী, আপাচি, ময়নামতি, চিনিশাইল, গুনসি,গিঘজ, খেকশিয়াল, এম-২৫২, ব্রিডিং আট। পছন্দের কারণ হিসেবে কৃষকেরা বলছেন, ফলন ভালো, রোগবালাই কম, শীষে পুষ্ট ধানের সংখ্যা বেশি, ধানগাছ হেলে পড়েনা, ও কুশির সংখ্যা বেশি। কৃষকেরা গত দিনগুলোতে যেসব ধানজাত পছন্দ করেছেন সেই ধানগুলো প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন।
গত বছরগুলোতে কৃষকেরা পছন্দ করে তুলসিমালা, বিন্নী ,বাদশাভোগ, কার্তিক বিন্নী, চিনিগুড়া, মালশিরা, খেকশিয়াল, গেংগেং বিন্নী বোরো, আগাম শাইল, বর্গা বোরো, বিরই, বাঁশফুল, সোনালী পাইজাম, ভোলানাথ, রাজলক্ষী বিলাস, সাদাকুমড়ি, চিনিগুড়া, সতীন, ঋতু পাইজাম, খাইনল, খামা, গচি, লাফা, গুটিস্বর্ণা, ভারত, আইজং, মকবুল, লক্ষীবিলাস, ইয়র চাউল, গারো বিন্নি, সুবাস আবজি, নুইন্যা, আগুন্যা বিন্নী, ভূইট্টা আইজং, রতিশাইল, হেমার, বিশালী বিন্নি, বিন্নি, জেসমিন, খাইনল, বাদশাভোগ, কাটারীভোগ, কালিজিরা, ফুলবাইন, সিলেট বালাম, কাডিডিট, মালা, ময়রম, বদ্দিরাজ, বোরো আবজী, বোরো ঝাপি, গাজী, খাসিয়া বিনি, চান্দিনা, সাঁথিয়া, অহনঢেপি, বিরন, চানমুনি, আসকল, লোহাজং, বাশিরাজ, চিনিসাগর, পাখিবিরন, রাধুনিপাগল, কুমড়ী, জাতগুলো নিজ নিজ এলাকায় চাষ করছেন।
কৃষকের বীজ কৃষকের সম্পদ। এই বীজ সম্পদের অধিকার আদায়ের জন্য নেত্রকোনার কৃষক সংগঠন দীর্ঘদিন ধরে কাজে করে যাচ্ছে।