উপকূলের কৃষি প্রাণ: কৃষকের বীজ ব্যাংক
::দেবদাস মজুমদার, বিশেষ প্রতিনিধি, উপকূল অঞ্চল::
জলবায়ূর পরিবর্তন জনিত প্রাকৃতিক দুর্যোগ,অতিবৃষ্টি,জলোচ্ছাস আর লবনাক্ততার আগ্রাসনে উপকূলের কৃষি বিপন্ন। প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রতিবছর ফসল মার খায়। আবার আবাদের শুরুতে বৈরী আবহাওয়ায় ধানের বীজতলা বিনস্ট হয়। এমন অবস্থায় কৃষক মৌসুমে ধান বীজের সংকটে পড়েন। বিপন্ন কৃষককে তখন বীজের জন্য অন্য এলাকার কৃষকের কাছে ধর্ণা দিতে হয়। এছাড়া কৃষক বীজের জন্য বাজার নির্ভর হয়ে উৎকৃষ্ট মানের বীজের সংগ্রহ করতে পারেনা। প্রাকৃতিক দুর্যোগে ফসল নষ্ট ও বীজের অভাবে সময়মত কৃষক চাষাবাদ করতে পারেনা। বীজ সংকট উপকূলের কৃষকের প্রতিবছরের সংকট। প্রতিবছর কৃষককে উৎকৃষ্ট মানের বীজ জোগার করতে মারাত্মক সমস্যার মোকাবেলা করতে হয়। এমন অবস্থা মোকাবেলায় ভূক্তভোগী কৃষকরা সংগঠিত হয়ে গড়ে তুলেছেন ব্যাতিক্রমী এক বীজ ব্যাংক।
উপকূলীয় বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার রায়হানপুর ইউনিয়নের মাদারতলী গ্রামের দেশী জাতের ধানের ব্যাতিক্রমী বীজ ব্যাংক গড়ে তুলেছে কৃষকরা মিলে। এলাকার কৃষকরা মিলে এখানে দেশী প্রজাতির প্রায় ৮০ জাতের ধানের বীজ সংরক্ষণ করছেন। উদ্যোক্তা কৃষকরা এ বীজ ব্যাংকে তাদের উৎপাদিত পরিপুষ্ট বীজ জমা রেখে আবাদ মৌসুমে ধানের বীজ সংকট মোকাবেলা করছে। এ বীজ ব্যাংকের লক্ষ্য হচ্ছে প্রাকুতিক দুর্যোগপ্রবণ উপকূলীয় প্রান্তিক কৃষকের মৌসুমে বীজের চাদিা পূরণ ও বৈচিত্র্যময় দেশী জাতের ধান বীজ সহজলভ্য করা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে,সংশ্লিষ্ট কৃষকরা তাদের গড়ে তোলা বীজ ব্যাংকে স্থানীয় জাতের আমন ৯৪ টি, আউশ ২৩টি ও বোরো মৌসুমের ৬ ধরনের ধানবীজ সংরক্ষণ করেছে । এছাড়া ফিলিপাইনের ৭ টি উচ্চফলনশীল ধানের বীজও এ ব্যাংকে সংরক্ষণ করা হয়েছে। সংরক্ষিত বীজ মৌসুমে সংশ্লিষ্ট কৃষকরা তাদের চাহিদামত জাতের বীজ এ ব্যাংক থেকে সংগ্রহ করেন। আবার পরবর্তী বছর তারা ফসল তুলে এ বীজ ব্যাংকে জমা রাখছে আপদকালীন সময়ে আবাদের জন্য।
কৃষকরা জানান,দেশী জাতের ধানের আবাদ সম্প্রসারণে একটি বেসরকারী কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ রিসোর্স সেন্টার ফর ইন্ডিজেনাস নলেজ(বারসিক) ২০০৭ সালে সিডর পরবর্তী পাথরঘাটার মাদারতলী গ্রামের কৃষকদের সংগঠিত করে। শতাধিক উদ্যোগী কৃষকরা মিলে গড়ে তোলেন মাদারতলী কৃষক সংগঠন। কৃষিতে তাদের লোকায়ত ধ্যান ধারনার মাধ্যমে কৃষকরা দেশী জাতের ধানের জাত গবেষণা শুর করেন। এ সংগঠনটি দেশী ধানের গবেষণার জন্য বর্ধণ ও সংরক্ষণ প্লট তৈরী করেন। এ প্লটে ৬৫ প্রকার ধানের আবাদ করে উৎপাদিত ধান বীজ সংরক্ষণ শুরু করে তারা। ২০১০ সালে গবেষণা প্লটে উৎপাদিত দেশী জাতের ধান বীজ পাশ্ববর্তী মঠবাড়িয়ার কবুতরখালী ও হোতখালী গ্রামের দুর্যোগপ্রবণ এলাকার কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে সরবরাহ করেন। এতে দেশী জাতের ধানের আবাদ সম্প্রসারণের সাথে যুক্ত হয় নতুন এলাকার কৃষক। ২০১৪ সালের মাঝামাঝি সময়ে মাদারতলীর কৃষকরা তাদের গবেষণা লব্ধ জ্ঞান কাজে লাগিয়ে আপদকালীন সময়ে ধান বীজ সংরক্ষনের চিন্তাভাবনা শুরু করে গড়ে তোলেন বীজ ব্যাংক। ওই বীজ ব্যাংক পরিচালনার জন্য কৃষকরা মিলে একটি কমিটি গঠন করেন। স্থানীয় উদ্যোক্তা কৃষক শহীদ পহলান কে প্রধান সমন্বয়ক করে ১৫ সদস্যের মাদারতলী কৃষক বীজ ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদ গঠন করা হয়। এর সাথে এখন যুক্ত আছেন এখন এলাকার শতাধিক কৃষক।
স্থানীয় কৃষক মো. শাহ আলম খান জানান,এলাকার কৃষির উন্নয়ন ও কৃষকের স্বার্থ বিবেচনা করে তিনি এ বীজ ব্যাংক গড়ে তুলতে দেড় শতাংশ জমি রেজিষ্ট্রি করে দান করেছেন। ওই জমিতে কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠান একটি ঘর নির্মাণের সহায়তা দেন। বীজ ব্যাংক পরিচালনার জন্য একটি সুনির্দিষ্ট নীতিমালা তৈরী করে তার কপি সংশ্লিষ্ট কৃষকের মাঝে বিতরণ করা হয়। এরপর নীমিতালা অনুযায়ী এলাকার কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ধান বীজ সুরক্ষার জন্য জমা দিতে শুরু করেন। বর্তমানে এ বীজ ব্যাংকে স্থানীয় জাতের ৯৪ প্রকার ধান বীজ সংরক্ষণ করা হচ্ছে। যা কৃষকরা আপদকালীন মৌসুমে চাহিদা অনুযায়ী সংগ্রহ করতে পারবে। এ প্রক্রিয়ায় কৃষকের মাঝে বীজ বিনিময়েরও একটা সুবিধা তৈরী হয়েছে।
কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিকের তথ্য সূত্রে জানাগেছে,উপকূলীয় বরগুনা ও পিরোজপুর অঞ্চলে ২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর প্রলংয়করী ঘূর্ণিঝড় সিডর এলাকার কৃষি-পরিবেশ ও স্থানীয় মানুষের জীবন জীবিকায় ভয়াবহ নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এসময় বেশি প্রাণহানি ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি সাধন করে বরগুণা, পিরোজপুর, বাগেরহাট ও পটুয়াখালি উপকূলে। সিডরে প্রবল ঝড় ও জলোচ্ছ্বাস ভেসে নিয়ে যায় এলাকার কৃষি ও জন-জীবন। ফসলের জমিতে অবাঞ্ছিত পানি জমে অনেক ফসল নষ্ট হয়। আবার লবণ পানি সহসা সরে না যাওয়ায় পরবর্তী রবি মৌসুমের ফসল ও চাষ করতে পারেনি বিপন্ন কৃষক। এলাকার কৃষকরা দূর্যোগকালীন সময়ে এলাকায় খাদ্য সামগ্রী, ওষুধ, বস্ত্র, গৃহস্থালি উপকরণ, গৃহায়ণ, গৃহমেরামতের সরঞ্জাম, গৃহপুনঃনির্মাণ, পানীয়জল, স্যানিটেশন, মৎস্যখাত, শিক্ষা, আয়মূলককার্যক্রম, ক্যাশ ফর ওয়ার্ক সরকারী ও বেসরকারী পর্যায় বাস্তবায়ন করা । তবে গ্রামীণ জীবনের প্রধানখাত কৃষি বলা যায় থেকেছে উপেক্ষিত। উপর থেকে চাপিয়ে দেওয়া জনবিচ্ছিন্ন কার্যক্রমের ফলে অনেক বিষয় সামনে এলেও সে এলাকার মানুষের জীবিকার প্রধানতম খাত কৃষি বিবেচনায় না আসায় দূর্গত মানুষের ঘুরে দাঁড়ানোটা অনেক বেশি কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে।
এরকম এক প্রেক্ষিত সামনে রেখে ২০০৭ সালে পিরোজপুর জেলা মঠবাড়িয়া উপজেলার গুলিশাখালি ইউনিয়ন ও বরগুণা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার রায়হানপুর ইউনিয়নের কৃষকদের সাথে বেসরকারি সংগঠন বারসিক কাজ শুরু করে। স্থানীয় জনগোষ্ঠির সাথে টিকে থাকা কৃষিপ্রাণবৈচিত্র্য সংরক্ষণের কাজও শুরু হয়। গবেষণায় উঠে আসে সিডরের আগের আমন মৌসুমে এলাকায় বুড়োমন্তেশ্বর, পানকাইচ, কলমমোটা, বামনখিচ, গাজর, রাজাশাইল, ময়নামতি, গোপালভোগ, হাইড্ডা, গোটাইরি, ক্যারেঙ্গাল, কার্তিক শাইল, কালাজিরা, শাক্করখোরা, দুধকচি, সীতাভোগ, কুটিআগ্নি, ফকিরমোটা, মাটিচান, তেইশ বালাম, কালমোটা, মৌলতা, সাদা গোটাল, দুধকলম, দিশারী, সাগরফনা, চর বলেম্বর, সাদামোটা, খাড়া মোটা, মোতামোটা, কিরনশাইল, আব্দুল হাই, লালমোটা, কাজলশাইর, মগাইবেতি, হলদে গোটান, চিকনবেতী, চরোবালাম, কাঁচড়া, জামিনীমোটা, সিলটবালাম, বাশফুল বালাম, সৈয়দমোটা ও কেওয়া মৌ এই ৪৪ জাতের আমন ধান চাষ হয়েছে। কিন্তু সিডর পরবর্তী ২০০৮ সালে কৃষকরা যখন স্থানীয় জাতের আমন বীজ সংগ্রহ করার চেষ্টা করেন তারা মাত্র ২৬ ধরণের আমন জাতের বীজ সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়েছিলেন। ১৮ টি স্থানীয় আমন জাত সিডর পরবর্তী আমন মৌসুমে এলাকার কৃষিপ্রাণবৈচিত্র্য থেকে লুপ্ত হয়ে যায়।
বেসরকারি উন্নয়ন সংগঠন বারসিক এর সহায়তায় কৃষকরা ২০০৭ সাল থেকে স্থানীয় শস্য ফসলের জাত সংগ্রহের চেষ্টা করেন যা তাদের লবণাক্ত মাটি ও পরিবেশের সাথে সামঞ্জস্য রেখে চাষাবাদে সক্ষম। কৃষকরা নিজ উদ্যোগে স্থানীয় এলাকা থেকে কৃষকের চাষাবাদে না থাকা ও হারিয়ে যাওয়া জাতগুলো খুঁজে সংগ্রহ করে জমিতে লাগিয়ে পরিবর্তিত জলবায়ুর সাথে পরীক্ষণের প্রায়োগিক চেষ্টা করেন। এই কাজের অংশ হিসাবে ২০০৮ সালে প্রথম পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার গুলিশাখালি ইউনিয়নের টিয়ারখালি গ্রামে ২৩ টি স্থানীয় আমন ধানজাত, কবুতরখালি গ্রামে ২৪ টি স্থানীয় আমন ধানজাত ও হোতখালি গ্রামে ২২ টি স্থানীয় আমন জাত এবং পাথরঘাটা উপজেলার রায়হানপুর ইউনিয়নের মাদারতলী গ্রামে ১৯ টি আমন ধানজাত, গোলবুনিয়া গ্রামে ১৯ আমন ধানজাত ও রায়হানপুর গ্রামে আমনের ১৪ টি স্থানীয় জাত নিয়ে স্থানিক উপযোগি ফসল-জাত নির্বাচনের জন্য প্রায়োগিক গবেষণা শুরু করে কৃষকরা। গবেষণা কাজের ধারাবাহিকতায় স্থানীয় শস্যফসল জাতের তথ্য সংগ্রহ, জাত সংরক্ষণ ও শ্রেণীকরণের কাজ শুরু হয়। একই কাজের অনুপ্রেরণায় কৃষকরা পরবর্তী বছরে আউশ ও আমন মৌসুমেও জাত নির্বাচন গবেষণা অব্যহত রাখেন। কৃষকদের এই ধারাবাহিক কাজের ফলে এলাকায় আউশ জাতবৈচিত্র্য বেড়েছে। বিগত দিনের কালোআউশ, আব্দুলহাই, গোটাইরি, ওদুব আলী, ভজন, কুচমুচ, গাজর, ও কালোহাইড্ড্যার পাশাপাশি এখন সেখানে কাইশ্যাবিন্নি, পুইট্যাআইজং, বউলা ইত্যাদি জাতগুলোও চাষ হচ্ছে। কৃষকরা সংগ্রহ করেছেন ১৭ ধরণের স্থানীয় জাতের আউশ বীজ। নিজেদের জমিতে লাগিয়ে পরীক্ষা ও পর্যবেক্ষণ করে পছন্দের জাত বাছাই করতে পারছেন তেমনি বীজ বিনিময়ের মাধ্যমে এলাকার কৃষকদের চাহিদা পূরণেও ভূমিকা রাখছেন। পাথরঘাটা ও মঠবাড়িয়ার কৃষক সংগঠনের কাছে বর্তমানে কালোমোটা, হলদেগোটাল, খাড়ানাড়া, চরবলেশ্বর, সাদামোটা, কেওয়ামৌ, সাদাগোটাল, লালমোটা, মোতামোটা, চিকনবেতী, তুলসীমালা জামিনীমোটা, সাগরফনা, মৌলতা, কাজলশাইল, বুড়িমোটা, চরবালাম, খরিয়ামোটা, নাখুচিমোটা, খাসকিনি, ক্যারেঞ্জালমোটা, দুধকলম, মগাইবেতী, আব্দুলহাই, বামনখীচ, বুড়ামন্তেশ্বর, ময়নামতি, শীতাভোগ, হলদেগাটা, মোস্তফা মোটা, কলাড্যামা, বুদ্ধিমোটা, লালচিকন, সাদাচিকন, নাজিরশাইল, লালমতি, পাংগাস, রাজাশাইল, গাবরাইল, পাটনাই, কুটেপাটনাই, সাহেবকচি, ইঞ্চি, বৈয়ারী, কাবেরী,মীরমোটা, রূপেশ্বর, জামাইনাড, মহিনী, মঘাইবালাম, মাইট্যাক্যারেঙ্গাল, গন্ধকুমড়া, ন্যাড়া ক্যারেঙ্গাল, মোস্তফা মোটা, আরমান হরদার, গোলকখইয়া, বাঁশফোড়, বহুরী মোটা, কুটিআগ্নি, কাঁচামোটা, দারশাইল, চাবলী, সৈয়দমোটা, ফকিরমোটা, বাঁশফুলবালাম, রাজলক্ষèীবিলাস, ফয়জোর, শিবজট, পানকাইচ, সিলটবালাম, কাঁচড়া, তেইশবালাম, চিনিগুড়া, গোপালভোগ, ভূষিইরি, জলকস্তুরিসহ মোট ৮৯ টি আমনের জাত রয়েছে যা তারা নিজের জমিতে বিভিন্ন মৌসুমে ধারাবাহিক পরীক্ষণ, পর্যবেক্ষণ ও উপযোগিতা যাচাই করছেন। বর্তমানে মাদারতলী কৃষক বীজব্যাংকে স্থানীয় জাতের শাকসবজি বীজ ছাড়াও স্থানীয় জাতের আমন ৯৪ টি, আউশ ২৩টি ও বোরো মৌসুমের ৬ ধরনের ধানবীজ সংরক্ষিত আছে। কৃষক সংগঠনের সদস্যরা আউশ ও আমন মৌসুমে স্থানীয় ধানজাতের সমন্বয়ে পরীক্ষণ প্লট স্থাপন করে লবণসহনশীল স্থানীয় ধানজাত নির্বাচন এছাড়া অধিক ফলন, রোগবালাই প্রতিরোধী, স্বল্প জীবনকাল ও উৎপাদন খরচ কমানোর জন্য স্থানীয় জাতের লালমোটা, ইঞ্চি, কুটিআগ্নি ও উচ্চফলনশীল ব্রিধান ৪০ ও বিআর ১১ জাতকে প্রজনক হিসাবে ব্যবহার করে শংকরায়নের পদ্ধতিতে ৪ টি ক্রস থেকে ৮ টি সিলেকশন নিয়ে বিশুদ্ধ সারি নির্বাচনের চতুর্থ বংশধর নিয়ে গবেষণা করছেন।
বীজ ব্যাংকের রেকর্ড সংরক্ষক কৃষক মো. শফিকুল ইসলাম ওয়ারেচ বলেন,আপদকালীন সময়ে ধান বীজ সংশট মোকাবেলার জন্য এ বীজ ব্যাংক গঠন করা হয়েছে। এতে কৃষকরা ব্যাংকে সংরক্ষিত বীজ সংকট সময়ে সহজেই নাগালে পাবেন। এছাড়া কৃষক তার জমির উর্বরতা উপযোগী বীজ আদান প্রদানেরও সুবিধা পাবেন।
কৃষিপ্রাণবৈচিত্র্য, জলবায়ুপরিবর্তন ও খাদ্য নিরাপত্তা কর্মসূচির সমন্বয়ক কৃষিবিদ এবিএম তৌহিদুল আলম বলেন, লবণাক্ততা উপকূলীয় কৃষির অন্যতম সমস্যা যা স্থানীয় মানুষের শস্য-ফসল উৎপাদনের প্রধানতম অন্তরায়। বাংলাদেশের মোট আবাদযোগ্য জমির ৩০ ভাগ উপকূলীয় এলাকায়। উপকূলীয় ২৮.৫ লাখ হেক্টর জমির মধ্যে প্রায় ৮.৩ লাখ হেক্টর জমিই লবণাক্ততায় নানাভাবে প্রভাবিত। এছাড়া প্রাকৃতিক নানা দুর্যোগে কৃষকের আবাদ মৌসুমে বীজ সংকট দেখা দেয়। বীজ ব্যাংক গঠনের মধ্য দিয়ে সেখানের কৃষকরা তাদের বীজ সুরক্ষা করে এ সংকট মোকাবেলা করতে পারবে ।
এ বিষয়ে পাথরঘাটা উপজেলা কৃষি দপ্তরের উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা অসীম চন্দ্র দাস বলেন,মাদারতলী কৃষকরা বীজ সংরক্ষণের জন্য বীজ ব্যাংক গঠন করেছে। যা আবাদের আপদকালীন সময়ে বীজ সংকট মোকাবেলা করবে। বীজ সুরক্ষার এ কৃষক বীজ ব্যাংক উপকূলীয় এলাকাকার কৃষকদের জন্য একটা অনুসরণের দৃষ্টান্ত হতে পারে। কৃষি বিভাগ স্থানীয় কৃষকদের উৎপাদিত ভাল মানের বীজ বীজ ব্যাংকে জমা রাখার জন্য কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছে।