একজন গরিবের ডাক্তার
নাচোল চাঁপাই নবাবগঞ্জ থেকে অনিতা বর্মণ
মানুষ সামাজিক জীব। আর এই সমাজের মানুষগুলো একে অপরের সহযোগিতায় এগিয়ে চলেন জীবনযুদ্ধে। আর এই জীবনযুদ্ধে মানুষের পাশে এসে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দিয়ে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়ে তিনি আজ গরিবের ডাক্তার বলে পরিচিত। তিনি চাঁপাই নবাবগঞ্জ জেলার নাচোল উপজেলার মাস্টার পাড়া গ্রামের মো. কাওসারুল ইসলাম (৬৭)। হোমিওপ্যাথ ডাক্তারির মাধ্যমে তিনি সাধারণ মানুষের মন জয় করে নিয়েছেন। শুধু চিকিৎসা নয়; ঔষুধপত্র দিয়েও তিনি রোগীদের পাশে দাঁড়ান।
এ প্রসঙ্গে কাউসার বলেন, “বাবা-মায়ের বড় ছেলে আমি। ১৯৬৭ সাল থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত পানি উন্নয়ন বোর্ডে চাকরি করেছি। চাকরির পাশাপাশি বিভিন্ন রোগের বিভিন্ন বয়সের রোগীদের হোমিও চিকিৎসা করতাম। এখন চাকুরি শেষ করে ঘরে বসেই প্রতিদিন শত শত রোগীদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দিচ্ছি। আর গরিব রোগীদের চিকিৎসার পাশপাশি ওষুধটাও দিচ্ছি বিনামূল্যে।”
তিনি আরো বলেন, “১৯৮০ সাল থেকে অসহায় গরিব মানুষের চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছি। সপ্তাহে একদিন (বুধবার) বাদ দিয়ে ৬ দিন সকাল ৮ থেকে ১০টা পর্যন্ত চিকিৎসা প্রদান করে থাকি।” তিনি বলেন, “আমি চেয়েছিলাম স্থানীয় গরিব মানুষের চিকিৎসা সেবা করব কিন্তু এখন স্থানীয় রোগীদের পাশপাশি বিভিন্ন এলাকা যেমন: রহনপুর, তানোর, কলমা, বিল্লি, রাজবাড়ি, আড্ডা, নিয়ামতপুর এই রকম আরো অনেক এলাকা থেকে আমার কাছে অনেক রোগী আসেন চিকিৎসা সেবার জন্য।”
এই চিকিৎসা সেবা দিতে গিয়ে প্রতিমাসে তিনি একটি অংকের টাকা নিজেই খরচ করেন। চিকিৎসার জন্য কোন ফি তো নেনইনি বরং প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র তিনি বিনামূল্যে বিতরণ করেন। এজন্য প্রতিমাসে তাঁর একটি খরচ করতে হয়। তবে গরিবসহ অন্যান্য মানুষের সেবা করতে পেরেই তিনি শান্তি পান এবং কেউ তাঁর চিকিৎসায় সুস্থ হলে তিনি আনন্দ পান। চিকিৎসার বিনিময়ে তিনি কারও কাছ থেকে কোন কিছু প্রত্যাশা করেন না। কেননা মানুষকে সেবা দেওয়ায় তাঁর জীবনের লক্ষ্য বলে তিনি জানান।
তিনি বলেন, “এখন গরিব মানুষকে চিকিৎসাসেবা দেওয়ায় এখন আমার জীবনের লক্ষ্য। আমি যতদিন বেঁচে আছি ততদিন এই মানুষগুলোকে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাতে চাই।”