ভার্মি কম্পোস্ট উৎপাদন করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন বিলকিস বেগম
রাজশাহী থেকে ব্রজেন্দ্র নাথ
‘এক সময় সন্তানকে স্কুলে যেতে ১০টি টাকাও দিতে পারতাম না, অসুস্থ স্বামীর জন্য ঔষধ কিনতে পারতাম না। এখন নিজেই আয় করি, সংসার চালাই’। কথাগুলো বলছিলেন রাজশাহীর পবা উপজেলার বড়গাছি ইউনিয়নের কাড়িগড় পাড়া গ্রামের বিলকিস বেগম। তিনি ভার্মি কম্পোস্ট উৎপাদন করে প্রতিমাসে কমপক্ষে ১০ হাজার টাকায় আয় করেন। এখন এই গ্রামে এবং এর আশেপাশে বড়গাছি ইউনিয়নে মোট ২০ জন নারী ভার্মি কম্পোস্ট উৎপাদন করেন। এভাবেই দিনে দিনে ভার্মি কম্পোস্ট উৎপাদন, ব্যবহার এবং এর থেকে আয় করছেন। এর ফলে পরিবেশবান্ধব কৃষির যেমন চর্চা হচ্ছে তেমনি স্থানীয় পরিবেশ এবং মানুষের স্বাস্থ্যসহ সার্বিক অবস্থা আরো ভালো হচ্ছে।
বারসিক ২০১৬ সাল থেকে উক্ত এলাকার আগ্রহী নারীদের ভার্মি কম্পোস্ট উৎপাদন এবং এ বিষয়ে কারিগরি সহযোগিতা করে। এরই ধারাবাহিকতায় পবা উপজেলার বড়গাছি ইউনিয়নের মাধবপুর ও কারিগর পাড়ার গ্রামীণ নারীদেও মধ্যে কয়েকজন নারী চারিতে ভার্মি কম্পোস্ট তৈরি করেন। এই ভার্মি কম্পোস্ট ব্যবহার করে বাড়ির পাশে সবজির বাগানগুলোতে এর ব্যবহার বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। বিলকিস বেগমের চারির সংখ্যা বর্তমানে ১৫০টি। অন্যদিকে মাধবপুর গ্রামের মোসা মনিরা বেগমের সংখ্যা ১০৫টি, মোসা: রেনুকা, আফরোজাও মো: মহন আলীর চারির সংখ্যা ৪০টি করে। বর্তমানে এই দু’টি গ্রামে ৩৫ জন নারী ও পুরুষ ভার্মি কম্পোস্ট তৈরি করে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। ২০১৯ সালে এর ব্যবহার বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন মানুষ শুধু বাড়ির পাশের সবজিতে নয়; ফসলের মাঠগুলোতে ও পান চাষে এই কম্পোস্ট সার ব্যবহার করছেন।
সম্প্রতি ভার্মি কম্পোস্ট’র তৈরির বিষয়ে বড়গাছি বিএডিসি সাব সেন্টারে ভার্মি কম্পোস্ট উৎপাদনকারীদেও নিয়ে এক মতবিনিময় সভা ও নতুন আগ্রহীদের হাতে কলমে ভার্মি কম্পোস্ট তৈরি শেখানোর আয়োজন করে বারসিক। মতবিনিময়ে ভার্মি কম্পোস্ট এর উৎপাদন বাজার এবং সংরক্ষণ বিষয়ে সমস্যা এবং সম্ভাবনার দিকগুলো নিয়ে আলোচনা হয়। সভায় অংশগ্রহণকারীরা জানান, তারা ভার্মি কম্পোস্ট ব্যবহারে খুব বেশি সচেতন নয়। তাদের উৎপাদিত কম্পোস্ট সারগুলো বাইরের সচেতন মানুষরা কিনে নিয়ে যান। আগামীতে স্থানীয় মানুষদে সচেতন করতে বিভিন্ন কর্মসূচি ও উদ্যোগ নেয়া উচিত বলে তারা মনে করেন।