বসে আকোঁ ! করোনায় বস্তির শিশুদের নিয়ে চিত্রাঙ্কণ
ঢাকা থেকে সুদিপ্তা কর্মকার:
হেডলাইনটা অঞ্জন দত্তের একটা গানের লাইন ‘বসে আকোঁ’। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে শিশু কিশোরদের মনে আনন্দ নেই কারণ তারা একসাথে বসে কিছুই করতে পারছে না। তাই বসে আকাঁর মনও তাদের নেই। তবুও নগর দারিদ্রদের এই সংকটময় জীবনের মাঝেও সাহস তৈরির জন্য এক অভিনব চিত্রাঙ্কণ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো। গতকাল চাঁদ উদ্যোনের পাইনিওর হাউজিং বস্তির ২০ জন শিশু কিশোরদের নিয়ে বারসিকের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো চিত্রাঙ্কণ প্রতিযোগিতা। তবে প্রতিযোগিতাটি অনুষ্ঠিত হয় অনলাইনের মাধ্যমে। সকলেই যার যার ঘরে বসে ছবি একেছে আর একজন ভলান্টিয়ার রিয়াজ সেই ছবিগুলোর ছবি আপলোড করেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। ছ্ট্টো এই আয়োজনে বস্তির ছেলে মেয়েরা আনন্দে আত্মহারা হয়ে পড়ে।
আমরা জানি নোভেল করোনা ভাইরাস এর তান্ডবে পুরো বিশ্ব স্থবির হয়ে পরেছে, মানুষের জীবনে নেমে এসেছে এক ভয়াভয় দূর্যোগ। শিশু কিশোরদের উপরও পড়েছে এক ভয়াবহ নেতিবাচক প্রভাব। সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিশু কিশোরদের শিক্ষা জীবনও স্থবির হয়ে পরেছে। এছাড়াও খেলাধুলা করতে না পারা, ঘরের মধ্যে সারাক্ষণ থাকার কারনে তাদের মানুষিক স্বাস্থের ও অবনতি হচ্ছে। তবে এর সবচেয়ে খারাপ প্রভাব পরছে নগরের নি¤œ আয় এর মানুষদের শিশুদের মধ্যে। সবচেয়ে বেশি কর্মহীন হয়ে পরা এই নি¤œআয় এর মানুষেরা তাদের সন্তানদের নিয়মিত পুষ্টির চাহিদাতো দূর তারা তাদের দুবেলা খাবারের চাহিদা পূরনে হিমশিম খেয়ে যাচ্ছে। যার ফলে বস্তির এই সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মধ্যে তৈরি হতে পারে দীর্ঘমেয়াদী পুষ্টির অভাব। এছাড়াও এই সময়ে বাড়ছে শিশু নির্যাতনও। বস্তিতে থাকা এই শিশুরা এমনিতেই সবদিক থেকে সুবিধাবঞ্চিত আর এই করোনা দূর্যোগের কারনে তারা আরও হয়ে পরেছে প্রান্তিক।
এ সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় পাইওনিয়ার হাউজিং বস্তির রিয়াজ রাজু সহযোগিতায় এ আয়োজনটি গতকাল করা হয়। বারসিক এর কর্মী সুদিপ্তা কর্মকার অনলাইন এর মাধ্যমে এই প্রতিযোগীতায় যুক্ত হয়। প্রতিযোগিতায় শিশু নিপা, তানিয়া , মিশু সহ অধিকাংশ শিশুরা একেছেঁ তাদের স্বপ্ন একটি সুন্দর গ্রামবাংলার ছবি। তাদের বাবা মা এর কাছে শোনা গ্রামের এই চিত্রটি তাদের কাছে সবচেয়ে প্রিয় । তারা চায় সকল দূর্যোগ কাটিয়ে তারা এরকম একটি সুন্দর পরিবেশে বড় হতে। যেখানে তাদের শৈশব কাটবে আনন্দের মধ্যে, খেলাধুলার মধ্যে। থাকবেনা কোন ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তা, বড় হয়ে তারা সবাই তাদের স্বপ্ন পূরণ করতে পারবে।
প্রতিযোগিরা আরও বলে, করোনা ভাইরাস এর কারনে যে সীমাহীন দূর্যোগ তাদের পরিবারে নেমে এসেছে । তারা সকলেই প্রত্যাশা করে যেনো খুব দ্রুত করোনা ভাইরাস মুক্ত হয় পুরো দুনিয়া আর মানুষেরা আবার আনন্দে মেতে উঠতে পারেন।
অনুষ্ঠানে অনলাইনে যুক্ত হয়ে সুদিপ্তা কর্মকার সকলকে নিয়মিত সাবান দিয়ে হাত ধোয়া এবং বাহিরে গেলে মাস্ক ব্যবহার করার প্রতি এবং তারা যেন বাসায় বসে তাদের পড়াশোনা কিছুটা হলেও চালিয়ে যায় সে বিষয়ে শিশুদের উৎসাহিত করে আলোচনা করেন।