একটি প্রশিক্ষণ এবং আমার অভিজ্ঞতা
সাতক্ষীরা থেকে সৈয়দা মায়েশা নওশীন:
আমাদের জীবনটা অণুর চেয়েও ক্ষুদ্র। কিন্তু এই স্বল্প পরিসরের জীবনের প্রতিটি সোপান প্রতিদিনের বিস্ময়কর এক একটি জ্ঞান ভান্ডার। আমরা প্রতিদিনই কিছু না কিছু অর্জন করি। কিন্তু সবকিছু হয়তো বা মনে রাখি না বা মনে রাখার চেষ্টা করি না। কিন্তু তবুও কিছু অভিজ্ঞতা আমাদের হৃদয়ের গভীরে এমনভাবে দাগ কেটে যায়; যেটা ভুলে থাকার চেষ্টা করলেও ভোলা যায় না।
তেমনি এক অদ্ভূত সুন্দর অভিজ্ঞতা হয়েছে গত এপ্রিল ২৮, ২০১৭ বিয়াস আয়োজিত ‘জলবায়ু পরিবর্তন, বৈচিত্র্যতা ও আন্তঃনির্ভরশীলতা’ কোর্সের মাঠকর্মের দিন। আসলে মানুষের চিন্তাধারা, আচার-আচরণ যে কত বিচিত্র হতে পারে তা বোঝা- মা, মাটি আর গ্রামের ধুলায় পা রাখলে।
এই প্রথম কৃষকদের সাথে মিশে যাওয়া, তাদের সাথে তাদেরই পাশে মাটিতে বসে গল্প করা; আমার জীবনে এমন অভিজ্ঞতা খুব কমই হয়েছে। আগেও তাদের সাথে মিশেছি, গল্প করেছি। কিন্তু খাতা-কলম নিয়ে কাজ করতে যাওয়া, তাদেরকে কাছ থেকে কোন একটি বিষয়ে বুঝতে চেষ্টা করা এই ধরনের ঘটনা এই প্রথম।
আমার খুব ভালো কেটেছে পুরোটা সময়। কলাপাতায় ভাত খাওয়া আমাকে যেন সেই ছোটবেলায় ফিরিয়ে নিয়ে গিয়েছিল কিছুক্ষণের জন্য। হয়তো প্রচন্ড গরমে তেষ্টার একটু কষ্ট হয়েছে। কিন্তু যে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি, যা পেয়েছি- তার কাছে এতোটুকু কষ্ট কিছুই না। তাই BIAS এর কাছে আমি কৃতজ্ঞ আমাকে এমন একটি মূহুর্ত, এমন একটি দিন উপভোগ করার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য।
এই কোর্স থেকে আমার প্রাপ্তি অনেক। সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি আমার নিজেকে খুজে পাওয়া। নিজের আত্মবিশ্বাস ফিরে পাওয়া। কারণ আমাকে দায়িত্ব দিলে সেই কাজটা যে আমি করতে পারি এটা এই কোর্স না করলে বুঝতে পারতামই না। নিজেকে চেনা, জানা বা বোঝার সুযোগ এর চেয়ে আর কীইবা হতে পারে আমার জীবনে। একটি প্রশিক্ষণ, কিছু আলোচনা, সবার সাথে ওঠাবসা একটা মানুষের পুরো জীবন ধারাকে পাল্টে দিতে পারে। স্বার্থক হয়েছে আমার এই কোর্সে আসা। জীবনে এমন সুযোগ আরো চাই। নিজেকে সঠিকভাবে গড়ে তোলার এইতো সুযোগ। যতদিন বেঁচে আছি এই সুযোগের একটি কণাও মিস করতে চাই না।
ধন্যবাদ BIAS!