রাষ্ট্রীয় উন্নয়ন পরিকল্পনায় নগর দারিদ্র এবং আবাসন যুক্ত করার দাবি
ঢাকা থেকে সুদিপ্তা কর্মকার
বারসিকসহ বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগ গত ২২ থেকে ২৪ অক্টোবর ঢাকার আগাঁরগাওয়ের অবস্থিত ইনস্টিটিউট অব আর্কিটেক্স বাংলাদেশ-এ ‘নগর আপদ এবং নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য আবাসন: জলবায়ু পরিবর্তনে নগর সক্ষমতা’ বিষয়ক ৪র্থ জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সম্মেলনের প্রথম দিন এর দ্বিতীয় সেশন এ বারসিক ‘নগর আপদ এবং নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য আবাসন’ বিষয়ক একটি সেশন পরিচালনা করে। সেশনটিতে বিভিন্ন পর্যায়ের ৪৫ জন অংশগ্রহণ করেন। সেশনটিতে সভাপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন পরিবেশ বাচাঁও আন্দোলন এর চেয়ারপারসন আবু নাসের খান। সেশনটি পরিচালনা করেন বারসিক’র পরিচালক মি. পাভেল পার্থ এবং মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন বারসিক’র প্রকল্প সমন্বয়কারী মো. জাহাঙ্গীর আলম।
এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কাপ এর নির্বাহী পরিচালক রেবেকাসান-ইয়াত, আর্কিটেক্ট এবং নগর পরিকল্পনাবিদ সালমা এ সাফী, আওয়ামি বাস্তুহারা লীগ এর সাধারণ সম্পাদক লায়ন রাশেদ হালদার এবং বস্তিবাসী ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক কুলসুম বেগম।
আলোচনায় কুলসুম বেগম তার জীবনের কাহিনী তুলে ধরেন এবং কিভাবে তার পরিবার নিঃস্ব হয়ে ঢাকায় আসেন, বস্তিতে অবস্থান করে এবং বারবার উচ্ছেদের শিকার হওয়া এবং আবার নিঃস্ব হয়ে যাওয়ার কাহিনী সবার সামনে উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, ‘সরকার এর বদল হয়েছে কিন্তু কেউ বস্তিবাসীদের জন্য কাজ করে না। সরকার এর কাছে বস্তিবাসীদের স্থায়ী আবাসন চাই। আমরা এ দাবি জানিয়ে যাবো।’
রেবেকাসান-ইয়াত বলেন, ‘নগরের নিম্ন আয়ের মানুষের সরকার এর বিভিন্ন সেবা পরিসেবায় যুক্ত করতে হবে। তাদের স্থায়ী আবাসন নিশ্চিত করতে হবে এবং তাদের হোল্ডিং নাম্বারের আওতায় আনতে হবে।’
সালমা এ সাফী বলেন, ‘রাষ্ট্রীয় উন্নয়ন পরিকল্পনায় নগর দারিদ্র এবং আবাসন যুক্ত করা প্রয়োজন। নগর দরিদ্রদের বাদ দিয়ে পরিকল্পিত নগর তৈরি করা সম্ভব নয়।’
লায়ন রাশিদ হালদার বলেন, ‘নগর দরিদ্রদের জন্য একটি মর্যাদাসম্পন্ন নগর প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তাদের স্থায়ী আবাসনের জন্য উদ্যোগ নিতে হবে সরকারকে।’
উল্লেখ্য, দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে জনসংখ্যার দিক দিয়ে বাংলাদেশ তৃতীয়। বাংলাদেশ এর মোট জনসংখ্যার প্রায় ৩৮.৬% মানুষ নগরে বসবাস করে এবং এই জনসংখ্যা দিন দিন ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিবিএস এর সূত্র মতে, ঢাকা শহরে ৫০০০ এর ও বেশি বস্তি রয়েছে এবং তাতে প্রায় ৪০ লক্ষ মানুষ বসবাস করে। যেখানে তারা জীবন ধারনের সকল ধরনের সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত। এছাড়া রয়েছে প্রাকৃতিক দূর্যোগ, নিয়মিত বস্তি থেকে উচ্ছেদ, মাদক, সঠিক কাজের অভাব, পুষ্টির অভাব ইত্যাদি।