সাতক্ষীরায় সড়ক পুঃনির্মাণের দাবিতে প্রতীকী সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন
গাজী মাহিদা মিজান, সাতক্ষীরা থেকে
সাতক্ষীরা সরকারি কলেজ সড়ক পুনঃনির্মাণের দাবিতে অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছে জেলা নাগরিক কমিটি। গতকাল সাতক্ষীরা সরকারি কলেজ সড়কের শহিদ রীমু চত্বরে অনুষ্ঠিত দুই ঘণ্টাব্যাপী অবরোধ কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন নাগরিক কমিটির আহবায়ক অ্যাড. শেখ আজাদ হোসেন বেলাল। অবরোধ কর্মসূচিতে আগামী এক মাসের মধ্যে সড়ক পুনঃনির্মাণ করা না হলে ২ জুলাই সাতক্ষীরা পৌরসভায় অবস্থান কর্মসূচির আল্টিমেটাম দেওয়া হয়। এসময় আবরোধ কর্মসূচির সাথে সংহতি প্রকাশ করে অংশ নেন বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক এবং শিক্ষা সংস্কৃতি ও বৈচিত্র্য রক্ষা টিমের সদস্যবৃন্দ।
প্রতীকী সড়ক অবরোধ কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে বক্তারা বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রচীন পৌরসভা তথা সাবেক মিউনিসিপালিটিগুলোর মধ্যে অন্যতম সাতক্ষীরা। ঢাকা, চট্টগ্রাম ও যশোরের পর ১৮৬৯ সালে সাতক্ষীরা মিউনিসিপালিটি প্রতিষ্ঠা হয়। কিন্তু ১৫৫ বছরের এই পৌরসভা তার ঐতিহ্য হারিয়ে এখন বাংলাদেশের সবচেয়ে অনুন্নত পৌরসভায় পরিণত হতে চলেছে। বিদেশী প্রকল্পের কথা বলে গত কয়েক দশক শহরের রাস্তাঘাট ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়নের তেমন কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
তারা জানান, গত চার দশকে পৌর এলাকার জনগুরুত্বপূর্ণ শহিদ রীমু সরণির পোস্ট অফিস মোড় হতে পুরাতন সাতক্ষীরা হাটের মোড় পর্যন্ত সড়কটি ব্যবহার উপযোগী করতে পুনঃনির্মাণের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ফলে সড়কটি জনসাধারণের ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
এই সড়কের বেহালদশা নিয়ে সংসদে সাতক্ষীরা-২ আসনের (সদর) সংসদ সদস্য আশরাফুজ্জামান বক্তব্য দিয়েছেন। গত ৪ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনে দেওয়া বক্তব্যটি নেট দুনিয়ায় ভাইরাল হয়। ওই বক্তব্যে তিনি বলেছিলেন, সাতক্ষীরা সরকারি কলেজ সড়কটির অবস্থা এতটাই খারাপ যে কোনো অন্তঃসত্ত্বা নারী ওই রাস্তায় চলাচল করলে পথেই তার ‘ডেলিভারি’ (সন্তান প্রসব) হয়ে যাবে।
এ ব্যাপারে গত ৮ মে সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটির এক মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে সড়কটি পুনরায় নির্মাণ করার দাবি জানানো হয়। কিন্তু পৌর কর্তৃপক্ষ সড়কটি নির্মাণে দৃশ্যমান কোনো কার্যক্রম শুরু করেনি।
বক্তারা আরো বলেন, নূন্যতম নাগরিক সেবা থেকে বঞ্চিত সাতক্ষীরার জনগণ। বর্ষা হলেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয় এবং কয়েক মাস ধরে হাজার হাজার মানুষ পানির মধ্যে বসবাস করতে বাধ্য হয়। গ্রামে এখন আর মাটির রস্তা খুঁজে পাওয়া না গেলেও সাতক্ষীরা শহরে এখনো হাটু কাদা ঠেলে মানুষকে পথ চলতে হয়। বক্তারা আরও বলেন, ‘যানজট শহরবাসীর নিত্যসঙ্গী। কিন্তু তা নিরসনে পৌর কর্তৃপক্ষের কোনো পদক্ষেপ নেই। বক্তারা সাতক্ষীরা পৌরসভার বিভিন্ন নাগরিক সমস্যা সমাধানে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান। অবরোধ কর্মসূচি চলাকালে বক্তব্য রাখেন, জেলা নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব অ্যাড. আবুল কালাম আজাদ, অধ্যক্ষ আশেক ই এলাহী, শেখ হারুণ অর রশিদ, শেখ ওবায়দুস সুলতান বাবলু, কমরেড আবুল হোসেন, নিত্যানন্দ সরকার, মাধব চন্দ্র দত্ত, অ্যাড. আল মাহামুদ পলাশ, অ্যাড. মুনির উদ্দীন, সাংবাদিক আব্দুল বারী, আবুল কাশেম, অধ্যাপক ইদ্রিস আলী, শেখ মুশফিকুর রহমান মিল্টন, শেখ সিদ্দিকুর রহমান, রবিউল ইসলাম রবি, মুনসুর রহমান, সুরেশ পান্ডে, আব্দুস সামাদ, বারসিকের সহযোগী কর্মসূচি কর্মকর্তা গাজী মাহিদা মিজান, শিক্ষা সংস্কৃতি ও বৈচিত্র্য রক্ষা টিমের সদস্য তামান্না পারভীন, সাকিব হাসান, সানজিদা জেসমিন প্রমুখ।